মঙ্গলবার, ৩১ মে, ২০১৬

অন্য মাত্রার প্রেম




অন্য মাত্রার প্রেম
- যাযাবর জীবন

তুই আমি আর অন্ধকার
মন যখন অভিমান

তুই আমি আর চাঁদনি
যখন প্রেম জোয়ার

তুই আমি আর সূর্য
রাগ পুড়ে বাষ্প

তুই আমি আর বৃষ্টি
আমাদের মন খারাপ

মন তো পুড়তেই থাকে বর্ষায় কিংবা রোদে
কাম বয়ে নদী হয় তোকে না পেয়ে
অনেকদিন চাঁদ ওঠেনি
এখন ঘোর বর্ষার সময়;

এবার বর্ষায় নদী পুড়ুক
এবার অমাবস্যায় সূর্য উড়ুক
চল ভিজি দুজনে কাম পোড়া চাঁদনিতে;
বেলুন না হয় জিভে জড়াব লবণ চাখার আগে।






সোমবার, ৩০ মে, ২০১৬

চশমা



চশমা
- যাযাবর জীবন

কেও চোখ ঢাকে রোদ চশমায়
রোদ থেকে চোখ বাঁচাতে
কারো জন্য শুধুই ফ্যাশন

কারো চোখে পাওয়ার গ্লাস
পৃথিবী দেখতে স্পষ্ট করে
চশমা ছাড়া আবছা দেখে দূরে

কারো বা রিডিং গ্লাস বাধ্য হয়ে
বই পত্র পড়ার তরে
খালি চোখে ঝাপসা দেখে, মাথা ধরে

তোর চশমা কালো কেন?
কালো গ্লাসে চোখ আড়াল হয়
কান্না নয়

আমি দূরে দেখি না
আমি কাছে দেখি না
আমি রোদে দেখি না
আমি অন্ধকারে দেখি না
আমি প্রেম দেখি না
আমি মন দেখি না;
আমার চোখের পর্দা নেই,
চশমা লাগিয়ে কি হবে?



মেঘবালিকার জন্য


মেঘবালিকার জন্য
- যাযাবর জীবন

মেঘবালিকা তুই মেঘ হতেই
আমি আকাশ হলাম
তোকে বুকে ধরে নীল হলাম;

মেঘদুপুর মনখারাপ ছুঁয়ে দিতেই বৃষ্টি নামলো
তুই কান্না হলি
ভালোবাসা রঙ হারালো;

আমি তোকে এঁকে নিলাম কান্নার রঙে
বর্ণহীন হলো ক্যানভাস
মেঘবিকেলের দুঃখবিলাস;

বৃষ্টির রঙ দেখেছে কে?
অমাবস্যা রাতে, আলোহীন চোখে
রাত্রিরও মাঝে মাঝে কাঁদতে ইচ্ছে করে;

শূন্যস্থান একসময় না একসময় পূর্ণ হয়েই যায়
ধুলো দিয়ে, বৃষ্টি দিয়ে, কান্না দিয়ে;
আমি না হয় তোর কান্নাই হলাম।


শনিবার, ২৮ মে, ২০১৬

মন বৃষ্টি



মন বৃষ্টি
- যাযাবর জীবন

মনটা রাত হতেই আকাশ অন্ধকার
মন চাঁদ হতেই তুই চাঁদনি
সূর্যের ঘুম ভাঙে তুই এলে
স্বপ্ন ঢলে পরে নিদ্রার কোলে;

দিনের মন খারাপ হলে মেঘ
তুই কাঁদলেই বৃষ্টি
তোর কথা মনে হলেই মনখারাপ
একি অনাসৃষ্টি!

তুই কাঁদছিস তাই বৃষ্টির ধুম
মন অন্ধকার হতেই রাত নিঝুম
পানির রঙ মিশে যায় অন্ধকারে
ভিজে যায় স্বপ্ন ধুয়ে যায় ঘুম।



লোনা বৃষ্টি


লোনা বৃষ্টি
- যাযাবর জীবন

মেঘ নামলেই বৃষ্টি
আকাশ কিংবা মনে;
পানির স্বাদ মিষ্টি, বৃষ্টি যখন আকাশ থেকে
মনের বৃষ্টি লোনা, চেখে দেখেছে কে?
মন যখন বৃষ্টি ঝরায়, স্বাদে কি এসে যায়
মিষ্টি কিংবা লোনায়;

আমি সূর্য দেখি
তুই আলো হ।



শুক্রবার, ২৭ মে, ২০১৬

কথার কথা



কথার কথা
- যাযাবর জীবন

কথা ছিল বুকে করে রাখার
তুই তো বুকে ভেতরই গেঁথে বসলি
কথা ছিল মাথায় করে রাখার
তুই তো মাথার ওপরেই দাঁড়িয়ে গেলি,
কথায় কথায় কত কথাই তো দেয়া হয়
শুধু পিছ পা আমাদের কথা রাখার সময়;

কাছে আসার কথা ছিল তোর
কাছে টানার কথা ছিল আমারও
আজ তুই সাত সমুদ্দুরের ওপারে
আমি তো'তে ডুব দিতে গিয়ে সাগর গভীরে,
কথা রাখা হয় নি কারো
মুখ ফস্কে বলে ফেলা সব কথার কথা;

কথা ছিল আকাশে ডানা মেলার
কথা ছিল দিগন্ত পাড়ি দেবার
তোর, আমার, এক ডানায় একসাথে
মেঘমুক্ত আকাশ পাই নি কখনো,
কথা রাখা হয়নি কারো
মুখ ফস্কে বলে ফেলা সব কথার কথা;

কথা ছিল নৌকোয় পাল তোলার
কথা ছিল অজানায় ভেসে যাবার
তোর, আমার, এক নৌকায় একসাথে
পালে হাওয়া লাগে নি কখনো,
কথা রাখা হয়নি কারো
মুখ ফস্কে বলে ফেলা সব কথার কথা;

শতেক বাহানা
হাজারো কারণের দোহাই দিতে জুড়ি মেলা ভার
তোর আর আমার
কথা না রাখার;

ধ্যেৎ! কথার কথা তো কতই বলি আমরা
দিব্যি দিয়েছে কে? সব কথা রাখতেই হবে
তোকে কিংবা আমাকে;

ওহ্!
কথায় কথায় আসল কথাটাই তো বলা হয় নি এখনো;
"ভালোবাসি তোকে"
আগের থেকেও বেশী,
এখনো।



তোর গভীরে




তোর গভীরে
- যাযাবর জীবন

আকাশের খিটখিটে মেজাজ
কখনো রোদ্দুর কখনো মেঘলা
কখনো মেঘ কখনো বৃষ্টি
তোর মেজাজের সাথে একদম মানানসই
কিংবা নারীর;
নারী কি আকাশ?
নাহ, আসলে হওয়ার কথা সমুদ্দুর
গভীর, অতল গভীর,
ডুব দেয় নর
তারপর ডুবতে থাকে
ডুবতেই থাকে
আমি তো সেই কবেই ডুবেছি তো'তে
মন প্রেম হওয়ার পরে
এখনো ডুবছি তো'তে মরে।

তুই আরেকটু কম গভীর হলে ভালো হতো
মাঝে মাঝে নিঃশ্বাস নিতে হয় বেঁচে থাকার তরে।


বৃহস্পতিবার, ২৬ মে, ২০১৬

অবুঝ ভালোবাসা



অবুঝ ভালোবাসা
- যাযাবর জীবন

মেঘ জমলেই কি বৃষ্টি হয়?
মন তো আর মেঘ নয়
সব মেঘই কাঁদে না
বৃষ্টি হয়ে ঝরে না;
সব মনে কি প্রেম হয়?
হয়তো হয় হয়তো নয়
মন তো কাঁদতেই পারে
মন থাকলে মনের পরে;
ইচ্ছে হলেই কি কাঁদা যায়?
ভালোবাসায় হৃদয় হারায়
হৃদয় তো আর পাষাণ নয়
ক্ষরণ হলেই রক্ত বয়;

সে ভালোবাসা শেখাতে চায়
আমি অনুভূতিহীন
সে অভিমানে কাঁদে
আমি তো'তে বিলীন;

আমি তোর
সে বোঝে না,
ক্ষরণ তার
আমার অনুভূতিতে দাগ কাটে না।



মনকলা



মনকলা
- যাযাবর জীবন

মনকলা সবাই খায়
আমি আপনি, তুই তুমি; সবাই।
কেও ছড়ি বেড় হওয়ার আগেই কেটে ফেলে
কেও খায় থোর হিসাবে
কারো পছন্দ কাঁচা কলা
কেও খায় রঙ ধরলে
পাকা কলা সবাই খায়, যে যেখানে পায়;
মনকলার গাছ রোপণ স্বপ্ন দেখায়
কেও স্বপ্ন কেটে ফেলে শুরুতে
কারো ঘুম ভাঙে কাঁচাস্বপ্নে
খুব অল্প মানুষই আছে পাকা কলা খায়, স্বপ্নের বাস্তবায়নে
আর বাকিরা হা হুতাশ করে;

স্বপ্ন দেখতে মানা নেই কারো, যদি তা হয় বাস্তবমুখী
আর না হলে ঘুম ভাঙাই শ্রেয়, সময়োপযোগী;
মনকলা খাওয়াতে মানা নেই, যদি তা কারো ক্ষতির কারণ না হয়
আর না হলে নিজের পেটখারাপ আর অন্যের মাথাখারাপ, মনকলায়;
কেও বোঝে
কেও হোঁচট খায়,
কেও হোঁচট খেয়ে পড়ে যায়
কেও বার বার দাঁড়ায় কলার আশায়,
কলা ঝুলতে থাকে স্বপ্নের গাছে;

মনকলা খায় না কে?
যার মন আছে।



বুধবার, ২৫ মে, ২০১৬

গল্প গল্প খেলা



গল্প গল্প খেলা
- যাযাবর জীবন

একটি গল্প বলি শোন -
কলেজ পড়ুয়া ছাত্র ছাত্রী দুজন
মানসিকতায় ফারাক তাদের যোজন যোজন
একজন দেশের উত্তর সীমান্তে অন্যজনের দক্ষিণে বাস
শহরে পড়তে এসেছে মনে তাঁদের অনেক আশ
একই ক্লাসে অধ্যয়নের সূত্রে পরিচয়
প্রথমে কথা টুকিটাকি তারপর দিনভর
বই দিয়ে শুরু
তারপর প্রেমের পৃষ্ঠা উলটানো
প্রেম খুঁজতে খুঁজতে দেহতে পৌঁছানো
যৌবনের তাড়না
তারপর বিছানা
ধ্যেৎ! নিত্যদিন-কার একই গল্প বলে শেষ করা যাবে না।

অন্য গল্প বলি -
একটা মেয়ে ছিল স্বামী সোহাগী
ঘর ভরা সন্তান সন্ততি
আর প্রেম ভরা মন
তবুও যেন কি এক শূন্যতা যখন তখন;
একটা ছেলের প্রেমে পড়লো খুব সহসাই
তারপর ওলোটপালট জীবন
ভালো লাগা আর না লাগার মাঝে দোদুল্যমান
দিন রাত্রির সর্বক্ষণ,
কি জানি আছে, কি জানি নেই
ক্ষণে ভালো লাগে ঐ ক্ষণে অস্থির এই
শরীর এখানে তো মন পড়ে থাকে ওখানে
স্বামী জড়িয়ে ধরে তো কাম ভেজা হয় তাঁকে ভেবে
জীবনটাই যেন কেমন কেমন
শুধু তার সাথে কথা বললেই ভিজে যায় মন
যখন তখন
নাহ, থাক
এ তো আজকাল ঘটছে হরহামেশাই
এর কথাও বলব না আজ, বরং অন্য কোন গল্পে বেড়াই।

একটি ছেলে ছিল কথা বলতো প্রচুর
ইতং বিতং আবশ্যক অনাবশ্যক
একটি মেয়ের সাথে দেখা হলো
ভালো লাগলো
তারপর কথার ফুলঝুরি থামতেই চায় না
কে কি বলছে কিছুই যায় আসে না,
কোথাও আসর বসেছে তো
তাকিয়ে আছে মেয়েটির দিকে লোক সমুখে
কথার ফুলকি ফুটছে নিজের মুখে,
একা হলে তো কথাই নেই
হাঁ করে তাকায় না যদিও তবুও চোরা চোখে বুক দেখে
কথার বিরাম নেই তার মুখে
আর একটু পর পর বাথরুমে ছোটে
জাঙ্গিয়াটা বড্ড ভেজা ভেজা ঠেকে;
নাহ, এ গল্প থাক।

এক গ্রামে এক ছেলে ছিল
ডানপিটে, দুরন্ত
তিন বাড়ি পর এক মেয়ে ছিল
সুন্দরী, দেহে বাড়ন্ত,
প্রায়ই চোখাচোখি হত দুজনার
তারপর কদিন একটু ইঙ্গিত ইশারা
তারপর ভালোলাগা, টুকরো টুকরো কথা বলা
বেশ ভালোই চলছিল;
কোন এক বৃষ্টির দিনে ছেলেটি অনেক ভাবাবেগে
মেয়েটিকে বললো, তোমায় ভালোবাসি,
মেয়েটি ফিক করে হেসে দিয়ে বললো
ঝোপের আড়ালে যাওয়ার সময় হয় নি এখনো
তারপর...... আরে নাহ, এ গল্পও বলা যাবে না।

আসলে কোন প্রেমের গল্পই শেষ হয় না
প্রেম মানেই বিছানা
প্রেম মানেই কাম
যতদিন যৌবন থাকে
শরীরে শরীরের টান;
তারপর চামড়া যেই না বয়সের স্পর্শ পায়
ঘুমঘোরে হাতটা পাশবালিশটার ওপারে চলে যায়
অনুভব পেতে অতি পরিচিত স্পর্শের
আছে, কেও তো আছে পাশে;
শরীরে শরীর কাম নয়, নির্ভরতার স্পর্শ
শুধু জড়িয়ে থাকার জন্য দেহ নয়,অনুভব আত্মায় আত্মায়;
কাওকে পাশে দরকার হয়
শুধু কাম নয়, ভালোবাসার জন্য।

স্বামীর জন্য স্ত্রী আর স্ত্রীর জন্য স্বামী
ভালোবাসার ডিকশনারিতে এর থেকে কি আছে দামী?




আজকালকার ভালোবাসার ধরন



আজকালকার ভালোবাসার ধরন

- যাযাবর জীবন

উম্মা উম্মা চুম্মা চুম্মা
কারো কারো কাছে এ না হলে যেন প্রেম হয় না
চুম্মাচাট্টি তাদের কাছে ভালোবাসারই ধরণ
যেন ঘুম থেকে উঠেই দৈনন্দিন শৌচালয় গমন;
আমার বড্ড আপত্তি এতে
চুমিয়ে ঠোঁট ভিজিয়ে দিতে
যেখানে সেখানে যখন তখন;
ভালোবাসা আমার কাছে
বৃষ্টির পরে গা জুড়নো হিমেল হাওয়া
ক্লান্ত দুপুরে ঠা ঠা রোদে একটু মেঘের ছায়া
শান্তির পরশ একান্ত আপন অনুভবে,
অনুভূতি কেন চুম্মাচাট্টিতে প্রকাশ করতে হবে?

ভেতরের অনুভব জনসমক্ষে আনতেই হবে কে বলে?
আজকালকার ভালোবাসার প্রকাশ দেখলে আমার গা জ্বলে;

আমি আসলে যুগের অচল, হয়তো একটু বেশীই পুরনো
তাই বোধহয় ঠোঁটে ঠোঁটে ভালোবাসা, আমার হয় না কুড়নো।







মঙ্গলবার, ২৪ মে, ২০১৬

পারা আর না পারা


পারা আর না পারা
- যাযাবর জীবন

কতই তো গল্প লিখিস
কত কাব্য, কত কবিতা
প্রেম লিখতে পারিস কি?
কাম ছাড়া।

কতই না ছবি আঁকিস
তুলির আঁচরে
আমায় আঁকতে পারিস কি?
প্রেম ছাড়া।

চল আজ জ্যোৎস্না স্নানে
চল চাঁদে ভিজি দেহ আর মনে
আজ কামনা ধুয়ে নেই শুদ্ধ হতে
তারপর না হয় প্রেম করি।


রবিবার, ২২ মে, ২০১৬

ভোল




ভোল
- যাযাবর জীবন

কেও শিকারি কেও শিকার হয়
কেও কামড়ে ধরে কেও ছটফট করে
কারোর খাদ্য অহ্নেষণ কারো কাছে দংশন
কারো কাছে স্বার্থ আপন কেও স্বার্থে আপন;

ভোল পাল্টায় সবাই, যেখানে যেমন প্রয়োজন
আর বাকি সবই মুখের বুলি, ফাঁকা কথন।



তুই'ই কি প্রকৃতি?



তুই'ই কি প্রকৃতি?
- যাযাবর জীবন

ঝড়ের পর বৃষ্টি আর বৃষ্টির পর রোদ
গনগনে রাগের পর তোর অনুতাপ বোধ;
এই মেঘ এই বৃষ্টি
এই হাসি এই কান্না
এই ঝড় এই রোদ
তোর অভিমান আর ক্ষোভ;
এক এক সময় প্রকৃতিকে নারী মনে হয়
ক্ষণে গুরুগম্ভীর ক্ষণে হেঁয়ালি
ঠিক তোরই মত খামখেয়ালি।


শুক্রবার, ২০ মে, ২০১৬

সময় বদল



সময় বদল
- যাযাবর জীবন

বদলেছি আমি
বদলেছিস তুই
বদলেছে সময়
বদলেছে জীবন
মোহ নয় প্রেম নয়
স্বপ্ন নয় ভ্রান্তি নয়
বাস্তবতায় ঘেরা কঠিন জীবন
এবার তুইও বদলা রে মন;

একটা সময় ছিল মোবাইলের
একটা সময় ছিল রিং বেজে ওঠার
একটা সময় ছিল স্ক্রিনের দিকে তাকিয়ে থাকার
একটা সময় ছিল তোর ফোনের অপেক্ষার;

আজ স্তব্ধ হয়ে গেছে টেলিফোন
আজ বেজে ওঠে না রিং যখন তখন
আজ তুই বড্ড ব্যস্ত
কিছু ব্যস্ত হয়তো আমিও
তবুও কেন জানি চোখ চলে যায় মোবাইলের স্ক্রিনে
মাঝে মাঝেই কেন জানি মনের অজান্তে
তোরও কি এমন হয় রে?
আমার যে আজো পোড়ে মন
তোর কথা মনে হলেই যখন তখন।

আজ বৃষ্টি হচ্ছে
চল ভিজি আজ আগের মতন
শরীরে ও মনে
তুই আর আমি দুজন।



বৃহস্পতিবার, ১৯ মে, ২০১৬

সেলফি ম্যানিয়া



সেলফি ম্যানিয়া

- যাযাবর জীবন

ঊর্ধ্ব গগনে তুলিয়া বদন
কেলাইয়া দাঁত সাজিয়া মদন
শয়তানের লাঠি আগুপিছু করিয়া
ক্লিক ক্লিক
ব্যাস মোবাইলের চুলায় ছেঁকা গরম রুটি
তৈয়ারি নিজের ছবি
যারে কয় সেলফি;

অন্যভাবে কই,
ঘুম ভাইঙ্গার থন ঘুমাইতে যাওয়ার আগ তক
ইচ্ছা মতন
যখন তখন
তাকাইয়া আকাশে
চেহারা বিকাশে
শয়তানের লাঠিতে দূরে কিংবা কাছে
মোবাইলের চোখে চেহারা ভাসে
সূর্যের প্রতিফলন ক্যালানো দাঁতে
ক্লিক ক্লিক
ব্যাস হইয়া গেল সেলফি;

ফেস না হইলে ফেসবুক নামকরণের সার্থকতা কিভাবে হইবে?
তাই তো চেহারা দিতেই হইবে;
কাওরে কাওরে তো দেখি ফেসবুক পুরা নামটা অর্থবহ করিতে
বুকের ফটো উপরি।

কবে হয়তো দেখিব কমোডে বসিয়া
শয়তানের লাঠি উপরে উচিয়া
ঠেকাইয়া শৌচালয়ের ছাঁদে
ক্লিক ক্লিক মোবাইলটা কাঁদে,
আরে আরে! কিছু আরটিষ্টিক ছবিওতো হইতে পারে
শয়তানের লাঠি হাতে ধরা মোবাইল ঐ দূরে ঝর্ণার ঐপারে
বসিয়া কমোডে
পানি ফোকাসে চেহারা ডি-ফোকাসে
কিংবা পানি আর কমোড ডি-ফোকাসে চেহারা ফোকাসে
ক্লিক ক্লিক;
আজকাল'তো সব নতুন নতুন নাম আসিতেছে
যেমন মুখ বাঁকাইয়া কোমর ঘুরাইয়া বাটের (নিতম্বের) ছবি - বেলফি,
কে জানে এইটারও হয়তো নতুন নাম হইয়া যাইবে - কমোফি;
ভাগ্যিস ঢাকায় ট্রান্সপারেন্ট কমোড দেখি নাই
নইলে ফোকাসে কমোড হইলে কমোফির অন্ধে
মোবাইলটা হয়তো নাক কুঁচকাইতো কোন বদগন্ধে
"xxফি" যে এখন আমাগো রন্ধ্রে রন্ধ্রে।


অন্ধকারের রসিক খদ্দের



অন্ধকারের রসিক খদ্দের
- যাযাবর জীবন

পসরা বসে রাতের বাজারে
অন্ধকার গায়ে মেখে
আঁচল ফেলে দোকানির ভ্রুকুটি আমন্ত্রণ
খদ্দেররা ভিড় জমিয়েছে হাটে;
দোকানে দোকানে থরে থরে মাংস সাজানো
কষাই বিহীন বাজারে
বিক্রি হয় না মাংস এখানে কখনই কেজি দরে
পুরো দোকানটাই কিনে নিতে হয় খদ্দেরকে একবারে;
বিক্রি কথাটা এখানে আসলে অচলই বলা চলে
যদিও কেনাবেচা টাকার বিনিময়ে
লিজ কথাটাই এখানে বরং খাটে
নারী প্রতি ঘণ্টা দরে, কিংবা পুরো রাতের পরে;
খদ্দেররা বড়ই রসিক
মাংসাশী তো বটেই
বুক ফুলিয়ে কেও আসে হাটে
কেও চাদরে মুখ ঢেকে;
কেও আসে ট্যাঁকের মুরোদ দেখাতে
কেও লাঠি মাংস গর্জে
এখানে যুদ্ধ হয় মাংসে মাংসে
দোকান ভিজে যায় বীর্যে;
গোসল সেরে খদ্দের আবার ফুলবাবু
দোকানি পটের বিবি, লিজ ফুরোলেই;
আমরা সবাই আলোকিত মানুষ
অন্ধকার ধুয়ে, সকাল হলেই।

ভাগ্যিস অন্ধকারের হাট আছে অন্ধকার মেটাতে
হানা দিলে মনে অন্ধকার
নইলে হয়তো রসিক খদ্দেররা হানা দিত বাড়ি বাড়ি
যেখানে সেখানে যত্র তত্র দেখলেই সোমত্ত নারী;
খদ্দের কি অপরিচিত কেও?
কে জানে?
খদ্দের হতেও তো পারি আমি নিজেই, আপনি কিংবা সে
কে জানে?
ভেতরের আয়নায় দেখুন না একবার ভালো করে চেয়ে
নাহ্! কেও তাকাতে চায় না আয়নার দিকে ভয়ে
যদি অন্ধকারের চেহারা ভেসে ওঠে!
যদি বিবেক জেগে ওঠে?
তার থেকে ঢের ভালো অন্ধকার গায়ে জড়ানো
মন রাত্রি হলে পরে
রসের খদ্দের হওয়া ঢের ভালো
বাসনা মেটাবার তরে;

কি দরকার বিবেকের জানালা ভাঙার?
কি দরকার মানুষ হওয়ার?



বুধবার, ১৮ মে, ২০১৬

কষ্টের রঙ



কষ্টের রঙ
- যাযাবর জীবন

কষ্টের রঙ কে দেখেছে কবে?
তবুও সবাই প্রশ্ন করে
কষ্টের রঙ কি?
কেও বলে নীল
আমি বলি আকাশ
কেও বলে লাল
ও তো আমার বুকের রক্ত
কেও বলে ধুসর
আমি বলি বর্ণহীন;

বুকে পাথর চাপা মানুষ কষ্টের রঙ খোঁজে না
শুধুই কষ্ট বোঝে;
কেও কেও কান্না দেখে
কেও লবণ খোঁজে;

আর বাকিরা কাব্য করে।


কাটাকুটি



কাটাকুটি
- যাযাবর জীবন

খেয়ে যা আম জোড়ায় জোড়ায়
ঠুকরে আমের গা
স্মৃতি কেন এত পোড়ায় পোড়ায়
পথ চলতে পা;

ছুঁয়ে দিলি আম ঠোঁটের কোলাজে
স্মৃতির ঠোকর মনে বড় বাজে,
তোর কথা মনে হলেই কলমের আঁকিবুঁকি
মন খারাপে খেলি বিষণ্ণতার কাটাকুটি।




চোখ


চোখ
- যাযাবর জীবন

চোখ মেললেই চোখে চোখ
নেশাগ্রস্ত আমি;
লাল টিপে তোকে বড্ড মানায়
চুমুর কাঁটা নাকফুলটা
আজ না হয় ঠোঁটটা থাক
আয় হৃদয় মেলি
আয় ভালোবাসি।

ডাগর তোর চোখ
নেশাগ্রস্ত আমি;
চোখ মেললো চুমুর স্পর্শে
যেন দুটি কফির পেয়ালা
চুমুক দিতেই লবণ
এত কান্না চোখের ভেতরে!
আমায় কোথায় রাখবি রে?



মঙ্গলবার, ১৭ মে, ২০১৬

প্রহসন



প্রহসন
- যাযাবর জীবন

যতই আমায় মুছতে চাস মন ঘষে ঘষে
ততই আমি জড়িয়ে যাই তোতে এসে
জীবন চলে না রে নিয়মের অঙ্ক কষে
সুদকষায় আমাকেই পাবি সুদের বেশে;
পারলি কি মুছতে আমায় রাবার ঘষে?
সারাদিন চেষ্টার পর মন থেকে অবশেষে।

প্রতিটি ক্রিয়ারই সমান ও বিপরীত প্রতিক্রিয়া আছে,
তুই রাবার ঘষে যা মুছে দিতে আমাকে
আমি ভালোবেসে যাব মন থেকে তোকে;
নিউটনের সূত্র মিথ্যে প্রমাণিত হয় নি এখনো।

যদি ঘৃণার আগুন কখনো জ্বালতে পারিস বুকে
হয়তোবা প্রেম জ্বলে যেতে পারে তাতে
ঘৃণা তো ভালোবাসারই বিপরীত প্রতিফলন
আর নয়তো মুছে ফেলার সব চেষ্টা কেবলই প্রহসন।


প্রেমের একাল ওকাল



প্রেমের একাল ওকাল
- যাযাবর জীবন

মনে পাক ধরতেই প্রেম
প্রেম পাকতেই কাম
শরীর মিটতেই ঘাম
তারপর বড্ড পানসে
গৎবাঁধা একঘেয়ে প্রেমিক বদল
একের পর এক প্রেম
আর ক্লান্ত বিছানায় নিত্য শুকোয় ঘাম।

প্রথমে ভালোবাসা ছিল, মন ঝরতো
আজ কান্না ঝরে গালে
শুরুটা বড্ড মধুর ছিল আমাদের
এখন কেন চোখ ঝরে বিচ্ছেদের কালে?

সোমবার, ১৬ মে, ২০১৬

তুই, আমি আর আমাদের টুকিটাকি



তুই, আমি আর আমাদের টুকিটাকি
- যাযাবর জীবন

নতুন নতুন ছলাকলায় অভ্যস্ত হয়ে গেছে চোখ
প্রতিদিন দেখতে দেখতে তোর নিত্য নতুন সাজ
নিত্যই বদলায় তোর চলন বলন ভ্রুকুটির হেলন
আর প্রেমের খেলায় কথার কারুকাজ,
কখনো কোমর দোলানিতে দেখাস বাঁকানো কোমরের খাঁজ
কখনো বা হেলানো আঁচলের উঁকিতে বুকের গভীর ভাঁজ
কত আর দেখব? চোখেরও মাঝে মাঝে হয় লাজ
এ তো তোর নিত্যকার ছলা কলার কাল পরশু কিংবা আজ;
আমি স্বপ্নালু চোখে চাঁদ দেখি যখন মনে নেমে আসে সাঁঝ
আমি স্বপ্নে দেখি অমাবস্যার ওপারে বিহ্বল জ্যোৎস্নার সাজ।

এক সময়, সময় ফুরিয়ে যাবে আমাদের
এক সময় বয়সের ভারে ন্যুজ হয়ে যাব আমি
এক সময় চোখে অন্ধকার ঘনাবে আমার
আর বয়সের ভারে চোখে পড়বে ছানি,
তুই কিন্তু তখনো ঠিক এমনই থাকিস
ছলা কলায় ভুলিয়ে আমায়
যদি ভালোবাসা এরকমই থাকে আমাদের মনে
তোর চোখেই না হয় দেখব পৃথিবী তখন আমি,
ভালোবাসা থেকে আর কি আছে দামী?
যখন প্রেমে মাখামাখি তুই আর আমি
এই যাহ দিলাম তো কাঁদিয়ে তোকে!
থাক, মুছে ফেল আজ তোর চোখের পানি;
আর না হয় হঠাৎই দেখবি কোন এক দিন
কোথায় যেন একবারেই হারিয়ে গেছি আমি।

কাঁদিস না সেদিন অমন করে ডুকরে ডুকরে
যেতে হয় আমাদের সবাইকে মাটির ঘরে।


শুক্রবার, ১৩ মে, ২০১৬

তোর-আমার ভালোবাসার গল্প



তোর-আমার ভালোবাসার গল্প
- যাযাবর জীবন

ভালো লাগাটা খুব সোজা
যখন তখন যাকে তাকে
চোখের দেখায় প্রতিদিন;
ভালোবাসাটা একটু কঠিন
যখন তখন যাকে তাকে
মন'তো নয় ইচ্ছের অধীন;
ভুলে যাওয়াটা প্রায় অসম্ভব
মনের মানুষ'কে
মন যখন ভালোবাসায় বিলীন;

সময় লাগে নি তোকে ভালো লাগতে
কিছু সময় লেগেছিল ভালোবাসতে
ভুলে যাওয়া? সে না হয় থাকুক অভিধানে'তে;

তুই হয়তো একটু বেশীই ভালোবেসেছিলি
আমি না হয় তোর থেকে না হয় একটু অল্প
এই তো শাশ্বত প্রেমিক প্রেমিকার গতানুগতিক ভালোবাসার গল্প;

আজ তোকে একটু ভালোবাসতে ইচ্ছে হলো
ছুঁয়ে দেয়ার ইচ্ছেও মনে এলো বেশী কিংবা অল্প
তাই না হয় আঁকলামই একটুখানি তোর-আমার ভালোবাসার গল্প;

ভালো লাগা প্রেম নয়
প্রেম মানে ছুঁয়ে থাকা নয়
ভালোবাসার অনুভব অসীম;

আমি তো'তে ছিলেম, তো'তে আছি
থাকব তো'তে হয়ে লীন;
বেঁচে থাকার প্রতিদিন।





তোর জন্য ভালোবাসা



তোর জন্য ভালোবাসা
- যাযাবর জীবন

কেন ভালোবাসিস আমায়?
কেন আমাকেই ভালোবাসতে হয় তোকে?
বিমর্ষ লাল আকাশ দেখিসনি কখনো দিনের মৃত্যুর আগে?
আমার গায়েও রঙ লেগেছে
ছোপ ছোপ লালচে আভা জেগেছে;
অন্ধকার'কে ভালোবাসলে মনে রাত্রি নামে
আমার জীবন সন্ধ্যে হয়ে গেছে
ছোপ ছোপ লালচে আভা জেগেছে দেহে;

তুই চাঁদ হ
তুই জ্যোৎস্না হ
রাত্রি হোস না কখনো,
দিনের মৃত্যুতে রাতের জন্ম
আমায় ভালোবেসে তুই কেবলই রাত্রি;

তুই দিন হ
তুই সূর্য হ
অন্ধকার হোস না কখনো
আমায় ভালোবাসলেই মনে কষ্ট
তোর ভালোবাসার মৃত্যু হোক; নতুন সূর্যে।





বিলাস



বিলাস
- যাযাবর জীবন

মেঘ জমলেই বৃষ্টি জমে
আকাশ কিংবা মনে
মেঘ ঘন হলেই বৃষ্টি নামে
প্রকৃতি কিংবা চোখে

আমি বৃষ্টির কান্না দেখি
দুচোখ চেয়ে
আমার চোখে বৃষ্টি নামে নি কখনো
মন মরে যাওয়ার পরে

মেঘ জমলে মেঘবিলাস
বৃষ্টি নামলে বৃষ্টিবিলাস
চোখ নামলে কান্নাবিলাস
আমার শুধুই মনবিলাস
তোকে নিয়ে তো'তে
যাক না ধুয়ে পৃথিবী জলবিলাসে;
বৃষ্টির দিনে একটু স্বপ্নবিলাস করাই যায়
তোকে নিয়ে তো'তে।


বৃহস্পতিবার, ১২ মে, ২০১৬

ঢাকনি



ঢাকনি
- যাযাবর জীবন

সব অন্ধকার ঢেকে যায় রাত্রি হলে
সব আলো ঢেকে যায় সূর্য এলে
ভালোবাসা ঢাকা যায় কি দিয়ে?
মন যখন রাত্রি, অন্ধকারে ভয় কি?

আমি চাঁদের টর্চ জ্বেলে চাঁদনি খুঁজে বেড়াই
সূর্যের মধ্যাহ্নে,
তুই সূর্যের টর্চে খুঁজিস আমাকে
রাত্রির ঘুমঘোরে;

চাঁদ তো কবেই দিয়ে দিয়েছি তোকে
এবার তো সূর্য হ!
প্রেমের ঢাকনি খুলে।


বুধবার, ১১ মে, ২০১৬

মনের ডাকবাক্স



মনের ডাকবাক্স
- যাযাবর জীবন

অনেকগুলো কথা জমে আছে
মনের ডাকবাক্সে
চিঠি হওয়ার অপেক্ষায়;
অনেক দিন চিঠি লেখা হয় নি তোকে
পরুক না যত ধুলো মনের আয়নায়
মরচে পরে কি কখনো ভালোবাসায়?

অনেক দিন না দেখতে দেখতে কিছু ধুলো হয়তো জমেছে স্মৃতিতে
তাতে কি হয়েছে?
সূর্য উঠলেই কুয়াশা সরে যায়
চাঁদ উঠলেই চাঁদনি
ধুলো সরে তুই
কাছে রই আর দূরে রই
স্বপ্ন হয়ে তোর চোখেতে রই
কান্না হয়ে তোর মনেতে রই
তোর চোখে রাত নামলেই আমি গুটিসুটি তোর বুকে শুই
আমি অনুভবে খুব ভালো জানি
আমি তোর আত্মায় জড়িয়ে রই।

কে বলে চোখের আড়াল মনের আড়াল হয়?
তবে তোকে মনে পড়লেই কেন বুকে কষ্ট কথা কয়?
তোকে চিঠি লিখতে ইচ্ছে হয়
ভালোবাসার বলা আর না বলা সব কথাগুলো বুকেতে গুমরে রয়
মনের ডাকবাক্স উপচে পড়ে
তো'তে আর তো'তেই
তোর কথা মনে হতেই।

আজ মাত্র চাঁদের পঞ্চমী দিন
আকাশে চাঁদনি দেখব আরো দশ দিন পরে
মনের আকাশে চাঁদনি প্রতিদিন।

কত কথা যে জমে আছে
মনের ডাকবাক্সে
চিঠি হওয়ার অপেক্ষায়;
ভালোবেসে তোকে।



মঙ্গলবার, ১০ মে, ২০১৬

মাটির সাথে দূরত্ব



মাটির সাথে দূরত্ব
- যাযাবর জীবন

সময়ে দূরত্ব বাড়ে সময়ে কমে
হাঁড়িকুঁড়ি ঠোকাঠুকি থাকে সম্পর্কে
চাঁদের সাথে পৃথিবীর দূরত্ব মাপা হয়ে গেছে
চাঁদনির সাথে আমার দূরত্ব অজানাই আছে
মেজাজের ওঠানামা সূর্যের পারদে
ঝরে পড়ছে সময় বালিঘড়ি থেকে
দূরত্ব কমছে মাটির সাথে আমার
দিনে দিনে পায়ে পায়ে;
আজকাল রোদে বের হলেই গায়ে ফোস্কা পরে
মাটির গরম সইব কিভাবে?


সোমবার, ৯ মে, ২০১৬

মাংসের হাটবাজার



মাংসের হাটবাজার
- যাযাবর জীবন

মানুষ না কি গড়া রক্ত মাংসে,
মানুষ বলে;

দেহ খুলে খুলে মাংস বাটে কে?
রাতের অন্ধকারে;
নারী না মানুষে?

নারী মাংস খুবলে খায় কে?
রাত নেমে আসলে;
পুরুষ না মানুষে?

কেও কামাগ্নি জ্বালায়
কেও কামে জ্বলে
নারী ও পুরুষে, অন্ধ রাতের অলিগলিতে;

মাংসের কেনাবেচা
মাংসের হাটে
নারী ও পুরুষে, মিলেমিশে একসাথে;

কেও পেটের ক্ষুধা মেটায়
কেও কামের
নারী ও পুরুষে, একে অপরের উপর চড়ে;

মাংসের হাটে কিছু কুকুর হেঁটে বেড়ায়
পেটের ক্ষুধায়
মানুষের মাংস ক্ষুধা দেখে তারা হাসে;

ক্যানিবলিজম কি যুগের দোষ না মানুষের? কে জানে?
মানুষ না কি গড়া রক্ত মাংসে?
মানুষ জানে।




আগে ও এখন



আগে ও এখন
- যাযাবর জীবন

কোন এক সময় মোহাচ্ছন্ন ছিলাম সুন্দরী রমণীতে
এখন সাজুগুজু সেলফির বাহার দেখতে দেখতে ক্লান্ত দু-চোখ
চোখের বড্ড সাধ জাগে গোসলের পর তাঁদের চেহারা দেখবার, একবার;

এক সময় স্বপ্নে দেখতাম পরী নেমে এসেছে ঘরের বৌ হয়ে
এখন পরীদের হাট বসে ভার্চুয়াল জুড়ে, হরেদরে
আজকাল পরী বড্ড পানসে লাগে;

কখনো হয়তো ভালোবাসতাম কাওকে, মন দিয়ে
এখন নিত্যই ভালোবাসার কেনাবেচা দেখি
ভার্চুয়ালের মাঠে;

আগে ভাবতাম, আহা! কি সুন্দরী সব নারী পথেঘাটে
চোখ চেয়ে থাকতো চলমান সুন্দরীর পানে
জীবন বুঝিয়েছে, নারী সুন্দর হয় মনে;

পরী'রা গল্পেই ভালো
দাদী নানীর মুখে
ওলোটপালট জীবন, বাস্তবে পরী ঘরে এলে;

আগে স্বপ্ন দেখতাম জীবন নিয়ে
এখন স্বপ্নের বিকিকিনি দেখি
স্বার্থের হাটে।

রবিবার, ৮ মে, ২০১৬

ইচ্ছে হলেই ছোঁড়াছুড়ি



ইচ্ছে হলেই ছোঁড়াছুড়ি
- যাযাবর জীবন

ছুঁড়ে দেয়া
লুফে নেয়া
খুব সহজ
হেলাফেলা,
ইচ্ছে হলেই ইচ্ছেগুলো
ইচ্ছেমতন
খেলা খেলা যখন তখন
যখন তখন
ধরে রাখা, বড্ড কঠিন
সম্পর্ক?
সে তো আরো এক কাঠি বাড়া
আপন হয় না কখনোই
মনের টান ছাড়া;

সম্পর্ক প্রেম নয়
তিলে তিলে গড়ে নিতে হয়
ভালোবাসা ছেলেখেলা নয়
ইচ্ছেমত ছুঁড়ে দেয়া
আর ইচ্ছে হলেই লুফে নেয়া
সম্পর্কে সংশয়;

চলে যাওয়া মানে প্রস্থান
ফিরে আসা নয়,
বোধে বোধগম্য হয়
কথায় হৃদয়ঙ্গম নয়।

শনিবার, ৭ মে, ২০১৬

বৃক্ষ



বৃক্ষ
- যাযাবর জীবন


মানুষের অনুভূতি থাকে
মানুষই লজ্জায় লাল হয়
ব্যথায় বেগুনী হয়
নীল হয় বিষে
আকাশ হয় ভালোবাসায়
পাখি হয়ে ভাসে;
আমি গাছ হয়ে বেঁচে আছি
মানুষের দেশে।

গাছের গায়ে কাকের বাসা
কাকের বাসায় কোকিল ডিম
বাচ্চা ভাবে কোকিল মা
কাকের ছানার হাট টি মা টিম,
সময় গেলে উভয় বুঝে
কাক-ঠোকরে বাচ্চার হুস
উড়ে যায় কোকিল ডানায়
কাকের কোনো হয় না দোষ।

গাছ বোঝে গাছ হয়ে
লোভ স্বার্থ দুনিয়াদারী
গাছ দেখে গাছ চোখে
ময়ূরপুচ্ছ রঙ বাহারি;

আমি গাছ ছিলাম,
গাছ আছি;
মাঝে মাঝে গাছের ঝুড়ি নামে, পা গজায়
দু পায়ের ভরে দাঁড়াতে চায়
হাঁটতে গিয়ে হোঁচট খায়
তারপর নিষ্ফল চেষ্টার পর আবার গাছ হয়ে যায়;
মানুষের মন থাকে, অনুভূতি থাকে, গাছের নয়
মানুষের মন ভালো বা খারাপ হয়
আমার কিছু হবার নয়।

গাছ তোমার নাম কি?
আমার গায়ে ফল ধরে না,
কি দেব পরিচয়?
গাছ চেনে গাছে
মানুষ নয়।







গোমূর্খ



গোমূর্খ
- যাযাবর জীবন

ভালোবাসার না কি নির্দিষ্ট একটা ভাষা থাকে
কাওকে বেত দিয়ে পড়িয়েও শেখানো যায় না
বোধোদয়ের আগেই নিজে নিজে শিখে যায় ইঁচড়ে পাকা'রা;

আমি কেবল মাত্র স্বার্থের ভাষা জানি
অসময়ে ছিপ ফেলি বড়শি বাই
সুসময়ে গান গাই, টাকার ঝনঝন শুনি,
সম্পর্কের আমি কি জানি?
ট্যাঁকে স্বার্থ গুঁজে গুঁজে পশু থেকে মানুষ হয়েছি;
এখন কাব্য বুনি;

আরে গোমূর্খরাই নাকি কবিতা আঁকে,
সুশীল সমাজ গাধা ডাকে।




কাব্যভ্রম


কাব্যভ্রম
- যাযাবর জীবন

আজকাল কি দেখতে যে কি দেখি কে জানে?
নিমিষে পালটায় দৃশ্যপট দেখার আগে
চোখেরও হয়েছে যেন দৃষ্টিভ্রম
শুধু ওলোটপালট দেখে
না হলে তোর চোখে'র সরল ভালোবাসা
কেন দেখি নি আগে?

আজকাল কি বুঝতে যে কি বুঝি, কে জানে?
নিমিষে পালটায় দৃশ্যপট বোঝার আগে
মনেরও মনে হয় ধরেছে ভীমরতিতে
না হলে মন কেন সব উল্টো বোঝে?
তোর সহজ সরল ভালোবাসা
তাই হয়তো বুঝতে পারি নি আগে।

আসলে সব দোষ পোড়া কলমটার
দৃষ্টিভ্রমে কাব্যভ্রম এঁকে গেছে
কবিতায় মতিভ্রম লিখতে গিয়ে,
তারপর ভালোবাসাটাই ভেঙ্গে দিয়েছে
এলোমেলো লেখার ঘায়ে;

এখন আর প্রেম নেই কোথাও,
আমার ভুল করে
তোর ভুল ভেবে;
মাঝখানে অনেকগুলো কবিতা,
কান্নার।



শুক্রবার, ৬ মে, ২০১৬

খোঁজ



খোঁজ

- যাযাবর জীবন

আমার মনে আর মনেতে সংঘর্ষ
পাহাড়ি ফাটল সম্পর্কে;
তুই সোনামুখী সুঁই'য়ে বরফ সেলাই করে যাস ক্রমাগত:
মন লবণাক্ত
হাত রক্তাক্ত
তোর, আমার দুজনেরই;

সেলাইয়ে নকশী কাঁথা বোনা হয়
মন নয়,
মনে কান্না বোনা হয়
সম্পর্ক নয়,
সম্পর্কে ভালোবাসা রয়
ফাটল নয়;

কখনো একটি চুমুই মিটিয়ে দিতে পারে এক আকাশ দূরত্ব,
আমি আঠা খুঁজছি, মন জুড়তে।






















বৃহস্পতিবার, ৫ মে, ২০১৬

অরণ্যে রোদন



অরণ্যে রোদন
- যাযাবর জীবন

তুইও ভালোবাসিস, আমিও ভালোবেসে যাই
নেই কোন চাওয়া পাওয়া, তবুও কষ্ট পাই
যখন তখন মনে মন, দিন রাত্রির সর্বক্ষণ
ভালোবাসাতে গিয়েই দুঃখ, হারানোর সব বেদন;
কেন ভালোবাসতে চাই?
কেন ভালোবাসতে যাই?
তারপর অরণ্যে রোদন।



অস্বচ্ছ ভালোবাসা



অস্বচ্ছ ভালোবাসা
- যাযাবর জীবন

ঘষা কাঁচের মতই অস্বচ্ছতা তোর ভালোবাসায়
অস্বচ্ছ ভালোবাসার ধরণ
মন থাকলে হতেই পারে হতে যখন তখন
মন খারাপের কারণ,
মন কাঁদলেই প্রেম হয় না
চোখ কাঁদলে দৃষ্টি ঝাপসা
অস্বচ্ছতা ভালোবাসায়, ঝাপসা যখন দৃষ্টিভঙ্গি
মনের সাথে অনুভূতি, লেপ্টে থাকে অঙ্গাঙ্গী;

যখন তখন প্রেমের কথা বলিস না
মন যখন ঝাপসা
অশ্রু কিংবা দহনে
কারণ আর অকারণে;

অস্বচ্ছ ভালোবাসা হৃদয়ে দাগ কাটে না।


বুধবার, ৪ মে, ২০১৬

জোয়ার ভাটা



জোয়ার ভাটা
- যাযাবর জীবন

কে জানি খুঁজছে আমায়, দূরে কোথাও বসে
আমি জানি, খুব ভালো করেই জানি;
ওখানে ভালোবাসার টান উঠলেই
এখানে ভাটার টান সাগর জলে
ওখানে কান্না দমকে উঠলেই
এখানটা ভেসে যায় জোয়ারে;

আমি সব বুঝেও বালি হয়ে পড়ে আছি বালিয়াড়ি দেশে
কখনো ডুবে কখনো ভেসে
জোয়ার ভাটা হতেই থাকবে পৃথিবী যতদিন আছে
মনে ও সাগরে;
বালির কি এসে যায়? জোয়ার কিংবা ভাটাতে।




মন বন্ধ



মন বন্ধ
- যাযাবর জীবন

তুই মন গলির কার্নিশ ঘেঁসে আলতো পায়ে হেঁটে যাস
রাত জেগে উঠে মাদক গন্ধে
আমার মন বন্ধ, মন বন্ধ;
আমি ঘুমঘোরে ঠোঁট চাটি বিষ স্বাদে
দূর থেকে নাকে ভেসে আসে ধুতুরা গন্ধ
ভালোবাসার চিত্রপট আঁকা হয় অপস্রিয়মাণ ছায়াতে।


মঙ্গলবার, ৩ মে, ২০১৬

নিয়ন্ত্রণ



নিয়ন্ত্রণ
- যাযাবর জীবন

চোখ থাকলেই দেখতে হয় না
তাকাতে হয় না হ্যাংলার মত
না হয় কিছু উদলা হয়েই থাকে শরীর
গরমে কিংবা ফ্যাশনে;
আরে চোখেরও তো লজ্জা আছে
কেন তাকাবে চোখ, খোলা শরীর পানে?

মন থাকলেই মজতে হয় না
প্রেমের হাতছানি ইতিউতি হেথা
না হয় গরমটা পড়েছে খুব বেশী
ঘেমে নেয়ে একাকার, মনে ও কামে;
মনের রাশ টেনে ধরতে হয় শক্ত হাতে
কেন মজবে মন, যত্রতত্র প্রেমের টানে?




সোমবার, ২ মে, ২০১৬

সম্পর্কের সীমারেখা




সম্পর্কের সীমারেখা
- যাযাবর জীবন

কোথায় টানতে হয় সম্পর্কের সীমারেখা?
কে বোঝাবে কারে?
মন যখন পোড়ে,
কে সীমারেখার ধার ধারে?
তবুও কোথাও না কোথাও সীমারেখা একটা টানতেই হয় সম্পর্কের ঘরে,
জীবনের প্রয়োজনে
সময়ের সাথে, সম্পর্কের সাথে
সময়কে ঘিরে;
তা না হলে ওলোটপালট তুই, আমি, আমরা সকলে
আমাদের কথাবার্তা, ব্যবহার, আচরণ আর জীবন যাপনে।

রক্তের সম্পর্ক একই সাথে, আপন ও স্বার্থের
বন্ধুত্বের সম্পর্ক ততক্ষণ পর্যন্ত নির্মল যখন স্বার্থের মেঘ ওড়ায় না বাতাস
প্রেম ভালোবাসার সম্পর্কগুলো বড্ড জটিল, কেও কাওকে বোঝে না;
কাঁটাতারে বেড়ায় সম্পর্কের সীমারেখা টানা বড্ড দুষ্কর
তবুও বেড়া দিতে হয় মনে, প্রতিটি সম্পর্কের ক্ষেত্রেই
স্বার্থ যেখানেই কড়া নাড়ে;
হয়ত আপাতত: মন পুড়বে প্রতিনিয়ত:
তবুও জীবন হবে সহজ
বেঁচে থাকার জন্য।

কাঁটাতারের বেড়া দিচ্ছি আমি মনের ঘরে
কান্নার পেরেক ঠুকে,
আপাতত: রক্ত বের হোক কিছুটা কিংবা অনেকটা
পরে না হয় কাব্যবিলাস করে নেব, রক্তবিলাসে;

চোখটা এত পোড়ায় কেন?
এখনই।





রবিবার, ১ মে, ২০১৬

ছুটির দিনে খুনসুটি




ছুটির দিনে খুনসুটি
- যাযাবর জীবন

ছুটির দিনে তুই বাসায়
সকালটাই অন্যরকম
তুই যখন পাশে শুয়ে
আজ দিনটা অন্যরকম,
ঘুম ভাংতেই পাশে তুই
চোখ জড়িয়ে আলসে ঘুমে
মন দুষ্ট সকাল বেলাই
এখান ওখান মিষ্টি চুমে;

সারাটা দিন ছুটি ছুটি
ঠোঁটের সাথে খুনসুটি
চুমুর সাথে নাস্তা
দুজন মিলে টুকিটাকি,
রান্না ঘর আজ ওলোটপালট
দুজন মিলে কাটাকাটি
পানি গরম আমার অকাজ
তুই তো রন্ধন পটীয়সী;

দুপুর বেলায় ভুঁড়িভোজে
থালা বাসনের কষ্ট
চল এবার বিছানায় যাই
কাম আহ্বান পষ্ট,
আলসে বিকেল কাম ঘুমেতে
চোখ বুজতেই অন্ধ
সন্ধ্যে হতেই চল রিক্সায়
ঘর দিলেম বন্ধ;

রাত্রি বেলায় আলোর মেলায়
খাওয়ার দোকান সারি সারি
পথে বসে চটপটি
চাপ, ফুসকা মজা ভারী,
খাবার শেষে অবশেষে
বাড়ি ফেরার সাড়া
ইচ্ছে করেই হেঁটে ফিরি
দেখনা সময় তাড়া;

দুজন দুজন হাতে হাতে
হাত মিলিয়ে হাঁটি
চোখে চোখে কথা বলি
অনুভবে থাকি,
মাসের মাঝে একটি দুটি
আসতে যে হয় পুরো ছুটি
সারাটা দিন দুজনেতে
মিলে মিশে খুনসুটি।