বৃহস্পতিবার, ২৯ মার্চ, ২০১৮

অবোধ্য ঠোঁট



অবোধ্য ঠোঁট
- যাযাবর জীবন


নারী,
বড্ড অবোধ্য তুই মাঝে মাঝে
মুখের ভাষায় কখনো প্রেম কখনো আগুন
কখনো ঠোঁট নড়ে তো প্রেম করে
কখনো ঠোঁট নড়ে তো রাগ ঝড়ে;

রাগে কিংবা চুমুতে ঠোঁট নড়ে, ঠোঁট নড়ে।

আমাদের অপ্রেম কাহিনী



আমাদের অপ্রেম কাহিনী
- যাযাবর জীবন


তুই বিছানায় শুয়ে
আমি চুপিচুপি তোর জানালায় উঁকি
তোর চোখ বন্ধ
স্বপ্ন দেখছিস কি?
কি জানি! হবে হয়তো,
আমি অপলক তোকে দেখি
একমনে চুপিচুপি;

শুনেছি তুই নাকি খানিক অসুস্থ,
কই?
আমি তো বিছানায় শোয়া গোলাপ দেখি প্রস্ফুটিত;

দূর থেকে হাত রাখি তোর কপালে, মনে মনে
আর সুস্থতার কামনা করি,
তোর খুব কাছে যাওয়ার সাহস হয় না আমার;
কি জানি! যদি ভালোবাসা হয়ে যায়?

একটা তুই আর একটা আমি
আমরা স্বপ্নে স্বপ্নে উড়ি
আমরা স্বপ্নে স্বপ্নে ঘুরি
আমরা কেও কারো খুব কাছে যাই না
কি জানি! যদি আমাদের ভালোবাসা হয়ে যায়?
এই আমাদের মন অথবা স্বপ্ন কাহিনী,
এটাই আমাদের প্রেম কিংবা অপ্রেম কাহিনী।


অপরিচিত



অপরিচিত
- যাযাবর জীবন


কত কত পাহাড়
কত কত নদী
কত কত সাগর
কত জায়গা ঘুরি
নিজেকে যাচি, নিজেকে খুঁজি
মন গহীন কুঁয়ো, নিজেকে খুঁড়ি
কোথায় আর নিজেকে চিনি?

এই যে এত এত বোধ
প্রেম ভালোবাসা
সুখ দুঃখ
হাসি কান্না
নিঃসঙ্গতা একাকীত্ব
বিপরীত মানসিকতার কত কত বোধত্ব
বোঝা আর হয়ে ওঠে না আমার বোধের বৈপরীত্য
তবুও খুঁজে যাই নিজেকে খুঁড়ে
যখই যেখানে যাই একা একা ঘুরে;

কত কত শব্দ প্রকৃতি ঘিরে
মেঘের ডাক আকাশ চিরে চিরে
ঢেউ এর গর্জন সাগর তীরে
পাহাড়ের নীরবতার ভাষা বোঝে কে
আমি নিস্তব্ধতার কান্নায় স্তব্ধ হয়েছি কতবার!
তবু কান পেতে রই প্রকৃতির ডাক শোনার ;

কত কত রোদে দিনের তীব্র আলো
সূর্যের ঘুমে রাতের রঙ কালো
ফর্সা শ্যামলা কালোতে মেশানো
কত কত রঙের মানুষ চারিধার
জ্যোৎস্নার রঙ বুঝতে বুঝতে কত কত রাত
নির্ঘুম করেছি পার,
গায়ের রঙ চোখ চিনে নিলেও
মনের রঙ চেনা হয় নি আমার;

কত কত দিন
কত কত রাত
কত কত সূর্য কত কত চাঁদ ঘুরি
কত কত কুঁয়ো নিজেকে নিজে খুঁড়ি
কোথায় আর নিজেকে চিনি?

খুঁড়তে খুঁড়তে শুধুই অন্ধকার
খুঁজতে খুঁজতে সময় পার
চেনা হয় না নিজেকে নিজে আমার।

টাপুরটুপুর আঁধার



টাপুরটুপুর আঁধার
- যাযাবর জীবন


সকালটা শিশির শিশির
ম্যাড়ম্যাড়ে রৌদ্র দুপুর
বিকেল হতেই সন্ধ্যে নামে
আঁধার টাপুরটুপুর

আধ লজ্জায় চাঁদের উঁকি
অর্ধচন্দ্র মাসে
দিনের বেলায় কুয়াশায়
চাঁদের কি যায় আসে

রাত্রি এলেই মন তুই তুই
বুকের বাঁ পাশে
মনের মাঝে তুই থাকলে
চাঁদ আকাশে হাসে

ঘুম জড়ানো আবেশ চোখে
স্বপ্নে স্বপ্নে উড়ি
তুই বিহনের স্বপ্নগুলো
নাটাই ছেঁড়া ঘুড়ি

রাতটা বড় কালো কালো
অন্ধকারের নূপুর
তুই বিহনে অমাবস্যা
আঁধার টাপুরটুপুর।

দিনরাত্রি



দিনরাত্রি
- যাযাবর জীবন


বিকেল হতেই মন খারাপ
হলুদ হলুদ রোদ
গাঙচিল এর ডানায় ওড়ে
মন খারাপের বোধ

পুকুর পুকুর সবুজ পানি
নদীর পানি ঘোলা
উনিশ থেকে বিশ হলে তোর
কান্না চোখে তোলা

মাঠের মাঠ ধানের ক্ষেত
সবুজের বাহার
সন্ধ্যে হলেই বুকের ভেতর
মন খারাপের পাহাড়

সূর্যটা লাল হয়েছে
বিকেল বিদায় নিলো
মনের ভেতর অন্ধকার
রাত্রি নেমে এলো।




ধোঁয়া ধোঁয়া সকাল



ধোঁয়া ধোঁয়া সকাল
- যাযাবর জীবন


ধূসর ধূসর ধোঁয়া ধোঁয়া
সকালটা কুয়াশা
শিশির শিশির তোতে ভেজা
মনটা ধোঁয়াশা
সূর্য কোথায়?

কুয়াশা ঘেরা চারিধার
সকাল আমার, মন তোর,
তুই কার?



অবুঝ অন্ধকার



অবুঝ অন্ধকার
- যাযাবর জীবন


মাঠ ভরা সবুজ সবুজ
ধানে ধানে ছাওয়া
উথাল পাথাল বিকেল বাতাস
অবুঝ অবুঝ হাওয়া
আকাশ ভরা নীল নীল সাদা মেঘের পাল
মন খারাপের নদী টইটুম্বুর, নৌকায় নাই হাল;

একা একা রাত
একা একা চাঁদ
নদীতটে পথ হাঁটা একা একা ধীর লয়ে
ঢেউগুলো সব আছড়ে পরে একসাথে আবেশে পায়ে
আকাশে চাঁদ থাকে তবু
চোখ থেকে কভু কভু
জ্যোৎস্না যায় হারায়ে;

কত কত নক্ষত্র একটা আকাশে
মিটিমিটি জোনাক হাসে
কত কত প্রেম মুখ গুমরে গুমরে অন্ধকারে ভাসে
কত কত মন দুপুরেই রাত হয়
আর সারাদিন অন্ধকার
তোর জীবনে প্রেম আসে ঘুরে ঘুরে
ঋতুতে ঋতুতে বারে বার
আমার জীবনে 'তুই' এসেছিলি
প্রেম হয়ে একবার;

আজ আমায় রাত্রি বলিস! কেন রে তুই বারবার?
ভালোবাসার তুই কি বুঝিস, হে রাত্রি অন্ধকার!


মনের স্রোতে তুই



মনের স্রোতে তুই
- যাযাবর জীবন


ডানা কোথায় আমার পিঠে?
তবুও উড়তে হয়
তবুও ভাসতে হয়
কখনোবা ডুবে যাই তোতে;

জল কোথায় মনের স্রোতে?


নদীই নারী


নদীই নারী
- যাযাবর জীবন


নদী হাসায়
নদী কাঁদায়
নদী ভাসায়
নদী ডুবায়;

নদী কি তবে নারী?


অন্তর্দৃষ্টি



অন্তর্দৃষ্টি
- যাযাবর জীবন


আগুন ধরেছে গাছে, লাল লাল শিমুলে ছেয়ে আছে
শিমূল গাছটা কতই না সুন্দর, মন মনোহর, দূর থেকে
কাছে গিয়ে জড়িয়ে ধরলেই কাটায় রক্তাক্ত
কাঁটা বেছে ফুল তুলতে কজন পারে!

নীল নীল জল, সমুদ্র অতল
সাগর কতই না মনকে টানে, ঢেউগুলো কতই না ভালো লাগে
আবেশে জড়িয়ে নিলেই অতলে ডুব টুপ করে
সাঁতার আর কজনই বা জানে!

ভালোবাসায় কত কত কবিতা, কত হাজার কাব্য-গাঁথা
দহন জানে প্রেমী

দূর থেকে দেখা সৌন্দর্য সব সময় কি আর কল্যাণ বয়ে আনে?
যে চেখেছে স্বাদ, যে যেচেছে জীবন, বাস্তবতা সেই জানে।


কালোরাত


কালোরাত
- যাযাবর জীবন


কালো রাতে আলো কোথায়?
ওখানে তিমির অন্ধকার
মৃত্যুর হাতছানি
ওখানে রাশি রাশি হতাশা
ঢেউ ঢেউ কষ্ট
থৈ থৈ কান্না;

কিছু কিছু রাত হঠাৎ হঠাৎই আসে
কালো হয়ে
স্বত্বাকে নাড়িয়ে দিয়ে,
জীবনটা কতই না চমৎকার!
মৃত্যুতে অনুভব;

আমি কতবার পাথর হয়েছি কালোরাতে!
স্থবির হয়েছি মৃত্যু দেখে,
ঐ তো নিথর পরে আছে শব
প্রিয় মানুষটা
আজ দীর্ঘ কালোরাত আমার;

একদিন আমিও থাকব না পৃথিবীতে
কালোরাত পারি দিবে আপন জনে।



রবিবার, ১১ মার্চ, ২০১৮

স্মৃতির অনুভূতি কথন



স্মৃতির অনুভূতি কথন
- যাযাবর জীবন


কখনো কখনো কিছু কথা
কখনো কখনো কিছু কবিতা
কখনো কখনো কিছু গান
কখনো কখনো কিছু অনুভব
প্রায়শই কাঁদায়, হাসায়
কখনো বা রাগায়, ভালোবাসা ও ঘৃণায়;

আদতে কি অনুভূতি কাঁদায়, না অনুভব হাসায়?
উঁহু!
কাঁদা হাসা তো শুধুই বহিঃপ্রকাশ
কাঁদায় কিংবা হাসায় তো স্মৃতি, আর কিছু মানুষের অবয়ব;
আর ঘৃণা?
ভালোবাসার খুব কাছেই ঘৃণার বাস
মাত্র একটুকরো অভিমানের দূরত্বে
অথচ ভালোবাসায় আমরা কত কাছাকাছিই না ছিলাম
আর ঘৃণায় যোজন যোজন দূরে;

স্মৃতিগুলো তো মানুষেরই, মানুষ থেকেই পাওয়া, তাই না?
কত কত বেদনা
কত শত আনন্দ-কথা
কত কত দুঃখ-গাঁথা
সবই তো মানুষ থেকে
খুব কাছের কিছু মানুষ,
সময় কিংবা পরিস্থিতির কারণে যারা অনেক অনেক দূরে
তবুও আমরা হাসি, কাঁদি তাদের স্মৃতিতে;

তোর কথা স্মৃতি'তে এলেই মন চাঁদ আর বড্ড মন খারাপ
চাঁদের দিকে তাকালে তোরও কি মাঝে মাঝে মন খারাপ করে?
মাঝে মাঝে আমার খুব জানতে ইচ্ছে করে।





নীল সবুজ স্বপ্ন



নীল সবুজ স্বপ্ন
- যাযাবর জীবন


লোকে বলে স্বপ্ন নাকি সাদা-কালো
আমি স্বপ্নে একটা সিঁড়ি দেখি
সিঁড়িটা সবুজ সবুজ নীল
একদিকে আলো আলো একদিকে আঁধার কালো;

প্রায়শই স্বপ্নটা আমার চোখে বসে
প্রায়শই সিঁড়িটা আমার স্বপ্নে আসে
যখনই সিঁড়িতে পা রাখি
ঘুম ভেঙে যায় তখনই,
আমি আজো বুঝতে পারি নি
সিঁড়িটা আমায় কি ওপর থেকে নীচে নামতে বলছে
নাকি নিচ থেকে ওপরে উঠতে বলছে;
বোঝা আর না বোঝার বোঝায় মন পাথর পাথর
আমি স্বপ্নে স্বপ্নে হারিয়ে যাই প্রায়শই, কোথায় আমার ঘর?



রোদ রোদ বৃষ্টি



রোদ রোদ বৃষ্টি
- যাযাবর জীবন


কাল বিকেলটা ঢলে ছিল কফির কাপে
তুই গায়ে হেলান দিতেই সন্ধ্যে
নিমিষে উড়েছিল সময়
তারপর সারারাত স্বপ্নঘুমে,
কাল ঘুমটাও বড্ড বেয়ারা ছিল
বুকের একপাশে কোলবালিশ আরেক পাশে তুই
স্বপ্নের একধারে ঘুম আরেক ধারে তুই
ভোর পার হয়ে গেছে সময় স্রোতে, ঘুমের দেশে,
চোখ সকাল হয়েছে দুপুর রোদে;

আজ দুপুরটা বড্ড তেতে আছে রোদ রাগে
আর মন তেতে আছে বেশ তো'তে,
ঝুমঝুম চুমু বৃষ্টি হলে দারুণ হতো
ভিজতাম দুজন দুজনে।






ঘুম ঘুম ঠোঁট



ঘুম ঘুম ঠোঁট
- যাযাবর জীবন


ঘুম ঘুম চোখ, কফির কাপ
শার্শির ওপারে আধো আলো আধো আঁধার
জানালা খুলতেই কুয়াশা ঘোলা রাত
আকাশে অর্ধেক চাঁদ অর্ধেক জ্যোৎস্না
মনে অর্ধেক তুই, অর্ধেক কালো,
দূরে কোথাও মদনটাকের ডাকে রাত খান খান
খান খান আমি স্মৃতির তলে
আধো আধো স্মৃতি কুয়াশা ধোঁয়া ধোঁয়া
কিছু স্বপ্ন চেনা কিছু বড্ড অচেনা,
ঐ তো তুই, চাঁদের ওপারে
আমার স্বপ্ন স্বপ্ন চোখে;

আয় রাত পার করি কফির কাপে
আয় স্বপ্ন ভাগ করে নেই স্বপ্নের সাথে
স্মৃতি ভাগ করে নেই চোখে চোখ রেখে
তারপর না হয় ঘুম হয়ে ডুবে যাব ঠোঁটে ঠোঁটে।



চোর



চোর
- যাযাবর জীবন


সূর্য থেকে রোদ চুরি
চাঁদ থেকে চাঁদনি
আর মন থেকে প্রেম
তোকেই মানায়, হে নারী ;

তুই খেলোয়াড়
আমি আনাড়ি।


বৃহস্পতিবার, ৮ মার্চ, ২০১৮

লাল সবুজ



লাল সবুজ
- যাযাবর জীবন


সবুজ ঘুমিয়ে ছিল বুকের দেরাজে
লালের আগমন সূর্যোদয়ে
যেই না লাল ছুঁয়ে দিল গাল
প্রেম হলো মন,
লালের ঠোঁটে সবুজ চুমতেই দুপুর হলো ভালোবাসা
আমি কি ডুবেছিলাম তোর ঠোঁটে?
উঁহু! মনে নেই
সময় থেমে গিয়েছিল দুপুর রোদে,
প্রেমে লাল সবুজের মিশ্রণ বড্ড ভয়ংকর;

আকাশে বিকেল হেলান দিতেই বুকের ঘুম ভেঙেছিল বুকের ওপর
ঠোঁট, ঠোঁট ছেড়ে দিতেই তোর ঙ আড়মোড়া,
লাল শাড়িটা সবুজ ঘাসে আর তোর বুকের উপত্যকায় জমে থাকা ৺ প্রেম
একরাশ লজ্জা নিয়ে তুই সূর্যের দিকে চাইতেই লাল হয়ে গেল রৌদ্দুর
সুখস্বপ্নে পাড়ি দেয়া হয়েছে পুরোটা দুপুর নদী
সন্ধ্যে হয়ে এলো, চল মন এবার ঘরে ফিরি;

এরপর আবার কোন এক সকালে না হয় সময়ের নদী বেয়ে
ভেসে যাব দুজনে
সকাল পেরিয়ে দুপুর হবে
দুপুর পেরিয়ে সন্ধ্যে
আমরা ঠোঁট থেকে ঠোঁট বেয়ে নেমে যাব লালে
শরীরের ছাপ এঁকে দেব চেনা শরীরে,
সেদিন কিন্তু লাল শাড়িটা পড়ে আসিস, ঠোঁটে লাল মেখে
আমি না হয় চুমুর চুমুকে শুষে নেব সূর্যের লালিমা,
তারপর সন্ধ্যে হলে ভরা পূর্ণিমার লালচে চাঁদ পেড়ে আনব দুজনে মিলে
আর সারারাত ভিজব চোখের চাঁদনিতে
চোখে চোখ রেখে
দুজন দুজনেতে।




বুধবার, ৭ মার্চ, ২০১৮

লালের অনুভব



লালের অনুভব
- যাযাবর জীবন


জলের পায়ে শেকল পড়াতে পেরেছে কে?
কিংবা মনের;
মরা কাঁটাল আর ভরা কাঁটালে নদীতে জল নৃত্য
মন নাচে প্রেম পারদের ওঠা নামায়
ভালোবাসার শব পুড়ে চাঁদে সূর্যে, হর হামেশায়;

ভালোবাসার পাখি ওড়ে আকাশ জুড়ে
সকাল বিকাল;
আমার বুকে গাছ নেই কোন
প্রেম বসবে কোথায়?

কৃষ্ণচূড়া লাল
লাল শিমূল,
পলাশও কিন্তু লাল'ই;
আমি লাল দেখি ফুলে ফুলে
আমি লাল দেখি সূর্যাস্তে
ভালোবাসা রক্তাক্ত হয় ক্ষরণে।





অনুভূতির ফারাক




অনুভূতির ফারাক
- যাযাবর জীবন


আলো বলতে তুই সূর্য বুঝিস
আমি বুঝি চাঁদনি,
তোর সমুদ্র দর্শন
আমার বুকের খাঁচায় জলের ভাঙন,
তোর চোখে লালিমা সূর্যোদয়ে তারপর তুই দিন
আমি লাল দেখি সূর্যাস্তে তারপর চোখ রাত;

ফারাক বিস্তর তোর আর আমার
আমাদের চিন্তা চেতনার
তবুও কোথাও না কোথাও একটু অনুভূতি থেকেই যায়
অনুভবে অনুভবে
বুকের খুব গভীরে
একে কি ভালোবাসা বলে?

আমি মন স্পর্শে, তুই শরীর
মিলন হয় না দিন আর রাতের
মিলন হয় না চাঁদ আর সূর্যের
আমাদের মিল শুধুই অনুভবে;

আদতে আমরা কেও কারো নই
তবুও তোর মন জুড়ে ভালোবাসা
আর আমার মন জুড়ে তুই।





ছল আর ছল


ছল আর ছল
- যাযাবর জীবন


ভাসতে ভাসতে নদী
ডুবতে ডুবতে নারী
কাঁদতে কাঁদতে জল
নদী ও নারীর কত কত ছল



অপচয়



অপচয়
- যাযাবর জীবন


কলম থেকে কত হাবিজাবিই তো বের হয়
শুধু শুধু কালি ক্ষয়
আর কাগজের অপচয়
সব তো আর কবিতা নয়;

মনে তুই থাকলেই কাগজে কলমে সঙ্গম
আর কবিতা কথা কয়
তুই থাকলেই মন কবিতা হয়;

আমি মন লিখি, তোতে।



সমান্তরাল



সমান্তরাল
- যাযাবর জীবন


একটা তুই
একটা আমি
সমান্তরাল একজোড়া রেলের পাত,

একপাশে তুই
একপাশে আমি
ভালোবাসা সমান্তরাল,

আমরা দুজন রেলের তুই পাতে বসে ভালোবাসি দুজনকে
অনুভব করি রেলের পাতে
চেয়ে থাকি দূর দিগন্তে
কখন রেলের পাত মিশবে একসাথে,

আমাদের ভালোবাসা মিশে না
মেশা হয় না তোর আর আমার
তবুও ভালোবাসা সমান্তরাল
তোর আর আমার।
আদতে একক জীবন রাজা রাজা
প্রেমে সুখের দ্বিখণ্ডন তো মধুময় ভুবন
অসম প্রেম তো সংকটময় জীবন
মনের ঙ বিভাজন
প্রেমের বহুগমন
অশান্তি চরম
ৎ মরণ;

কেও বুঝে সতর্ক হয়
কেও আগুনে ঝাপ দেয়।


খণ্ড খণ্ড বিভাজন



খণ্ড খণ্ড বিভাজন
- যাযাবর জীবন


একা মন একা একা
একা আমি যেমন তেমন
একা চলি রাজার মতন;

মনে প্রেম তো জীবন তুই তুই
শরীর এখানে আমার কাছে
মন পড়ে থাকে ওখানে, তোতে
আমি দ্বিখণ্ডিত হয়ে রই;

তার আগমন তোর আর আমার মাঝে
সরল প্রেমের জটিলিকরন
ত্রিখণ্ডিত আমি
সংকটাপন্ন জীবন;

তারপর এ ও সে এরা তারা ওরা
খণ্ড খণ্ড আমি আর প্রেমের বিভাজন
আসলে কি প্রেম?
উঁহু, মোহ মায়া আর কামের উল্লাস
উসৃঙ্খল জীবন;

আদতে একক জীবন রাজা রাজা
প্রেমে সুখের দ্বিখণ্ডন তো মধুময় ভুবন
অসম প্রেম তো সংকটময় জীবন
মনের ঙ বিভাজন
প্রেমের বহুগমন
অশান্তি চরম
ৎ মরণ;

কেও বুঝে সতর্ক হয়
কেও আগুনে ঝাপ দেয়।

কালো স্বপ্ন



কালো স্বপ্ন
- যাযাবর জীবন


সেই সেদিন তোকে তুলে দিয়েছিলাম রাতের ট্রেনে
রেলের পাত হারিয়ে গিয়েছিল অন্ধকারে
হুইসেলের সাথে তুইও মিলিয়ে গিয়েছিলি রেলের পাতে;

তারপর আকাশে চাঁদ উঠেছে কি?
চাঁদনি কোথায়?

মন চাঁদ হলে তবেই না চাঁদনি
নতুবা রাত তো প্রতিদিনই আসে,
কালো হয়ে;

কোন এক গহীন কালো রাতে তুই ট্রেন থেকে নেমে দাঁড়ালেই ষ্টেশনে চাঁদ
চাঁদনি ভেজাবে আমাকে
আমি ভিজব তোতে;

স্বপ্নগুলো এত কালো হয় কেন?


ঘোলা কাঁচ



ঘোলা কাঁচ
- যাযাবর জীবন


ঘুরে ঘুরেই চেয়ে থাকে আয়নায়
সুন্দর কিবা সুন্দরী-তমা
ওখানেই দেখা যায়
কে কি ভাবলো তার কি এসে যায়?

ক্ষণে ক্ষণে তাকায় আয়নায়
বুদ্ধির ঝিলিক দেখে বুদ্ধিমান আর বুদ্ধিমতী
আরে! বোকার দল সব বাকি
বুদ্ধি কোটে বুদ্ধির ঢেঁকি;

নিজের আয়নায় নিজের শ্রেষ্ঠত্ব
খুঁজে ফেরে মানুষেই
আমি তুমি তারা ওরা ওরা
খুঁত ধরে সকলেই;

শ্রেষ্ঠত্ব দেখতে সবাই চেয়ে থাকে কাঁচের আয়নায়
মন আয়নার ঘোলা কাঁচে কি আর সৌন্দর্য দেখা যায়?

কথা ও বিষ



কথা ও বিষ
- যাযাবর জীবন


হরহামেশাই কথার কামড়
মশা কোন ছাড়!
অনেক বিষ তোর ঠোঁটে
কথায় অনেক ধার;

বিষ চাখতে ইচ্ছে করেছে খুব
প্রমাণ দিয়ে যা চুমুতে।



পাথরের হিসাব



পাথরের হিসাব
- যাযাবর জীবন


দিনের হিসাব দিনে
মাসেরটা মাসে
বছরের হিসাব বছরে,
মনের হিসাব মনে
প্রেমের হিসাব প্রেমে
সুখ দুঃখ অনুভবে,
তোরা হিসাবে পটু
সব হিসাব তোদের
আমার কেবলই স্থবিরতা;

পাথর হিসাব জানে না
শুধু ক্ষয়ে যাওয়া সময়ে,
ধীরে, খুব ধীরে;

তোরা পাথর দেখিস
ক্ষয় দেখিস না।



ছোঁয়া



ছোঁয়া
- যাযাবর জীবন


ছুঁয়ে দিলে তুই ভালোবাসা
ছুঁয়ে দিলেই কান্না

তবুও এক ছোঁয়া দূরত্বটুকু ছুঁয়ে দেয়া হয় না



ছুঁয়ে ছুঁয়ে থাকা



ছুঁয়ে ছুঁয়ে থাকা
- যাযাবর জীবন


এই যে ছুঁয়ে ছুঁয়ে থাকা
তবুও হয় না ছোঁয়া
এই যে জড়িয়ে রাখা তবুও হয় না ভালোবাসা;

আমি প্রেম শিখি নি
আমি ভালোবাসি নি
মন ছুঁতে গিয়ে শরীরী হয়ে গেছি
ভালোবাসতে গিয়ে কামে জড়িয়েছি
ছিঃ ছিঃ ছিঃ ছিঃ,
তবে কি ভালোবাসা শরীর?
কই! আগে তো বুঝি নি;

কতটা কাছে আসলে ভালোবাসা হয়?
কতটা ভালোবাসলে কাছে যেতে হয়?

আমি না বুঝেই কাছে এসে পড়েছি
আমি না বুঝেই ভালোবেসে ফেলেছি;

যদি ভুল হয়ে যায়
যদি ভুল পথে যাই,
তুই জড়িয়ে থাকিস আমায় ছুঁয়ে ছুঁয়ে
তুই জড়িয়ে রাখিস আমায় হৃদয় দিয়ে।



হলুদ খাম



হলুদ খাম
- যাযাবর জীবন


এক সময় কত কত চিঠিই না লিখেছি তোকে
কত কত চিঠিই না পেয়েছি তোর কাছ থেকে;

আজকাল কি আর চিঠির যুগ আছে?
কে, কোথায় আর ইদানীং কলমে চিঠি লিখে?
হারিয়ে গেছে রুলটানা সুগন্ধি চিঠি লিখার পাতা,
হলুদ খামের দিন তো ফুরিয়ে গেছে কবেই;

তোর কি সময় আছে এখন চিঠি লিখার?
আমার কিন্তু অনেক ধৈর্য চিঠি পড়ার
কিংবা অপেক্ষার,
একদিন তুই নিশ্চয়ই চিঠি লিখবি আবার
সেই আগের মত,
প্রত্যেকদিন না হোক মাসে একটা
কিংবা বছরে..................

আমি অপেক্ষায় থাকলাম;

আমি কিন্তু এখনো চিঠি লিখি তোকে
প্রত্যেকদিন একটি করে, মনে মনে;
কাগজে কলমে?
প্রত্যেকদিন লিখা না হলেও
মাসে একটি কিংবা ছ মাসে দু চারটি করে;

খাম হীন চিঠিগুলো নিশ্চয়ই পৌঁছে যাবে তোর হাতে
কোন না কোন ভাবে..................

আশায় থাকলাম।


বহুগামিতা


বহুগামিতা
- যাযাবর জীবন


যৌবন আর কদিনের?
তবুও বহুগামিতা
আর মন মরণ,
যৌবন সন্ধ্যে হলে অনুতাপ
আর রাত্রি হলে ক্ষরণ;

তবুও প্রতিদিন বহুগামিতায় যৌবন
আর নিত্য সংসার ভাঙন।



নাইতে নদী


নাইতে নদী
- যাযাবর জীবন


নাইতে নদী আলো
না বাসিলি ভালো,
নদী নদী নদী
নারী নারী নারী
নদীতে নাইলেই নারী, নদী আলো
আমায় না হয় তুই, নাই বাসিলি ভালো।





ভালোবাসার নগরী



ভালোবাসার নগরী
- যাযাবর জীবন


ইচ্ছে করলেই কি পাখি হওয়া যায়?
আমার ডানা কোথায়?

আকাশ বলতে তো নীল
ভালোবাসার নগরী নাকি সূর্যের ওপারে;

আমি সূর্যোদয় দেখি, সূর্যাস্ত দেখি
ভালোবাসা দেখব বলে,
কখনো চোখ ঝলসে দেয় সূর্য কখনো অন্ধকার
আমি তো তোর হয়েই থাকি, তুই কার?

আচ্ছা! আকাশের ওপারে কি?
বড্ড ইচ্ছে করে ডানা মেলতে
বড্ড ইচ্ছে করে নীল পেরোতে;

কোন একদিন আমরা পাখি হব
কোন একদিন নীল ছুঁয়ে দেব,
কোন একদিন ঠিক ভালোবাসব
সূর্যের ওপারের ভালোবাসার নগরীতে।



কাজ



কাজ
- যাযাবর জীবন


তুই উড়ছিস স্বপ্নে
আমি ঘুরছি কাজে
আমাদের দেখা হয়ে যায় খুব মাঝে মাঝে
জলে, স্থলে কিংবা আকাশ পথে;
একটু চোখের দেখা
তারপর তোর নির্লিপ্ততা
আমরা আবার যে যার পথে.........

কোন একদিন হয়তো তোর নির্লিপ্ততা কাটবে
কোন একদিন হয়তো আমিও উড়ব স্বপ্নে
সেদিন না হয় আবার ভালোবাসা হবে আমাদের স্বপ্নে স্বপ্নে;

স্বপ্ন দেখলে কি আর পেট ভরে?
এখন চল রে মন কাজে।




অবিরত অনুভব



অবিরত অনুভব
- যাযাবর জীবন


ভালোবাসা কি? আমি জানি না
ভালোবাসার দিবস হয়, তাও মানি না;

তোমরা তোমরা
তারা তারা
ওরা ওরা
এক একটি হেতু খুঁজ
এক একটি দিবস বানাও
ফুর্তি কর
আড্ডা মার
টাকা ওড়াও;

আমার কাছে সূর্যোদয়ে দিবস
কর্মে সময়
সূর্যাস্তে রাত্রি

তোমাদের মা দিবস
তোমাদের বাবা দিবস
দিবস এলেই বাবা মায়ের সাথে সেলফি
বাকি তিনশত চৌষট্টি দিন কে কার?
আদতে যার যার তার তার;

তোমাদের ভালোবাসা দিবস
তোমাদের আলিঙ্গন দিবস
দিবস এলেই জড়াজড়ি
গালে গালে চুমোচুমি
রেস্টুরেন্ট এ টেবিল পাওয়া ভার!
আর ভার্চুয়ালে সেলফি,
বছরের বাকি দিনগুলোয় কদিন শান্তি?
নাই বললাম অশান্তি;

আমি দিবস মানি না
আমার কাছে মা, মা'ই
বাবা, বটগাছ
আর ভালোবাসা অনুভব,
মনের ভেতর
বছরের তিনশত পঁয়ষট্টি দিন
একই ররকম, অবিরত অনুভব।




বন্ধুত্ব আর প্রেম



বন্ধুত্ব আর প্রেম
- যাযাবর জীবন


আমাদের দেখা হয় না কত দিন!
কথা হয় না কত দিন হয়ে গেছে!!

বন্ধুত্ব থেকে হরহামেশাই প্রেম হয়ে যায়
যেমন হয়েছিল তোর আর আমার,
সেও তো অনেক যুগ হয়ে গেছে
এখন আর বন্ধুত্ব নেই,
প্রেম আছে কি?
আমি ঠিক বুঝতে পারি না;
অনেক কিছুই আমি বুঝতে পারি না
যেমন বুঝতে পারি নি তোকে;

কই? অনুভব তো ঠিকই রয়ে গেছে
একটা কষ্ট কষ্ট ব্যথা
একটা দুঃখ দুঃখ সুখ
একটা ঘুম ঘুম আবেশ
একটা স্বপ্ন স্বপ্ন ঘুম
বুকের কোথায় জানি
হয়তো খুব গভীরে কোথাও;
আমি ঠিক বুঝতে পারি না,
যেমন বুঝতে পারি নি তোকে;

প্রেমী কখনো বন্ধু হতে পারে না, তাই না?
আমি কিন্তু বন্ধু হতে চেয়েছিলাম;
আচ্ছা! এখন কি প্রেম আছে আমাদের মাঝে?
আমি ঠিক বুঝতে পারি না,
যেমন বুঝতে পারি নি তোকে।




লালের ধরণ


লালের ধরণ
- যাযাবর জীবন


তোর শাড়িটা লাল
লাল তোর গাল
কখনো লাজে
কখনো রাগে
দহনে, ভালোবাসায় আর অনুরাগে?

সূর্যোদয় লাল
তারপর নতুন দিন
সূর্যাস্তও লাল
তারপর আঁধার
প্রকৃতি কিংবা মন
একটা ভালোবাসায় কাটানো যায় একটা পুরো জীবন

কান্নার চোখ লাল
লাল গোলাপে কাঁটা
টকটকে লাল রক্ত
ভালোবাসা? বড্ড কঠিন
মন করে ফেলেছি শক্ত

লালের কতই না ধরণ
কখনো মন মাতোয়ারা কখনো ক্ষরণ

পলাশ লাল
শিমুলও লাল
লাল শাড়িতে তোকে বড্ড মানায়;

আজ লাল পড়েছিস কি?


বরফে ফাগুন


বরফে ফাগুন
- যাযাবর জীবন


একটা দিন, ফাগুন ফাগুন
ভালোবাসায় রঙিন
একটা মেয়ে, আগুন আগুন
ভালোবেসে সারাদিন;

একটা আমি, বরফ শীতল
যাযাবর দিন, ব্যস্ত উতল;

ফাগুন আর আগুন, তোমাদের সবে
বরফে আগুন লেগেছিলো কবে?



ডুবাডুব



ডুবাডুব
- যাযাবর জীবন


কেও ভাসে
কেও ডুবে
কেও ভেসে ডুবে
কেও ডুবে ভাসে:
তুই প্রেমে ডুবেছিস
আমি তোতে।




খুঁড়ে খোঁজা



খুঁড়ে খোঁজা
- যাযাবর জীবন


কত কথাই না লুকানো থাকে, কথার ভাঁজে
কে আর খোঁজে?

তবে কেও কেও খোঁজে
কেও কেও আবার খোঁড়ে;

হ্যাঁ খুঁজলে হ্যাঁ'ই থাকে
না খুড়লে না,
কজন বোঝে?

শুধু খুঁড়েই গিয়েছিস,
খুঁজে পেয়েছিস আমায়?



মন চোর


মন চোর
- যাযাবর জীবন


টুপটাপ টুপটাপ রোদ মন চোর
টুপটাপ টুপটাপ কুয়াশার ভোর




দূরে কোথাও



দূরে কোথাও
- যাযাবর জীবন


সন্ধ্যের গোধূলিতে দিগন্তে ঝুলে থাকে কুয়াশা
সূর্যটা লাল হয়ে টুপ করে ডুবে যেতেই পাখির ডানায় অন্ধকার
জোড়ায় জোড়ায় ঘরে ফিরছে পাখিরা
আমি ভাসতে থাকি অন্ধকারে,
কে জানি ক্রমাগত ডাকে আমায় দূরে কোথাও
আয়, আয়, আয়
আমি অস্থির উড়াল ডানায়
চাঁদ অনেক দূরে............



মন তোর



মন তোর
- যাযাবর জীবন


কাছে আসব বললেই কি কাছে আসা হয়?
মন রাত্রি হলে ভোরের কুয়াশা পাড়ি দিতে হয়
সকাল হলে পাড়ি দিতে হয় দুপুর
দুপুর এলেই সামলে বিষণ্ণ বিকেল
বিকেল মানেই তো হলুদ
তারপর মন কমলা থেকে লাল হতে হতে কালো,
পুরো একটা রৌদ্র পারি দিয়ে তবেই না রাত
আর রাত হলো তো মন চাঁদ
আকাশে চাঁদ থাকুক আর নাই থাকুক মন চাঁদনি
তারপর স্বপ্ন
তারপর তুই
তারপর জড়াজড়ি ঘুম;

কাছে আসতে আসতে পুরো রাত পারি দিয়ে ভোর
তারপর আবার রৌদ্দুর,

দেখ! বিকেলটা পাড়ি দিচ্ছে রোদ
অথচ আমি এখনো রাতে
আমি এখনো চাঁদে
আর স্বপ্নে স্বপ্নে রাত রৌদ্দুর;

কাছে আর আসা হয় না,
খুব কাছে তোর;
তবুও চাঁদ সূর্যে
দিন রাত্রে, মন তোর।



কুয়াশার ভোর



কুয়াশার ভোর
- যাযাবর জীবন


টুপটাপ টুপটাপ কুয়াশা ধোঁয়াশা
ঝরছে ঝরছে, সকালটা ভিজছে
ঘাসশিশির ভিজছে মনখারাপের স্রোতে

কিচিমিচি পাখি, শিশিরভেজা ডানা
উড়ছে মন, অনুভূতি অচেনা
স্বপ্নালু ভোর, আমি ভিজছি তোতে।




এঘাট ওঘাট



এঘাট ওঘাট
- যাযাবর জীবন


বয়ে তো কবেই গিয়েছি তোতে
নদীতে আসলেই মন নদী,
এখন শুধু জোয়ার ভাঁটা
আর ডুবা ভাসা;
কচুরিপানা থিতু হয়েছে কবে?
জীবন নদী সময় স্রোতে;

এঘাট ওঘাট হয়ে একদিন ঠিক পৌঁছুব তোর ঘরে
তোর চোখে ভাব খেলবে না সেদিন
একটু মন খারাপ হবে কি আমার?
কার কি এসে যায়?
আমি না হয় আবার কচুরিপানা
ভাসা ও ডুবা তোতে
এঘাটে ওঘাটে ঘুরে।





মুখের কথা, "ভালোবাসি"



মুখের কথা, "ভালোবাসি"
- যাযাবর জীবন


শুধু জিহ্বা থেকে ঠোঁট অবধি একটি শব্দ ছুঁড়ে দেয়া - 'ভালোবাসি';
বলে ফেলাটা কতই না সহজ, তাই না?

ভালোবাসি শুধু তো একটি শব্দ নয়,
বিশাল এক দায়িত্বের বোঝা,
কজন বোঝে?
আর কজন বোঝা বহন করে? বুঝে;
মনের আবেগ মুখ নিঃসৃত শব্দে বেরিয়ে আসে কতই না সহজে
'ভালোবাসি';

আরে! এত সহজেই ভালোবাসা হয়?
অগুনতি প্রতীক্ষার দিনরাত
আর অপেক্ষার প্রহর
দায়িত্বের পাহাড়
আর প্রতিকূলতার সাথে নিবিড় প্রণয়;
এত সহজ?
এতই?

হ্যাঁ, মুখ দিয়ে বলে ফেলা খুব সহজ,
হরহামেশাই বলে ফেলি আমরা - "ভালোবাসি"
ভালোবাসার বোঝা না বুঝেই,
তারপর ভুলে যাই, আরো সহজেই;

কথাই তো!
মুখের কথা, "ভালোবাসি"।



জীবনের চাকা



জীবনের চাকা
- যাযাবর জীবন


আমি তুই আমি তুই
জীবনের চাকা
প্রেম প্রীতি ভালোবাসা স্বার্থে ঢাকা
সকালে উদয় সন্ধ্যায় অস্ত
টিকটিক টিকটিক সূর্যের কাঁটা
চাঁদ আর চাঁদনি
সূর্যের দিন
হাড়িকুড়ি ঝনঝন
প্রতিদিন প্রতিদিন
ফেলে আসা দিনগুলো স্মৃতি কুড়ায়
তুই আমি প্রতিদিন সময় গড়ায়
টিকটিক টিকটিক ঘড়ির চাকা
তোর আমার ভালোবাসা সূর্যে সূর্যে ঢাকা।




মিঠাজলে সাগরস্নান



মিঠাজলে সাগরস্নান
- যাযাবর জীবন


আমি পাহাড়ে, ঝর্ণার কান্না
আমি সমতলে, ঝর্ণা কেঁদে নদী
অনেক অশ্রু জমে সাগর, নদীর কান্না
আকাশে স্বপ্নডানা, মেঘের কান্না;
যেই ছুঁয়ে দিয়েছে আমায় ভিজেছে অশ্রুতে
আমার সারা গায়ে লবণ মাখা,

যেই না চাঁদ ছুঁয়ে দিল আমায়, আকাশ চাঁদনি
তবে কি চাঁদও কাঁদে?
আমি আর যাব না পাহাড়ে
আসব না সাগরে
ভাসব না আকাশে
দেখব না চাঁদ, চাঁদনি রাতে;

যেদিন ভালোবাসা নেমে যাবে ভাটার টানে
ডুবে যাব আমি গভীর ঘুমে,
কোন এক কালো পূর্ণিমাতে
চোখঘুমে
মনঘুমে
শরীর ঘুমে,

সেদিন আবার সবাই জেগে উঠবে সূর্য চুমে
কান্না ভুলে
কান্না ভুলে;
সেদিন সমুদ্রে এসো সবাই তোমরা তোমরা
মিঠাজলে সাগরস্নানে।





প্রগলভ ঘুমে



প্রগলভ ঘুমে
- যাযাবর জীবন


কিছু ইচ্ছা সুপ্ত
কিছু গভীর ঘুমে
কিছু প্রকাশ্য কিছু প্রগলভ
কে বলেছে আমি মন পড়তে পারি?
প্রেম ভালোবাসা, বিসর্জন ঘৃণা
ওর, তার আর তোর মতামত;
আমার শুধুই মনবন্ধ ভালোবাসা
ইচ্ছা মনে
মনবন্ধ ঘুমে।



শ্বাসত সত্য



শ্বাসত সত্য
- যাযাবর জীবন



পরিবর্তন সময়ের
পরিবর্তন স্থানের
পরিবর্তন জীবনের
পরিবর্তন আমার ;
প্রতিদিন সূর্যোদয়
প্রতিদিন সূর্যাস্ত
পায়ে পায়ে জীবন
মৃত্যু শ্বাসত সত্য।



মনে চাঁদ ছুঁই



মনে চাঁদ ছুঁই
- যাযাবর জীবন


মন তুই তুই
মনে চাঁদ ছুঁই
চাঁদ চাঁদনি মন জ্যোৎস্না
মন তুইহীন চোখ কান্না
মন ভালোবাসা, মন তুই তুই
চাঁদ চাঁদনি আমি তোকে ছুঁই
আয় রাত রাত মেঘ উড়ে যাক
রাত চাঁদনি মনে শুধু তুই।



গ্রহণ এর রাত



গ্রহণ এর রাত
- যাযাবর জীবন


গ্রহণ চাঁদে
মন আমার
তুইহীনা চাঁদ আর জ্যোৎস্নার অন্ধকার
রাত তো কালোই হয় চাঁদহীনা কিংবা তুই
সেই কবেই তো গ্রহণ লেগেছে আমাতে, তুইহীনা হয়ে;

আচ্ছা! তোর মনেও কি গ্রহণ লাগে?
আমাহীনা জ্যোৎস্না রাতে;
বড্ড জানতে ইচ্ছে করে, গ্রহণ এর রাতে।


তুই কই?



তুই কই?
- যাযাবর জীবন


সাগরে এলেই মন তুই
আমি নীলে ভাসি আকাশে
নীলে ডুবি সাগরে
মন তোতে তোতে, তুই কই?




নিম্নগামী



নিম্নগামী
- যাযাবর জীবন


আমি যখন বাসের হাতলে ঝুলতে থাকি
গাড়িতে বসা সাহেবদের করুণার চোখ পড়ি
আমার কি একটু হিংসা হয়?
গাড়িতে বসা সাহেব দেখে;

যখন রিক্সার পয়সা জোটে
হেটে যাওয়া মানুষগুলোকে দেখে বড্ড মায়া হয়
তাদের কি একটু হিংসা হয়?
আমায় রিক্সা চড়তে দেখে;

পকেট গড়ের মাঠ হলে যখন পথ হাঁটতে হয়
রাস্তার ল্যাংড়া লুলা লোকগুলোকে বড্ড মায়া হয়
তাদের কি একটু হিংসা হয়
আমায় দু-পায়ের ওপর দেখে;

স্ব স্ব অবস্থান থেকে করুণা নিম্নগামী
মন-ডানায় আকাশে হিংসা ভাসে।



অন্ধকারের আগুন



অন্ধকারের আগুন
- যাযাবর জীবন


আজ কুয়াশার আড়ালে চাঁদনি
ম্যাড়ম্যাড়ে চাঁদে স্বপ্ন খেলে না চোখের পাতায়,
রাত চোখ ছুঁয়ে দিতেই মন ঘুম;

অন্ধকারের আগুন জ্বালানো হয়েছে বুকের চাতালে
সারারাত ধরে ভালোবাসা পুড়তে থাকুক,
আমি মনবন্ধ গভীর ঘুমে।