একদিন কোন এক মনখারাপের নীলচে বিকেলে বসে ছিলাম গভীর বনে
বনের ভেতর একটা ছোট্ট পুকুর ছিল
জংগলে দৌড়ে সন্ধ্যা নামে
বিকেল হতে না হতেই চারিদিক কেমন যেন অন্ধকার অন্ধকার হয়ে এসেছিলো
আমি গভীর জংগলে পুকুর পাড়ে একা
হাতে ক্যামেরা তবুও কিছু ক্লিক করতে ইচ্ছে করছিলো না;
হঠাৎ করেই দেখলাম একজোড়া প্রজাপতি
ওরা ঘুরে বেড়াচ্ছিল মনের খুশিতে ইতিউতি
পরস্পরের সাথে ওড়া-উড়ি খেলায় ব্যস্ত
একটা শুকনো গাছের ডালে নজর যেতেই দেখলাম ফড়িঙ দম্পতি
অন্ধকার হয়ে আসার আগেই যেন পরস্পর'কে খুলে খুলে দেখায় মত্ত
ভবিষ্যৎ প্রজন্মের কথা চিন্তা করেই হয়তো শারীরিক প্রেম
ভবিষ্যৎ প্রজন্ম কে না চায়?
আমি লজ্জায় অন্যদিকে তাকালেও আমার ক্যামেরার চোখ ফিরছিল না
নির্লজ্জ ক্যামেরার ক্লিক শব্দ যেন নিস্তব্ধ বনে বোম ফাটাল
প্রেমরত্ত ফড়িং-দ্বয় কি চমকে উঠেছিলো?
কি জানি! ওরা কথা বলে না, তাই উত্তর জানা হল না
তবে মনে হল শব্দে তাদের প্রেমের কোন ব্যাঘাত ঘটলো না
একটু পরই দেখলাম রমণ শেষে দুজন দু'ডালে;
হঠাৎ করেই দেখলাম পুকুরে আরেক পাড়ে কি যেন সবুজ সবুজ দেখা যায়
ভালো করে তাকিয়ে দেখি পানিতে একটা সবুজ ভেলভেটের ছায়া
প্রায় অন্ধকার হয়ে আসা পুকুরের ওপাড়ে কি আছে ভালো করে দেখতেই চমক
ও কি! সত্যিই তো একজোড়া সবুজ ভেলভেট
লোকে আদর করে ডাকে 'সবুজ তাউড়া'
ওদের দেখেই খুশিতে আমার ক্যামেরা ক্লিক ক্লিক শুরু করে দিলো
মুহূর্তেই কোথায় যেন উড়ে গেলো মনখারাপের সন্ধ্যা
সবুজ আনন্দে চারিদিক কেমন যেন ঝলমল করে উঠলো
নীলচে বিকেল পরিণত হল সবুজ সন্ধ্যায়
বেশ কিচ্ছুক্ষণ সন্ধ্যার জলকেলি শেষে ফুড়ুৎ করে উড়ে গেলো ভেলভেট দম্পতি
ঘরে ফেরার সময় তাদের
পাখিদেরও ঘর আছে;
সন্ধ্যে গাঢ় রঙ ধরতেই আমি হাঁটা ধরলাম ফিরতি পথে
জংগলের ভেতর দিয়ে বেশ অনেকটা পথ হেঁটে যেতে হবে
পশু-পাখি মানুষ সবাই ঘরে ফেরে সন্ধ্যে নামলেই
আমিও ফিরছি, এলোমেলো জংগলের পথ ধরে;
ঘরের কথা মনে হলেই মন অন্যরকম, সংসার বড্ড মায়ার
যতই বাইরে কাটাই না কেন সন্ধ্যে হলেই ঘরের জন্য মন কেমন করে
বুকের খাঁচায় কোথায় যেন এক অদৃশ্য মায়ার টান পরিবার পরিজনের জন্য
আমি এ টান অস্বীকার করতে পারি না
আমার কাছে ঘর মানেই স্ত্রী পুত্র-কন্যা পরিবার, আমার কাছে ঘর মানেই সংসার
সবাই ঘরে ফেরে, আমি ফিরি সংসারে।
#এলোমেলো
সবুজ আনন্দ
- মোঃ আহসানুল হক
২৬ মার্চ, ২০২৪
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন