মঙ্গলবার, ২৬ ডিসেম্বর, ২০১৭

অবোধ্য যতিচিহ্ন



অবোধ্য যতিচিহ্ন
- যাযাবর জীবন


আমাদের দেখা হয়েছে অনেকবার
চোখে চোখ রেখে
সামনা সামনি চায়ের কাপে,

আমাদের কথা হয়েছে বহুবার
হাতে হাত স্পর্শে
ঠোঁটে ঠোঁটে ভালোবেসে,

তারপর যতিচিহ্ন
সময়ের, দূরত্বের, অনুভবের;

কেন?
আজো জবাব খুঁজছি;
ভালোবাসায় যতিচিহ্ন পড়েছ কি?

আদতে তুই বুঝিস নি আমার মন?
হয়তো তাই আজ আমরা বিচ্ছিন্ন দুজন;

আমি আজো মেঘ দেখলেই বলি ভালোবাসি
তোর নিস্তব্ধতায় বৃষ্টি কেঁদে ফেরে
আমি আজো জ্যোৎস্না দেখলেই বলি ভালোবাসি
তোর অপেক্ষায় জ্যোৎস্না লুকিয়ে যায় ভোরে

আমি সারারাত তোকে খুঁজি আকাশে তারা জ্বেলে রাশি রাশি
আর নির্ঘুম স্বপ্নে চিৎকার করে বলি 'ভালোবাসি, ভালোবাসি'
তোর নীরবতা হো হো ব্যঙ্গ করে;

তোর গভীরে একটা দীর্ঘ ডুব,
একটিবার মন চায় খুব
মন চায় খুব।




মলিন তুই



মলিন তুই
- যাযাবর জীবন


অনেক দিন পর আজ হঠাৎ তোকে দেখে বড্ড চমকে উঠলাম
উঠবই বা না কেন?
মলিন চাঁদ বা সূর্য কার না মন খারাপ করে দেয়?

প্রতিদিন তো আর গ্রহণ হয় না সূর্যে কিংবা চাঁদে;

কুয়াশায় ঢাকা সূর্য মন খারাপ নিয়ে আসে
আর বিকেলের ঢলে পড়া আলোতে মন কেমন করে
তুই সকালের সূর্য, তোর মুখ মলিন কেন?

জ্যোৎস্না রাতে যেদিন ঘন কুয়াশা হয়
সেদিন বড্ড মন খারাপ করা ম্যাড়ম্যাড়ে চাঁদ
তুই আষাঢ়ই পূর্ণিমার ঝকঝকে চাঁদ, তোতে গ্রহণ কেন?

আজ অনেক দিন পর বড্ড চমকে দিয়েছিস তুই,
তোর চোখ এত শূন্য কেন?
ওখানে প্রাণ নেই,
কি কুড়ে খাচ্ছে তোকে?

বড্ড জানতে ইচ্ছে করে।


স্বপ্ন সকাল



স্বপ্ন সকাল
- যাযাবর জীবন


ক’টা বাজলো? সকাল হলো?

কাল রাতে ঘুম ছিল না, ছিলি তুই
ছিল তোকে জড়ানো অনুভব
বড্ড অন্যরকম স্বপ্ন স্বপ্ন রাত ছিল;

আকাশে চাঁদ ছিল না, ছিল কুয়াশা
জ্যোৎস্না ছিল না, ছিলি তুই
আর স্বপ্ন স্বপ্ন কোমল আলো;

রাতটা বড্ড বেশী ঠাণ্ডা ছিল
লেপ ছিল না, ছিলি তুই
আর ছিল তোর বুকের ওম ওম অনুভব;

সকাল হলো?
ইশশ! কেন যে ঘুম ভাঙল?

দিনের বেলায় আসতে পারিস না তুই?
সূর্য সামনে রেখে।





সোমবার, ২৫ ডিসেম্বর, ২০১৭

ভালোবাসার নির্ঘুম রাত


ভালোবাসার নির্ঘুম রাত
- যাযাবর জীবন


প্রতিদিন স্বপ্নে আসে সে
হাসে, খেলে, ভালোবাসে
তারপর হারিয়ে যায় আমায় রাত করে;

যে আমারে রাত করে
তার আকাশে চাঁদ ওঠে
জোনাক ওড়ে
জ্যোৎস্না ঘুরে তাকে ঘিরে
আর তার গায়ের বকুল গন্ধ
আমায় পাগল করে সারা রাত ধরে,

এত এত যে ভালোবাসি কিছুই বোঝে না সে;

সে চাঁদ ভালোবাসে, জ্যোৎস্না ভালোবাসে
হাসে, খেলে, আলো হয়ে আলো করে
আর প্রতিদিন খুব রাতে আমার স্বপ্নে আসে
ভাসাতে আমায় অন্ধকারে;

রাতটা শুধুই আমারই
ভালোবাসার নির্ঘুমে।



কৃপণতা ঠোঁটের



কৃপণতা ঠোঁটের
- যাযাবর জীবন


তুই কোথায়?
অপেক্ষায় চায়ের কাপ
শীতে ফেটে গেছে ঠোঁট
আয় ভিজিয়ে দিয়ে যা
চুমুতে;

আমি ভালোই থাকি গ্রীষ্ম বর্ষা হেমন্তে,
শরতে আমি আকাশের
শীতে ঠোঁটের
আর পুরো বসন্ত জুড়ে তোর;

সময় বড্ড কৃপণ
কৃপণ তুই
কৃপণ তোর ঠোঁট
ভেজাতে, চুমুতে।



রবিবার, ২৪ ডিসেম্বর, ২০১৭

নষ্ট আঁক



নষ্ট আঁক
- যাযাবর জীবন


রাত বাড়ে অন্ধকারে
টিক টিক টিক টিক গান শোনাচ্ছে ঘড়িটা
চাঁদের সাথে কতই না গল্প কথা রাতের
নির্ঘুম স্বপ্নে পরী বসে চোখে
আমি রাতভর খসে পড়া তারা খুঁজি
মাঝে মাঝে বড্ড খড়খড়ে লাগে চোখ
বালিশ জেগে থাকে একলা বিছানায়
কবিতার আঁচড় টেনে যায় কলম;

এই যাহ্‌! খাতাটা নষ্ট হলো হিবিজিবি আঁকে।


কামড়াকামড়ি জীবন



কামড়াকামড়ি জীবন
- যাযাবর জীবন


কত কত অর্থ
টাকার মাপে স্বার্থ,
শাশ্বত পেটের ক্ষুধার একটাই ধরণ
মাত্রাতিরিক্ত মনের ক্ষুধায় সম্পর্কের ভাঙন
চাওয়া আর পাওয়ার মাঝে ফারাক বিশাল
স্বার্থ এক এক জনের এক এক রকম;

সম্পর্ক ভাঙে স্বার্থ
সম্পর্ক ভাঙে অর্থ
মানুষ'কে পীড়া দেয় ভাঙন
আর নয়তো কুকুর বিড়ালের কামড়াকামড়ি জীবন।

ফাঁকা রাত



ফাঁকা রাত
- যাযাবর জীবন


আকাশে চাঁদের উঁকি
মনে তোর
চাঁদনিতে ভিজছে কুয়াশা
ভিজছি আমি

কেও চাঁদ খোঁজে কেও চাঁদনি
কেও দুনিয়াদারী কেও বা টাকা
চাঁদনি ছাড়া আমি অন্ধকার
রাতগুলো বড্ড লাগে ফাঁকা।


সরিষা জীবন



সরিষা জীবন
- যাযাবর জীবন


আজকাল কোথাও যেতে ইচ্ছে করে না
তবুও সরিষা পায়ে জীবন
মাথায় শুন্যতা বোধ
চোখে স্বপ্ন আঁকে মন

টিনের চালে টুপটাপ কুয়াশা ঝরে পরছে
স্বপ্নে টুপটাপ তুই
জাঁকিয়ে শীত পড়েছে জুবুথুবু
আয় লেপমুড়ি গুটিসুটি শুই

রোদ ঘুম ভাঙাচ্ছে স্বপ্নের
তুই আমার
হাত বাড়াতেই মনের মন খারাপ
কুয়াশায় ছেয়ে আছে চারিধার

একদিন ঠিক হারিয়ে যাব ঘন কুয়াশায়
একদিন ঠিক মিলিয়ে যাব বাতাসে উবে
একদিন ঠিক মরে যাব তোকে ভালোবেসে
সেদিন খুঁজিস না আমায় মনে ভালোবাসা ভেবে।




সবুজ সবুজ গ্রাম



সবুজ সবুজ গ্রাম
- যাযাবর জীবন


এই মেঠোপথ এই গ্রাম
লতাপাতা ঘাসফুল, সবুজ সবুজ ক্ষেত ভরা ধান
বাড়ির পাশে পাশে জলাধার, ঘাসপুকুর তার নাম;
গাছের ফাঁকেফাঁকে নরম রোদ
আর সোঁদা সোঁদা খড় বিচালির ঘ্রাণ;

আমরা কত না দুর্ভাগা আমাদের বাস করতে হয় শহরে, ছিঁড়ে নাড়িরটান
আমরা কতই না সৌভাগ্যবান আমাদের আছে অবারিত সবুজ সবুজ গ্রাম।





ভালোবাসার লাজ



ভালোবাসার লাজ
- যাযাবর জীবন


শীতের দিনে বড্ড মন কেমন কেমন
অনেকটা ঢলে পড়া বিকেলের রোদের মতই বিষণ্ণ,
সন্ধ্যে হতে না হতেই আজকাল অন্ধকার আঁকড়ে ধরে
কুয়াশার চাদর গায়ে,
আমি ঘরে ফেরা পাখির ডানায় উড়তে থাকি উদলা মনে
একবার তোকে দেখব বলে;

তোর বুঝি আজ বড্ড মন খারাপ?
নয়তো সন্ধ্যের মুখ এত কালো কেন?

দেখ! দেখ!
অমাবস্যার পর আজ আকাশে উঁকি দিয়েছে লাজভাঙা চাঁদ
একা একা বড্ড মন কেমন করা বিষণ্ণ রাত,
আয় না! একবার ভালোবাসি দুজনে
তারপর না হয় আবার অন্ধকার হব, মন বন্ধ করে।

ষড়ঋতু মন



ষড়ঋতু মন
- যাযাবর জীবন


নারীর কত রকম মন
মন চিনেছে কে?
মনের কত রংধনু রঙ
রং দেখেছে কে?

রঙ দেখেছ?
এই সাদা তো এই রঙিন
কখনো রাত তো অমাবস্যায় দিন
কখনো রোদ কখনো বৃষ্টি
ক্ষণে হাসি ক্ষণে কান্না
মুহূর্তে মেঘ মুহূর্তে জ্যোৎস্না

পলক ফেলার আগেই মন
পরিবর্তন যখন তখন
রাতে সূর্য তো দিনে অমাবস্যা
বসন্তে শরত তো শীতে বর্যা
দিন আর রাত তো হরহামেশা
ষড়ঋতু যখন তখন

নারী চিনেছে কে?


দূর থেকে তুই



দূর থেকে তুই
- যাযাবর জীবন


দূরত্ব সময়ের
অনুভূতি মনের
তুই দূর থেকেই ছুঁয়ে যাস মন
আমি দূর থেকেই ভালোবেসে যাই তোকে
দিন মাস বছর যুগ কেটে যায়
তবুও দেখা হয় না আমাদের পরস্পরের সাথে;
এখন মনে ছেয়ে থাকে 'তুই' ভাইরাসে
প্রতিষেধক হয়ে আসিস তুই মাঝে মাঝে স্বপ্নে,
আর অপেক্ষার প্রহর শব হতে থাকে
প্রতীক্ষায় ধুঁকে ধুঁকে;

এখন আর মন স্পর্শ করতে শরীর লাগে না
মন মানেই তো তুই;
মাখামাখি হয়ে থাকিস সারাক্ষণ মনে মনে
মন-স্পর্শে।




শনিবার, ১৬ ডিসেম্বর, ২০১৭

পাথরের আবেগ



পাথরের আবেগ
- যাযাবর জীবন


অনুভূতিগুলো এক এক জনের এক এক রকম
কারো সাদাকালো কারো রঙিন
সুখ-দুঃখ, হাসি-কান্না, রাগ-অনুরাগ
প্রেম-ভালোবাসা, মান-অভিমান
কত রকম
কত রঙের আবেগই না মানুষের মাঝে খেলা করে

আমার অনুভূতির কোন রঙ নেই, গন্ধ নেই, প্রকার নেই, প্রকাশ নেই;
পাথরের আবার আবেগ কি?
মানুষ হওয়ার যন্ত্রণা সব তোমাদেরই।


সম্পর্কের ফানুস



সম্পর্কের ফানুস
- যাযাবর জীবন


ইট পাথরের নগরীতে বড্ড রুক্ষতা, সম্পর্কগুলো ফাঁকা
মানুষে মানুষে সম্পর্ক সব স্বার্থ দিয়ে ঢাকা
নগর সভ্যতা এগিয়ে গেছে সভ্য হয়েছে মানুষ
প্রেম ভালোবাসা স্বার্থে ওড়ে পালা পর্বণের রঙিন ফানুস।


নদীর ডাক



নদীর ডাক
- যাযাবর জীবন


পাহাড় ঘুমায় বরফ লেপে
কুয়াশার চাদর ঘিরে রেখেছে চারিধার
সূর্যের ঘুম ভাঙবে ভাঙবে করছে
আড়মোড়া ভাংছে আকাশ
আমার ঘুম ভাঙিয়ে দিয়েছে চাঁদ
ঘুমুতে যাবার আগে;

অনেক ভালোবাসাবাসি হয়েছে পাহাড়ে
বরফ গলেছে কি?
না হলে ঝর্ণা হলো কিভাবে?
ঐ তো ঝর্ণা বয়ে যাচ্ছে নদীতে;

নদী ডাকছে,
চল মন এবার নদীতে
ভালোবাসায় ভেসে যেতে কিংবা ডুবে।



ব্যাকরণ ভালোবাসা



ব্যাকরণ ভালোবাসা
- যাযাবর জীবন


পাথর বুকে পাহাড়
অন্ধকার বুকে রাত
বিশ্বাসে আঁধার
ভালোবাসা বুকে তুই
আমি তো কবেই শুন্য হয়ে গেছি
হাতুড়ি বাটাল ভালোবাসায়,
শূন্যকে কি আর ভাঙা যায়?

একটা গোটা আকাশ জুড়ে নীল
বন ছেয়ে থাকে সবুজে
রাত্রির চোখ কালো
তোর গা ভর্তি রংধনু আলো,
আমি তো কবেই বর্ণহীন হয়ে গেছি
ব্যাকরণ ভালোবাসায়,
চোখের জলে কি আর রং খুঁজে পাওয়া যায়?



পতন



পতন
- যাযাবর জীবন


পাহাড়ের কাছে যাই পাহাড় ভালোবেসে
পাহাড় পাথর হয়ে থাকে
আমায় গড়িয়ে ফেলে দেয় নিচে,
নদীর কাছে যাই গল্প শোনাতে
নদী দৌড়ে পালায় কুলকুল নূপুরে
আমায় ভাটায় টেনে নেয় নিচে,
সাগরের কাছে যাই দুঃখ শোনাতে
সাগর লবণ মেখে থাকে
আমি লবণের নীচে;

ঠেলে ফেলে দেয় সবাই,
আমি পাহাড় থেকে ঝর্ণা বেয়ে সাগরে
নামতেই আছি গড়িয়ে নীচে;

ভয়ে দূরে থাকি মানুষ থেকে
পতন সামলাতে পারব না।




স্বপ্ন হারিয়ে ঘুম


স্বপ্ন হারিয়ে ঘুম
- যাযাবর জীবন


চারিদিক পাহাড়
সুনসান নিঃশব্দ সকাল,
বুকের গভীরে কান পেতে দেখ
মন ভাঙার শব্দ শুনতে পাচ্ছিস কি?

বরফ ছিল কাল রাতটা
তুই আসিস নি স্বপ্নে
জড়িয়ে ধরিস নি ওম দিয়ে

এখানে নদী নেই
শব্দ নেই পাড় ভাঙার
আছে পাহাড়ি ঝর্ণা
ঝিরিধারা কুলকুল বয়ে যায়,
বুকের গভীরে কান পেতে দেখ
মন ভাঙার শব্দ শুনতে পাচ্ছিস কি?

এখানে অবারিত আকাশ
নীল নীল আর নীলের সমাহার
জোড়ায় জোড়ায় পাখিরা উড়ে যায়
আমার ডানা নেই
কখনো কখনো তুই আসিস ওড়াতে আমায়
স্বপ্নডানায়,
কাল তুই আসিস নি স্বপ্নে, ওড়া হয় নি আমার;

আয় পাহাড়ে উড়ি আজ
নীল মেখে ডানায়
তারপর না হয় ঘুমিয়ে যাব আবার বরফ লেপে
তুই হারিয়ে গেলে স্বপ্ন থেকে।




দিন রাত্রির অভিমান



দিন রাত্রির অভিমান
- যাযাবর জীবন


সন্ধেবেলা সূর্যটা অভিমানে ডুবে যেতেই পাহাড়ের মনখারাপ
আকাশে পাহাড়ের ছায়া একটু একটু করে আঁধার হতে হতে রাত
সন্ধ্যে থেকে জ্যোৎস্না নৃত্য করতে করতে শেষরাতে চাঁদটাও ডুবে যায় অভিমানে
ঊষালগ্নের আলো চোখ চুমতেই মনখারাপে আমার ঘুম ভাঙে
তোর অভিমান তো হরহামেশাই
রাত্রি জেগে দিন ঘুমিয়ে;

সকালে সূর্য এসেছিলো
রাতে চন্দ্র
দুপুরে ভালোবাসা এসেছিলো
সন্ধ্যায় অভিমান
চিরস্থায়ী থাকে নি কেও
কেও থাকে না চিরস্থায়ী
রাতের অভিমান সূর্যে গলে যায়
যে রাতে এসেছিল সে সূর্য দেখে নি
দিনের অভিমান অন্ধকারে হারায়
যে দিনে এসেছিল সে চাঁদ দেখে নি
তোর অভিমান মনের ডানায়
দিন রাত্রে তোর কি এসে যায়?

সব অভিমান চাঁদ সূর্য আর তোর
আমি অনুভূতি শুন্য পাথর;
আমি সবার সাথেই রাত।







যুগ যুগের খোঁজ



যুগ যুগের খোঁজ
- যাযাবর জীবন


অনেক অনেক পাহাড় হাঁটা হয়ে গেছে
ভেসেছি ডুবেছি অনেক সমুদ্দুর
মানুষের ভীরে পথ হেঁটেছি, হেঁটেছি অনেক ব্যস্ত শহর
উলটেপালটে খুঁজেছি মন, কত কত যে মনের ভেতর;

অর্ধ জীবন ঘুমিয়ে কেটেছে, বাকি অর্ধেক খুঁজে খুঁজে
স্বপ্ন দেখার হয় নি সময় ভাবাবেগে কখনো চোখ বুজে
কঠিন জীবন পাথর পাহাড়, পাহাড়ে এলে বোধোদয়
জীবন কারো বাঙময় তো কারো কারো কাছে বিষময়;

কত কত পথ একা হেঁটেছি, রাত ঘুমিয়েছে দিনের ভেতর
পাই নি খুঁজে আজো পথের পথ, যুগ হেঁটে গেছে যুগের ভেতর।






পাহাড় দেশে পাথর



পাহাড় দেশে পাথর
- যাযাবর জীবন


তুই ডাকলেই আমি বয়ে যাই,
ভাসি
ও ডুবি তোতে,
তারপর আবার রাত্রি
জুড়ি নেই তোর কাঁদাতে;

পাহাড় কাঁদে
ঝর্ণা বয়
গড়িয়ে গড়িয়ে নদী হয়
নদী বয়ে সাগর;

অনেক লবণ জমে জমে তবেই না সাগর;
এবার ঠিক পাথর হব
পাহাড়ের দেশে।


পাহাড় ও নারী



পাহাড় ও নারী
- যাযাবর জীবন


শীতের সকাল তো কুয়াশা হবেই
বৃষ্টি হলেই মন কান্না
তুই গভীর ঘুমে
নির্লজ্জ ভোর স্বপ্ন ভাঙিয়েছে আমার চোখ চুমে;
পাহাড় ডাকছে, পাহাড়
ডাকছে এখন ভালোবেসে
তারপর সংগম শেষে পাথর হয়ে যাবে আবার
ঠিক তোর মতই ভাবলেশহীন চোখে;

আমি বারবার ছুটে যাই পাহাড়ের কাছে
বারবার ছুটে যাই তোর কাছে
প্রতিবার সাড়া দিয়ে ভালোবাসার ডাকে
আশায় আশায়
একবার তো বুকে জড়িয়ে রাখবি সংগম শেষে;

ও পাহাড়
ও নারী
আমি তোদেরই, ভালোবেসে আর ভালোবেসে।




ইচ্ছেবৃষ্টি



ইচ্ছেবৃষ্টি
- যাযাবর জীবন


কিছু ইচ্ছে পুড়ে যায় প্রতিদিন অন্ধকারে
কিছু ইচ্ছে কাওকে বলা যায় না, মন জানে
কিছু আহ্বান এড়িয়ে যেতে হয়, সঙ্গোপনে
ভালোবাসার হন্তক আমি ইচ্ছাকৃত ইচ্ছামনে;

কষ্ট কি কিছু হয়?
থাকুক না আড়াল কিছু আগুন পোড়া সময়
ধোঁয়ায় মেঘ হয়ে গিয়েছে আকাশ মন পোড়া হতে
রুমঝুম ঝুম বৃষ্টি নামুক দু-চোখ ধুয়ে দিতে।




শনিবার, ৯ ডিসেম্বর, ২০১৭

বৃষ্টি মানে



বৃষ্টি মানে
- যাযাবর জীবন


বৃষ্টি মানে আমি তুই
বৃষ্টি মানে নদী
বৃষ্টি মানে ভালোবাসা
তুই থাকিস যদি

বৃষ্টি মানে মনের খাতা
টুকটাক টুক আঁকা
বৃষ্টি দিনে তোকে ছাড়া
বড্ড লাগে ফাঁকা

বৃষ্টি মানে রুম ঝুমঝুম
টিনের চালে গান
তোর চুলেতে হারমোনিয়াম
ঠোঁটে চুমু পান

আকাশেতে মেঘ ভাসছে
তুলো পেঁজা পেঁজা
বৃষ্টি দিনে ঝুমঝুম নাচ
তোকে নিয়ে ভেজা

বৃষ্টি মানে আমি তুই আর
মন দুজনার ভেজা
বৃষ্টি মানে ভালোবাসা
ঠোঁট ঠোঁটেতে ভেজা।





মেঘের দোষ



মেঘের দোষ
- যাযাবর জীবন


অপেক্ষারত দুপুরে কবুতর ডানায় মেঘের ওড়াউড়ি
আমি হরিণীর ছুটে আসার আশায়
অথচ চোখ ভেজাচ্ছে ইলশেগুঁড়ি
দৃষ্টির ওপাশে পিপীলিকা পায়ে রৌদ্র গড়ায়
আমি না দেখি সূর্য না দেখি তোকে
আকাশ নামে নি আজ কুকুর বেড়াল দৌড়ে
তবুও ভিজছে কাক ইতিউতি উদাস চোখে
বৃষ্টির রিমঝিম না শুনেও মাঝে মাঝে ভিজে যায় মন;

সব দোষ মেঘের;
ভিজতে ও ভেজাতে,
কাঁদতে ও কাঁদাতে।



শুক্রবার, ৮ ডিসেম্বর, ২০১৭

অবোধ্য অনুভূতি



অবোধ্য অনুভূতি
- যাযাবর জীবন


দুঃখ দৃশ্যমান কিছু নয়
তবুও চোখের জল মাঝে মাঝে কথা কয়;

কতরকম অনুভূতিই না আছে আমাদের!
সুখ-দুঃখ
আশা-নিরাশা
প্রেম-ভালোবাসা
হাসি কান্না
এক একজনের প্রকাশ এক এক রকম
অনুভূতিগুলো ঠিক অদৃশ্য হয়ে রয়;

তুই বড্ড ভালোবাসিস আমায়
বড্ড বেশী প্রকাশ্য
যে কারো বোধগম্য,
আমি তোকে ভালোবাসি কিনা
থাকুক না অজানা!

কোন এক দিন খুব দমকা হাওয়ায় তুই বেসামাল হলে
কোন একদিন চাঁদ খুব জ্যোৎস্না বিলোলে
কোন একদিন মেঘ খুব বৃষ্টি ঝরালে
কোন একটা রাত অন্যরকম হলে
তোর চির চেনা অনুভূতিতে দাগ কাটবে কি?
তবে আর কেন মিছে কবিতা আঁকছি?

কোন এক রাত যদি খুব কালো হয়
সে রাতে কান্নার রঙ দেখিস অন্ধকারে;
হয়তো পেয়ে যেতে পারিস আমারে।

তুই স্বপ্ন দেখিস
আমি রাত্রি আঁকি
তুই চোখের জলে ভাসিস
আমি মনসাগরে ঝড় ঝঞ্ঝায়
তোর আকাশে চাঁদ
আমার শিকল পড়ানো ছাদ
তোর কাঠফাটা ঠা ঠা রৌদ্দুর
আমার চোখে রাত,
বড্ড অন্যরকম লাগছে কি?
পাগলের প্রলাপ;
কিছু অনুভূতি থাকুক না অচেনা
সব অনুভূতি তোর বোধগম্য না।

যেদিন আমি থাকবো না
কবিতাগুলো উল্টেপাল্টে দেখিস,
বুঝলে কাঁদিস
না বুঝলেও খাতাটা তোরই কাজে লাগবে, উনুন ধরাতে।



চাহিদার ঊর্ধ্বশ্বাস



চাহিদার ঊর্ধ্বশ্বাস
- যাযাবর জীবন


চাহিদার কি আর শেষ আছে?
কত রকম চাহিদাই না মানুষের থাকে!
কারো মনের
কারো শরীরের
কারো প্রেমের
কারো কামের
কারো অর্থের
তবে প্রত্যেকেরই কিছু না কিছু স্বার্থের;

কারো চাহিদা মনে রাখার
কারো ভুলে যাওয়ার
কেও চায় ভালোবাসতে
কেও ভালোবাসা পেতে
আমি ঠায় দাঁড়িয়ে, গাছ হয়ে
পাতা শুঁকোচ্ছে
শিকড় মরে যাচ্ছে
চাহিদার চাপে;

দিন কি আর চাইলেই জ্যোৎস্না দেখে
না সূর্য দেখে চাঁদ!
চাহিদার চাপে দিনরাত্রিতে চাহিদার ঊর্ধ্বশ্বাস;
স্বার্থ খেলায় তুই, আমি, সে, তারা, ওরা, ওরা
সবাই মেতেছে, সাবাস।



একরোখা ভালোবাসা



একরোখা ভালোবাসা
- যাযাবর জীবন


তোকে ছুঁয়ে যায় হাওয়া
তুই মাতোয়ারা
আমি হারাই তোর মেঘচুলে,
আমারও বড্ড ইচ্ছে করে
তোকে ছুঁয়ে যেতে
হাওয়ার মত
মেঘের মত
ভালোবেসে।

তোকে ছুঁয়ে যায় জল
শরীরেরে কোনে কোনে
স্নানের বাহানা,
আমি ছুঁতে গেলেই
এখন হবে না
হবে না,
আমি বাঁধ দেই মনে;
ভালোবাসায় বাঁধ দিতে পেরেছিল কে, কবে?

হাওয়া বয়ে যায়
মেঘ ঝরে যায়
জল গড়ায়
তোকে ছুঁয়ে ছুঁয়ে
কেও কিন্তু তোকে ভালোবাসে না
তবুও তুই সবার স্পর্শে;
তাদের সাধ্য কোথায়?
আমার মত তোকে একরোখা ভালোবাসতে।



ভালোবাসার স্পর্শ



ভালোবাসার স্পর্শ
- যাযাবর জীবন


যখন মন সূর্য
তুই ছুঁয়ে দিতেই আমি মেঘ
যখন মন রাত
তোর স্পর্শে আমি ঘুম;

তোকে ছুঁয়েছিলাম বলেই মনে প্রেম
তুই ছুঁয়েছিলি বলেই মন ভালোবাসা;

ভালোবাসার স্পর্শগুলো একদম অন্যরকম,
তাই না?




মন গভীরে ডুব



মন গভীরে ডুব
- যাযাবর জীবন


তোর গভীরে একটা দীর্ঘ ডুব
মন চায় খুব
এই! চুপ চুপ চুপ চুপ;

মন'কে ধমক দিলে কি ধুকপুক থামে?
মন তো'তে আরো বেয়ে বেয়ে নামে,
ঐ যে আলো হতে হতে অন্ধকার
সুখী হতে হতে ফিরে আসে অজর যাতনারা
তারপর সব চুপ
সুনসান চুপ;

সয়ে যাই, সয়ে যাই, সয়ে যাই
তারপর তোর গভীরে আবার হারাই;
ডুব,
দীর্ঘ ডুব।




নাভিশ্বাস



নাভিশ্বাস
- যাযাবর জীবন


কেও কেও দেখি টাকার কুমীর
খরচ করতে দিশেহারা,
চারিদিক থেকে আমায় ঘিরে থাকে চাহিদারা
কোথায় টাকা? কোথায় টাকা?

কারো কারো টাকার চাপে ঊর্ধ্বশ্বাস
চাহিদার চাপে আমার নাভিশ্বাস।



মঙ্গলবার, ৫ ডিসেম্বর, ২০১৭

সাদাকালো ক্যানভাস



সাদাকালো ক্যানভাস
- যাযাবর জীবন


মানুষের মন বিরাট এক স্বপ্ন ক্যানভাস
তোর আমার এর তার সবার,
তাতে সবাই রঙ মাখে
ছবি আঁকে;

কত রকম ছবিই যে দেখি প্রতিদিনের পৃথিবীতে
রঙিন রঙিন সব ছবি
রংধনু রঙের ছবি
স্বপ্নের ছবি
প্রেমিক আর প্রেমিকার ছবি
ভালোবাসার ছবি,
আমি মুগ্ধ হয়ে দেখি;

আমার ক্যানভাসে কোন রঙ নেই
দিনের বেলায় সূর্য সাদা
রাতের বেলায় কয়লা কালো,
কে দেখেছে সাদা-কালোর এত বিপুল সমারোহ?
মানুষ খুব সহজে সাদা-কালো নিতে পারে না
আমার ক্যানভাসটা রয়ে যায় অচেনা!

কোন এক জ্যোৎস্না রাতে ভুল করে চাঁদনি আঁকতে গিয়েছিলাম স্বপ্ন ক্যানভাসে
এখন প্রতি রাতই আমার অমাবস্যা;

সবাই রঙিন ছবিতে গল্প লেখে কাব্য দিয়ে
আমি কালো ক্যানভাসে অন্ধকার আঁকি রাত্রি হয়ে।







রবিবার, ৩ ডিসেম্বর, ২০১৭

জ্যোৎস্নায় মন খুলে


জ্যোৎস্নায় মন খুলে
- যাযাবর জীবন


জ্যোৎস্নার জৌলুষ কোথায়?
তুই ছাড়া;

মনে তুই তো জ্যোৎস্না
আর নয়তো রাত্রি তো প্রতি রাতেই আসে
কালো হয়ে;

ঘুমুতে হয় না রাত্রি জ্যোৎস্না হলে
কিংবা মনে তুই এলে;

আয় ভালোবাসি
মন খুলে।



স্বপ্ন দেখার প্রহর



স্বপ্ন দেখার প্রহর
- যাযাবর জীবন


অষ্টপ্রহর নষ্টঘোরে
টিক টিক টিক ঘুরছে কাঁটা
তোকে মনে নিয়ে;

দিনরাত্রির যখন তখন
মনের মাঝে তোর জ্বালাতন
মনে উঁকি দিয়ে;

আমি দিনের বেলায়
মত্ত কাজে
কোথায় সময়, চোখ ঘুমোবার?

আমার দিনের বেলা
ব্যস্ত সময়
কোথায় সময়, ভালোবাসার?

তবুও সময় সময় চোখের ভাঁজে
যখন তখন তোর উঁকি
কাজের ফাঁকে ফাঁকে;

আমার সময়, স্বপ্ন বোনার
দুচোখ বুঁজে তোকে নিয়ে
রাত্রিঘুমের ফাঁকে;

তুই রাত্রে আসিস
চোখে বসিস
আমার স্বপ্নঘুমে;

চোখ ঘুমোলেই
ভালোবাসিস
স্বপ্ন চুমে চুমে;

রবি চুমতেই তুই ঘুমাস
ভালোবাসার স্বপ্ন ঘুমায়
দিনের আলোর ভাঁজে;

তুই ঘুমোতেই চোখ খুলে যায়
স্বপ্ন কি আর পেট চালায়?
চল রে মন কাজে।










মনঘরের গোপন চিঠি



মনঘরের গোপন চিঠি
- যাযাবর জীবন


মনকথায় একটা চিঠি লিখেছিলাম তোকে
মুখবন্ধ খামে পড়ে আছে আমার মনঘরে
চিঠিটার কথা অনেকবার বলেছি তোকে
ভেতরের লেখাটা শুধুই আমার ভেতরে;

আমি তোর মন পড়ে নিতে পারি তোর চোখ পড়ে
তুই কেন চিঠি খুঁজিস আঁতিপাঁতি আমায় খুঁড়ে খুঁড়ে?

যেদিন মন পড়তে পারবি আমায় পড়ে পড়ে
সেদিন চিঠিটা ঠিক পৌঁছে যাবে তোর মনঘরে।

ভেজা দূরত্ব



ভেজা দূরত্ব
- যাযাবর জীবন


তুই উড়ছিস সেখানে
আমি পড়ে আছি এখানে
মধ্যে এক দুপুর দূরত্ব
তোতে আর আমাতে;

চুমু খেতে হয় ঠোঁটে
শরীর জড়িয়ে
মন হারিয়ে,
বৃষ্টি হোক আর না হোক
ভিজতে মানা নেই তোতে
সকাল, সন্ধ্যে কিংবা রাতে।





সময় রেসে সময়



সময় রেসে সময়
- যাযাবর জীবন


সময় কাটছে ঘোড়ার রেসে,
চোখ বুজতে না বুজতেই সকাল
সূর্য উঠতে না উঠতেই সন্ধ্যা
আমি ঘোড়ার পিঠে
সময় রেসে;

একদিন ঘোড়ার পিঠেই থেমে যাবে সময়
খুব সহসাই, হঠাৎ করে;
মাটি সাড়া দেবে মাটির ডাকে
তারপর চিরঘুম মাটির ঘরে
থেমে যাওয়া সময়ে।

শনিবার, ২৫ নভেম্বর, ২০১৭

একটা মেয়ে



একটা মেয়ে
- যাযাবর জীবন


একটা মেয়ে ভোরের কুয়াশা
সারা গায়ে মেখে রয়
একটা মেয়ে সকালের সূর্য
প্রতিদিন ঘুম ভাঙায়
একটা মেয়ে দুপুরের দাবদাহ
ভালোবাসায় পোড়ায়
একটা মেয়ে বিকেলের রৌদ্দুর
সে ছাড়া মন বিষণ্ণ হয়ে রয়
একটা মেয়ে সন্ধ্যের গোধূলি
ঘরে ফেরার প্রেরণা
একটা মেয়ে রাতের চাঁদনি
ভালোবাসার কবিতা
একটা মেয়ে অন্ধকার রাত
আমায় ঘুম পারায়
একটা মেয়ে দিনরাত্রির অষ্টপ্রহর
আমায় জড়িয়ে রয়;

একটা মেয়ে জানলো না কখনো,
সে কুয়াশা বলেই আমি ভোর
সে সূর্য বলেই আমি সকাল
সে দাবদাহ হলে আমি তার ছায়া
সে রৌদ্দুর হলে আমি বৃষ্টি
সে সন্ধ্যে হলে আমি ঘর
সে চাঁদ হলেই আমি জ্যোৎস্না
সে রাত বলেই আমি ঘুম
তার হাসিতে আমার সূর্য
তার মন খারাপে আমার আকাশে শ্রাবণ;

একটা মেয়ে কখনোই জানলো না
তার ভালোবাসাই আমার কলম
সে আছে বলেই আমার কবিতা;

একটি মেয়ে
জানলো না কোনদিন,
সেই ছিল আমার কবিতা।





শুক্রবার, ২৪ নভেম্বর, ২০১৭

মন খারাপের গন্ধ



মন খারাপের গন্ধ
- যাযাবর জীবন


আজ ম্যাড়ম্যাড়ে সিকি-চাঁদের আকাশ
আজ চুপচাপ থেমে আছে বাতাস
আজ কেমন যেন চারিদিক দমবন্ধ
আজ বাতাসে তোর মন খারাপের গন্ধ;

আজ চুমু খাওয়া হয় নি তোকে
বড্ড শুকনো লাগছে ঠোঁট
আজ ভালোবাসা হয় নি তোকে
বড্ড মন খারাপ বুঝি তোর?

আমি কখনো চাঁদ কখনো সূর্য
তুই যখন যেমন রাখিস,
মন কখনো বুঝ কখনো অবুঝ
তুই যখন যেমন রাখিস,
তুইই আমার বুঝ, আমি তোতেই অবুঝ
তুই বুঝিস আর নাই বুঝিস;

রাত অনেক হলো
অনেক হয়েছে কথা
এখন ঘুমো তুই কান্না মেয়ে, স্বপ্ন জড়িয়ে
কাল না হয় ভালোবাসবো নতুন করে, তোতে হারিয়ে।


সত্য মিথ্যার বোধোদয়



সত্য মিথ্যার বোধোদয়
- যাযাবর জীবন


তুই সত্যি
আমি কিন্তু মিথ্যা না;

তুই যখন সূর্যোদয় দেখিস
আমি দেখি সূর্যাস্ত, একই সময়ে,
আমরা কেও কিন্তু মিথ্যা না;

তুই যখন দিন দেখিস
আমি দেখি রাত, একই সময়ে
আমরা কেও কিন্তু মিথ্যা না;

আমি তোকে ভালোবাসি, একদম সত্য
তুই আমাকে ভালোবাসিস না, ডাহা মিথ্যা
তবুও আমাদের মিলন হয় না;

আমরা দু-জন দু-জায়গা থেকে পৃথিবী দেখি
আমরা দু-জন পরস্পরকে ভালোবাসি
তবুও আমাদের মিলন হয় না,
আমরা কেও মিথ্যা না।



হার



হার
- যাযাবর জীবন


সেই সেদিন থেকে
আজ পর্যন্ত
আমি এখনো তোর,
তুই অনেক দূরে, স্বার্থের;

অর্থের কাছে হেরে যায় সবাই
মনে ভালোবাসা নিয়ে।


স্থবির মাটি



স্থবির মাটি
- যাযাবর জীবন


উড়লাম, ভাসলাম, খুঁজলাম তোকে
এখানে ওখানে, আকাশে বাতাসে
ওখানে শুধুই সাদাকালো মেঘ ভাসে,
তুই অধরা, মন আকাশে;

একদিন ডানা ভেঙে যাবে
একদিন চাইলেও উড়তে পারব না
একদিন মন খুঁজবে, চোখ দেখবে না
একদিন স্থবির হয়ে যাবে মাটি,
সেদিন খুঁজতে আসিস আমায়
যদি মনে পড়ে।

ক্লান্তি খোঁজায়



ক্লান্তি খোঁজায়
- যাযাবর জীবন


উড়তে থাকে পাখি
ক্লান্তি কোথায় ডানায়?
ভাসতে থাকে মাছ
সাঁতরে সাঁতরে বেড়ায়;

যত ক্লান্তি আমার
খুঁজে খুঁজে তোকে
তুই কোথায়?
তুই কোথায়?


আঁচলে দীর্ঘশ্বাস



আঁচলে দীর্ঘশ্বাস
- যাযাবর জীবন


নির্ঘুম রাত্রি শেষে ভোর সকালে পাহাড়ের কান্না
সাগর কেঁদেছে সারারাত তোর সাথে
পাথরের আঁচল বেয়ে ঝর্ণা নেমে যাচ্ছে সাগরে
কান্নার বিলাপে
আমি খড়খড়ে ক্লান্ত চোখে রোদের চোখরাঙানি দেখি
কোথাও মেঘ কাঁদে না
অন্তর্দাহে নীল হয়ে থাকে আকাশ;

আমি জেগে আছি তোর সাথে পাহাড়
জেগে আছি ঝর্ণা
জেগে আছি সাগর,

তুই ঘুমিয়ে পর রে কান্নামেয়ে
তোর আঁচলে বুকফাটা দীর্ঘশ্বাস।

নীল স্বপ্ন



নীল স্বপ্ন
- যাযাবর জীবন


কোন কোন মাঝরাতে তুই আমার
কোন কোন মাঝরাতে ডুব সাঁতার
স্বপ্ন ভাংতেই কোথাও কেও নেই
স্বপ্ন ভাংতেই অন্ধকার;

কোন কোন মাঝরাতে তোকে কাছে পাই
আকাশে চাঁদ ওঠে
তারাতেও জ্যোৎস্না ফোঁটে
এলোমেলো বাতাসে উড়তে থাকে তোর এলোচুল
আমি নাক গুঁজে দেই তোর ঘাড়ে
তারপর একটু একটু করে খুলে দেখি তোকে
চুল থেকে ঘাড়ে
ঘাড় থেকে বুকে
বেআব্রু রাত বেআব্রু করে তোকে
তারপর ডুবতে থাকি তোতে;

নীল নীল স্বপ্নগুলো বড্ড নীল করে দেয় মাঝে মাঝে
আর ঘুম ভাংতেই অন্ধকার।




সন্ধ্যের ঘরে রাত



সন্ধ্যের ঘরে রাত
- যাযাবর জীবন


উড়ছে সন্ধ্যা পাখির ডানায়
ঘরে ফিরছে পাখির দল
সূর্যটা রঙ হারিয়েছে মন খারাপে
বিকেল ঘুমিয়ে পরেছে সন্ধ্যের বুকে;

আমার চোখেই ঘুম নেই
সকাল সন্ধ্যে কিংবা রাতে
নেই ঘরে ফেরার তাড়া
সূর্য ডোবার সাথে;

আমি আকাশ তাকাই চাঁদ খুঁজে
চাঁদনি ভালোবেসে
তুই দিনের বেলায় সূর্য হয়ে
থাকিস দূর আকাশে;

ঘরে ফিরছে পাখিরা, ফিরুক
সূর্য ডুবে যাচ্ছে, যাক
তুই দুপুরের চাঁদ
আমি মিশমিশে কালো রাত।



একটি দুটি নোনা কথা



একটি দুটি নোনা কথা
- যাযাবর জীবন


একটি দুটি পাতা
একটি দুটি ফল
অনেক অনেক ঢেউ
অনেক কোলাহল;

কেও কেও গাছের ফল গোনে
সাগরের ঢেউ গুনেছে কে?
বুকে কষ্ট কষ্ট পাথর ছড়ানো
ভালোবেসেছে যে;

সবাই ফল গোনে স্বার্থে
কারো অর্থের বড়াই
কেও কেও শুধু গাছ বুনেই যায়
আমি না হয় কষ্টই কুড়াই;

সমুদ্র থেকে নোনা কি আর কান্না হয়?
আমি পাথর ভেঙে দুঃখ ওড়াই।



তুই আর আমি রাত



তুই আর আমি রাত
- যাযাবর জীবন


দিনটা একটা মাত্র সূর্যের
কত কত আলো
রাতটা লক্ষ লক্ষ তারার
অথচ কালো,

সারাদিন নীল মেখে মেখে
আকাশেরও কালো হতে ইচ্ছে করে কখনো কখনো
সাদা ধুসর মেঘ ভেসে বেড়ায় নীল-কালো আকাশে
আমার আর ডানা কোথায় ভেসে যেতে;

রঙ বদলাতে থাক আকাশ তার মত
নীল আর কালোতে
দিন কিংবা রাতে,
আমি ডুব সাঁতারে, ডুবে যেতে তোর সাথে
দিনে কিংবা রাতে;
একটা বার রাত হ তুই আমার সাথে সাথে।




তুই আর আমি, সাগর পারে



তুই আর আমি, সাগর পারে
- যাযাবর জীবন


তুই আর আমি
সাগর আর বালুতট
চাঁদ ও জ্যোৎস্না
আর মন ভরা চুমু;

ঠোঁট ঢেকে রাখলে কি আর কাম ঢাকা যায়?
আমি তো সেই কবেই ডুবেছি তোতে,
আয় রাত্রি হই অমাবস্যা রাতে
ভিজে গায়ে সাগর পারে।

নোনা জলের কান্না



নোনা জলের কান্না
- যাযাবর জীবন


কে দেখেছে বৃষ্টির কান্না?
সবাই মেঘ দেখে
আমি দেখি তোকে;

ঢেউ ভাঙা দেখে সবাই
ঢেউ এর কষ্ট বুঝতে চেয়েছে কে কবে
নোনা জলে সবাই লবণ চাখে
সাগরের কান্না দেখেছে কে?

চোখ থেকে টপ করে ফোঁটা গড়াতে দেখেছিস তুই
কান্না বুঝেছিস কখনো?
হৃদয়ে কান চেপে;

সাগর ভাংছে কুলে
অন্ধকার রাতে
আর আমি তোতে।


শনিবার, ১৮ নভেম্বর, ২০১৭

ভালোবাসার অতলে



ভালোবাসার অতলে
- যাযাবর জীবন


তুই আর আমি
একান্তে,
সূর্যটা মুখ লুকিয়েছে সন্ধ্যের বুকে;

আমারও ইচ্ছে করেছে মুখ লুকাতে
তোর বুকে;

চল ডুবে যাই সাগরে
ভালোবাসার অতলে।





কোনদিকে যাব?



কোনদিকে যাব?
- যাযাবর জীবন


কোনদিকে যাব?
বলে দে মন;

সামনে ভালোবাসা, পেছনে হতাশা
আরে বোকা! ভালোবাসা মানেই তো হতাশা;

ডানে প্রেম, বাঁয়ে মোহ
আরে বোকা! মোহের হাতছানিই তো প্রেম;

বড্ড মন চাইছে , স্বপ্নে যেতে
বাস্তবতা টেনে ফেলে দেয় মাটিতে;

কোথাও প্রেম নেই
স্বপ্ন নেই,
পুরোটাই বাস্তবতা
বাস্তবতাই জীবন;

একটা বার আমাকে স্বপ্নে ঢুকতে দে মন।




অমাবস্যার চুমু


অমাবস্যার চুমু
- যাযাবর জীবন


তুই বড্ড রাত
সন্ধ্যের আলো নেভার পর থেকে,
অথচ আকাশ ভরা তারা
তোকে সাজিয়ে দিতে;

আয় চুমু খাই, অমাবস্যায়।


তেতে ওঠা সকাল



তেতে ওঠা সকাল
- যাযাবর জীবন


চায়ের কাপে ভোর
চোখ মেলতেই তুই
চুমু সাজিয়ে চোখে

কাপ হাতে তুই
ঠোঁটে চুমুক দিতেই সূর্য
উঁহু! আজ চুমুতে মধু কম যেন?
পূর্ণ চোখে তাকাতেই তোর চোখ মাটিতে;

মন খারাপ বুঝি?
না তো,
চুমুতে মিষ্টি কম দিয়েছিস?
না তো,
তবে এত হালকা লিকারের চুমু কেন?
শুকনো মনে কি আর লিকার কড়া হয়?
ভেজালাম তো সারারাত,
তাতে কি আর হয়?
তাহলে আবার ডুবি?
এসো;

সকাল তেতে ওঠে রোদে
আমি তোতে।




ঘোলা ঘোলা


ঘোলা ঘোলা
- যাযাবর জীবন


সূর্যের লাল চোখ মেঘের ভেলায় খেলা করতে না করতে
হুড়মুড় করে বিকেলটা ঢলে পড়লো সন্ধ্যের গায়ে
আমি তখন কানামাছি খেলায় মত্ত সাগরের পায়ে পায়ে
ফেনাগুলো কখনো হুড়মুড় করে আমার পায়ে
কখনো আমি দৌড়ে সাগরের গায়ে গায়ে
কিছু না কিছু নিয়ে তো মত্ত থাকতেই হয়
তোকে ভুলতে গিয়ে;

ঐ তো দূরে বাতাস উড়ছে
উড়ছে বালি
উড়ছে পাখির দল,
উড়ছে মেঘ
উড়ছে সময়
শুধু আমিই থেমে
এখনো তোতে;

সেই সে দিনের কথা মনে আছে তোর?
তুই আর আমি সাগর তীরে
অনেক অনেক মানুষের ভীরে,
কি শঙ্কাতেই না ছিলি তুই!
এই কেও দেখলো বুঝি
এই কেও দেখলো!
মনে আছে?

আমি হাসছিলাম তোর কাণ্ড দেখে
বলেছিলাম, আচ্ছা যদি দেখেই ফেলে
কি আর হবে?
না হয় হারিয়ে যাব দুজন মিলে
সাগর তীরে সাগর নীলে,
তারপর সন্ধ্যে ঘনাতেই
দুজন দুজনার কাঁধে হাতে
হেঁটে গিয়েছিলাম ঐ দূরে,
বালিতে পা জড়িয়ে
সাগরে পা ভিজিয়ে
সাগরের তীর ধরে
বহু বহু, বহুদূরে;

কতদিন আগের কথা বলতো?
ধ্যাত! পুরনো কথা ভুলতে যেয়ে লবণ বাড়ে সাগর জলে
রাত বুঝি নেমে এলো
চারিদিক কেমন ঘোলা ঘোলা,
চোখে কিছু পড়লো বুঝি;

আচ্ছা এখন যাই রে!





অধোগামী



অধোগামী
- যাযাবর জীবন


যেভাবে মেঘের আকাশ
যেভাবে বৃষ্টির জল
উড়ন্ত পাখির ডানা
তোর কান্না আঁচল,
আমি ঢাল বেয়ে নেমে যাওয়া পানি দেখি
আর আমার অধোগামী জীবন
তোর আলতো সাবধানী পা ফেলা
আমার উসৃঙ্খল পদদলন;

এত উচ্ছ্বসিত হওয়ার কিছু নেই
স্খলন সবার জীবনেই আসে
মহাপুরুষ শুধুই কিতাবে,
আজকের যুগে;

ভালোবাসার জন্য একজন মহাপুরুষ খুঁজে নে
আমি অধোগামী নদী,
আমাতে ডুবতে চাইলে স্বাগতম।




ডুবে যাওয়ার অনুভব



ডুবে যাওয়ার অনুভব
- যাযাবর জীবন


ভালোবাসা, একটি শব্দ
অব্যক্ত অনুভূতি
অব্যক্ত অনুভব

ভালোবাসা, ইচ্ছে ছুঁয়ে ছুঁয়ে থাকা
ইচ্ছে জড়িয়ে রাখা
মন কেমন কেমন করা অনুভব

ভালোবাসা, কষ্ট কষ্ট সুখ
হাসি হাসি কান্না
দুঃখ সুখের অনুভব

ভালোবাসা, একটি মন খারাপের গল্প
একটি সম্পূর্ণ কবিতা
আর তুই তুই অনুভব

ভালোবাসা মানেই 'তুই'
মনের মাঝে 'তুই সব'
আর তোতে ডুবে যাওয়ার অনুভব।


অলস কথার বৃষ্টি নূপুর



অলস কথার বৃষ্টি নূপুর
- যাযাবর জীবন


একটি দুটি অলস কথা
অলস আজকের অলস দুপুর
স্বপ্ন নায়ে চোখ বুঝতেই
মনের মাঝে বৃষ্টি টুপুর;

স্বপ্ন চোখে মাঝি শুয়ে
পরী বসা নায়
ভালোবাসার নৌকা ভাসে
মাঝি উজান বায়;

নদী ভেজে নৌকো ভেজে
ভেজা ভেজা কাম
মাঝি ভাসে পরী ভাসে
ভালোবাসার নাম;

মাঝির মনে অলস সুখ
সুখ পরীর মনে
অলস দুপুর অলস সময়
স্বপ্নঘুমের সনে।


ঘুমন্ত সময়



ঘুমন্ত সময়
- যাযাবর জীবন


সুসময়ে সবাই সবার
আমি না হয় রইলামই ঘুমন্ত সঙ্গী
চুপটি করে সবার সাথে
মনের মাঝে মনের খাঁচায়,
সময় ওড়ে পাখির ডানায়;

দুঃসময়ে মনে করে একবার মনে করিস আমায়।

অপেক্ষার হেলান


অপেক্ষার হেলান
- যাযাবর জীবন


দুপুর হেলান দিয়েছে বিকেলের গায়ে
সারাদিন গড়িয়ে গড়িয়ে সূর্যটা লাল করে ফেলেছে চোখ
বিকেলের আলো তো এমনিতেই মন খারাপ করে দেয়
এর মাঝে তুই এলি এলি করেও এলি না,
অপেক্ষারও তো ক্লান্তি থাকে
সেই সকাল থেকে পথ চেয়ে চেয়ে শ্রান্ত দুচোখ
হঠাৎ ঝাপটা হাওয়া
নরম ঠাণ্ডা,
এলি!
দুচোখ মেলে চাই
কোথাও কেও নেই;

দুটি পাখি ডানা ঝাপটে উড়ে যাচ্ছে মাথার ওপর দিয়ে
ঘরে ফিরছে
পাখিরও তো ঘর থাকে
তুই ছাড়া ঘর কোথায় আমার?
যখন তুই মনে, মন আমার ঘর
আর নয়তো অপেক্ষার চোখ
প্রতীক্ষায় তোর.........


মন ডাকে



মন ডাকে
- যাযাবর জীবন


ভোর হলেই মন পাখির ডানায়
আকাশ-নীলা আকাশ জুরে
তোর খোঁজে এদিক ওদিক
ধুসর আমি উড়াল ডানায়,
কোন সুদূরে, তুই কোথায়?
ডাকছে মন, আয়, আয়, আয়......


ভালোবেসে রাত


ভালোবেসে রাত
- যাযাবর জীবন


রাতগুলো আসে কালো হয়ে
অন্ধকারে কোথায় আলো?
মনের আয়নায় চোখ পড়তেই
ভেতর থেকে আমিও কালো;

কুয়াশা না হয় পরত ফেলে
আলোর ওপর ঘোলা ঘোলা
কোথায় আয়না? কুয়াশা কোথায়?
অন্ধকারে সবই কালো;

আমি তো কবেই রাত্রি হয়েছি
যেদিন তোকে বেসেছি ভালো।


নারী, কন্যা জায়া জননী



নারী, কন্যা জায়া জননী
- যাযাবর জীবন


নারী; ছেলেবেলায় মমতাময়ী মা
ভালোবাসার বাঁধন
উল্টাপাল্টায় কড়া শাসন;

নারী; কৈশোরে, প্রেমিকা মনমোহিনী
যখন তখন জ্বালাতন
স্বাধীনতা হরণ আর সময় শোষণ;

নারী; যৌবনে, জীবন সঙ্গিনী অর্ধাঙ্গিনী
নরম ও গরম, ইচ্ছে হলেই ইচ্ছেমতন
এটা না, ওটা না, সেটা না এর কান ঝালাপালা ভাষণ;

নারী; কন্যা, বাবার আদরের ধন
পিতামনে একচ্ছত্র ভালোবাসার সিংহাসন
প্রৌঢ়ত্বে কখনো সখনো মমতার অনুশাসন।

ঝোকের জোঁক


ঝোকের জোঁক
- যাযাবর জীবন


জোঁকের দাঁতে কামড়ে ধরা আর
ঝোঁকের মাথায় ছুড়ে ফেলা
তোকেই মানায়, হে মহীয়সী নারী;

আর কত লবণ দেব রক্তে?

একলা গাড়ি একা যাত্রী



একলা গাড়ির একা যাত্রী
- যাযাবর জীবন


কোথায় মন? আকাশ বাতাস
উড়ে গেলো রাত্রি
একলা গাড়ি ইষ্টিশনে
আমি একা যাত্রী;

অনেকগুলো রাত পেরিয়ে
জ্যোৎস্না ঘরে এলো
অনেক গুলো চাঁদ হারিয়ে
রাত্রি কালো হলো

অনেক অনেক অন্ধকারে
কান্না হলো মন
অনেক গুলো প্রশ্ন মনে
উঁকি, যখন তখন

অনেক আলোর পথ পেরিয়ে
অনেক সময় হাঁটা
পিছু ফিরে জীবন দেখতেই
দেখলাম সব ফাঁকা

কোথায় জীবন?
সময় ঘড়ি, টিক টিক দোলে
রাত পেরোলেই ঘুম ঘুম চোখ
মরণ কথা বলে

সময় হলেই ছাড়ে গাড়ি
মরণ ইষ্টিশন
একে একে যাত্রী ওঠে
ঘুমিয়ে যায় জীবন।

মন কথা বলে



মন কথা বলে
- যাযাবর জীবন


কি জানি মন
কোথায় কখন
হারায় হারায় চলে,

কারো মনে চাঁদে
কারো বা সূর্যে
কারো থাকে জলে,

আমি থাকি স্বপ্নে
তুই থাকিস বুকে
মন কথা বলে।


বৃহস্পতিবার, ৯ নভেম্বর, ২০১৭

আলাপন



আলাপন
- যাযাবর জীবন


আলাপন
আলাপন
অন্ধকার রাত,
ঠোঁটে ঠোঁটে আলাপন
তোর হাতে হাত;
আলাপন
আলাপন
মুঠো করে মুঠোফোন
প্রেমিক আর প্রেমিকা
জাগে সারা রাত......

আলাপন
আলাপন
চাঁদনি ও চাঁদ,
শরীর শরীর আলাপনে
ভালোবাসার ফাঁদ;
আলাপন
আলাপন
একা একা আলাপন
তোর জন্য জেগে থাকা
ঘুমহীন রাত.........



বুধবার, ৮ নভেম্বর, ২০১৭

অমাবস্যার চাঁদ



অমাবস্যার চাঁদ
- যাযাবর জীবন


তুই আমায় জড়িয়ে ধরলেই চাঁদে দিন
অভিমানে গাল ফুলোলেই সূর্যে রাত;

চাঁদ হাসলে তো মন জ্যোৎস্নাই হয়
তুই হাসলেই আমার ঘরে চাঁদ
জ্যোৎস্নায় আকাশ থেকে চাঁদনি ঢালে চাঁদ
মন থেকে প্রেম ঢালিস তুই
অন্ধকার কোথায়?
সারারাত আমার চাঁদে সূর্যে মন।

অনেক দিন ভেজা হয় নি বৃষ্টিতে,
আচ্ছা!
ঝুম বৃষ্টিতে জ্যোৎস্নায় ভিজেছে কে?
তুই তো ভেজাস হর হামেশাই
প্রেমে কিংবা অভিমানে,
একবার বড্ড ভিজতে ইচ্ছে করে আমার, অমাবস্যার চাঁদে।





পাথরের কান্না


পাথরের কান্না
- যাযাবর জীবন


হাসতে পার? মন ভরে;
কাঁদতে পার? গলা চিরে;
তবে তো তুমি মানুষ।

পাথর হাসে না
পাথর কাঁদে না
তবুও পাহাড় থেকে নেমে আসে ঝর্ণা
তবে কি পাহাড় কাঁদে?
একা একা ডুকরে ডুকরে;

কই, আমি তো কাঁদি না!
তবে কেন ভিজে যায় রাত? আমার ঘরে।





জীবনের পিছুটান



জীবনের পিছুটান
- যাযাবর জীবন


কি দারুণ একটা সময় ছিল ছেলেবেলা!
সবার সাথে হাসি খেলা
বাবা মা ভাই বোন আত্মীয় স্বজন
সবাই ছিল আত্মার আত্মা, বড্ড আপন;

সময়ের পিঠে চড়ে সময় গড়ায়
ছেলেবেলা গড়িয়ে কৈশোর হয়ে যৌবনে পৌঁছায়
অনেকের মাঝে তখন মাঝে মাঝে বড্ড লাগে একা
একটু মন কেমন কেমন
কি যেন একটা, কি যেন একটা
বাসায় সুন্দরী কেও এলে চোখ ঠারে ঠোরে
ও পাড়ার বড় বাড়ির মেয়েটাকে দেখি আড়ে আড়ে
বড্ড মন কেমন করে
কোন একদিন মেয়েটাও হয়তো দেখলো চোখ চেয়ে
ইশারা ছিল কি চোখে? মৃদু হাসি ঠোঁটে?
ইশশ! মন কেমন করে
মন কেমন করে,
তারপর কিছুই ভালো লাগে না
কেমন যেন বিষণ্ণতা আর একা একা
একা একা,
এক দিন খুব আশ্চর্য হয়েছিলাম জেনে
বড় বাড়ির সুন্দরী বিয়ের পিঁড়িতে
আহা! সেদিনের কথা মনে এলে এখনো মন কেমন করে;

সময়ের পিঠে চড়ে সময় গড়ায়
একসময় যৌবনের ভেলা আমার ঘরেও বাসর সাজায়
একি? মানুষের ঘরে লাল টুকটুকে পরী!
আহা মধু, মরি মরি;
পরী আমার হলো তো মধু মধু
আমি পরীর হলাম তো জীবন ধুতুরা শুধু;

সময় গড়ায়, সময় গড়ায়
ট্যাঁ টোঁ, বাচ্চা কাচ্চা সংসার
পকেটে টাকা তো জীবন চিনি চিনি
আর নয়তো সংসার বিষোদ্গার,
এ ছাড়া তো আছেই নিত্য নতুন
মা বৌয়ের ঝনঝন হাঁড়িকুঁড়ি
চুলায় হাঁড়িতে আমি
আর না হয় দুজনার শিল-পাটার ঘষাঘষি
কোথায় মশলা? পাটায় আমি,
বাহ! কি সুন্দর সংসার
কখনো মধু মধু
আর নয়তো বিষোদ্গার।

সময়ের চাকা গড়াতে গড়াতে প্রৌঢ়ত্ব
পেছনে তাকালে দেখি কাঁঠালের আমসত্ত্ব
কোথায় ছেলেবেলা?
কোথায় যৌবন?
কোথায়ই বা আত্মীয় স্বজন?
স্বার্থ আছে তো মৌমাছির দল মৌচাক ঘিরে
আর নয়তো দুধের মাছি স্বজন সকলই উড়ে উড়ে;
বাচ্চা কাচ্চা বড় হয়
যার যার সংসার হয়
তারপর আমি কার? কে আমার?
মাঝে সাঝে পালা পর্বনে আবার কখনো একসাথে
সাথে যৌবনের পরী হয়ে আসা বুড়ি থাকে তো সময়টা ভালোই কাটে
আর নয়তো একার জীবন একা কাটে
এটাই সংসার
এটাই জীবন
সময় চাকায় গড়ায় জীবন;

তারপর এক সময় মাটি হয় মাটি
ছেলে মেয়ে, পাড়া পড়শি, আত্মীয় স্বজন, বন্ধু বান্ধব
সবাই আসে, কাঁদে কিছু সময়
মাটিকে মাটিতে শুইয়ে দিতে দিতে
দীর্ঘশ্বাস ফেলে বলে
বড্ড ভালো লোক ছিল গো;

পিছুটান কিছু রয়ে গেলো কি?
রয়ে গেলো তো সন্তানের মাঝে এক টুকরো স্মৃতি।




মঙ্গলবার, ৭ নভেম্বর, ২০১৭

চল প্রেম করি



চল প্রেম করি
- যাযাবর জীবন


প্রেমে পড়েছিস বুঝি?
সে আর নতুন কি?

কেন পড়িস?
অনেক অবসর আমার, তার থেকে কিছু সময় না হয় নষ্টই হলো অকাজে;

কষ্ট পেলে?
নতুন আর কি? সে তো কত ভাবেই জীবন থেকে নিত্য পেয়ে আসছি;

তারপর?
তার আর পর কোথায়? হয় শূন্যতে আউট না হয় সেঞ্চুরি;

পরিণাম?
তিন দিন চোখের জল, তারপর নতুন প্রেমে মন ছলছল;

এই বুঝি প্রেম?
নয়তো আবার কি? চল প্রেম করি।


পড়ে থাকা স্মৃতি


পড়ে থাকা স্মৃতি
- যাযাবর জীবন


রাগি দুপুর আজ তেতে ওঠা সূর্যে, ঠিক তোর মত
ভোরে ঘুম ভাঙ্গলেও
অভিমানের জল শুকোয় নি তোর চোখে
কাল সারারাত ছিল কান্না যত;

যদিও নতুন প্রেমের হাতছানি
তবুও আজ বড্ড মন খারাপ তোর
কতবার অতীত করতে করতেও খুঁড়ে তুলেছিস আমায় বর্তমানে
আমি তো সেই কবেই অতীত হয়ে আছি মনে মনে;

এবার নিশ্চয়ই নতুন বর্তমান নতুন করে
মন সাজাবে তোর নতুন প্রেমে
অতীতকে হেরে যেতেই হয়ই বর্তমানের কাছে
নতুবা প্রকৃতি শোধ নেয় ওলোটপালট জীবনে;

আচ্ছা শোন;
সব ঠিক আছে তো?
কিছু কিন্তু ফেলে যাস না পিছু;
আমার কাছে যা রইলো শুধুই স্মৃতি, সবটুকু।


স্পর্শানুভব



স্পর্শানুভব
- যাযাবর জীবন


স্পর্শ মানেই কাম নয়;
স্পর্শ অনুভব,
ভালোবাসার
বিশ্বাসের
আস্থার
নির্ভরতার;

যতবারই হারিয়ে গিয়েছি
তোর স্পর্শে নিজেকে খুঁজে পেয়েছি
যতবারই পশু হয়ে যাই
তোরই স্পর্শে আবার মানুষ হয়ে উঠি।


চাঁদনি ঘুম



চাঁদনি ঘুম
- যাযাবর জীবন


সূর্যটা পশ্চিমের বুকে হেলান দিতেই আমার মন আনচান
চেয়ে থাকি পূব দিকে ব্যাকুল হয়ে
কখন উঁকি চাঁদমুখ চাঁদের?
চাঁদ উঠতেই মন চাঁদনি
আর মন হেলান তোর বুকে;

আজ সারারাত গল্প হবে ঠোঁটে ঠোঁটে
তারপর চাঁদনি প্রেম শেষে আমরাও ঘুমুব দুজন
হেলান দিয়ে ভোরের সূর্যে
চাঁদ ডুবে গেলে পশ্চিমের আকাশে।


দূর, সমুদ্দুর



দূর, সমুদ্দুর
- যাযাবর জীবন


কথা ছিল আমরা দুজন হারাবো বহু বহুদূর
কখনো পাহাড় কখনো নদী কখনো সমুদ্দুর
নিয়তির খেলা আমরা এখন দূর, বহুদূর
মাঝখানে পাহাড় আর কত কত নদী কতগুলো সমুদ্দুর

তোকে চেয়েছিলাম স্বপ্নে আমি চাইনি কোন হুর
এখন দুজন দিন আর রাত মাঝে এক চাঁদ দূর
ভেজা ভেজা মন তুই পড়ে আছিস যোজন যোজন দূর
তোকে মনে পড়লেই ভারি ভারি মন দুচোখ সমুদ্দুর

দুটি জীবন আজ দুটি ঘাটে বাঁধা মাঝখানে সমুদ্দুর
ভালোবাসার অনুভব মনের ভেতর স্পর্শের বহুদূর
আজ দুজনার বাঁশি দুরকম বাজে দুটি ভিন্ন সুর
তুই পাহাড় হাঁটিস আমি হেঁটে যাই দূর দূর, সমুদ্দুর....


উপলব্ধিতে তুই


উপলব্ধিতে তুই
- যাযাবর জীবন


আকাশে চাঁদ উঠলে সবাই তাকিয়ে থাকে
চাঁদ দেখে জ্যোৎস্না অনুভব করে
কেও কেও চাঁদের ছবি তোলে
চাঁদনির ছবি তুলেছে কে?
সূর্য তো চোখে দেখা যায়
আঁকিয়েরা সূর্য আঁকে
সকাল, দুপুর কিংবা সন্ধ্যের অস্তগামী সূর্যের ছবি
দিনের আলোর ছবি এঁকেছে কে?

কিছু সৌন্দর্য শুধুই অনুভবের
কিছু সৌন্দর্য উপভোগের
কিছু সৌন্দর্য কেবল চোখে দেখতে হয়, মন দিয়ে উপলব্ধি করে
শুধুমাত্র বোকারাই চাঁদনির ছবি তুলতে গিয়ে সময়ক্ষেপণ করে;

যেদিন জ্যোৎস্না সেদিন আমি চাঁদ দেখি
যেদিন অমাবস্যা সেদিন তোকে দেখি, মনচোখে
উপলব্ধিতে সারা মাস তুই আমার অনুভবে, ভালোবেসে।


ঈর্ষার চাঁদ



ঈর্ষার চাঁদ
- যাযাবর জীবন


আমার এক চোখে তুই
এক চোখে চাঁদনি;

চাঁদটা দেখেছিস?
পূর্ণ যৌবনা,
আগুন উগরচ্ছে চাঁদনি আমার ভালোবাসায়
ঈর্ষার আগুনে জ্বলছিস তুই ভালোবেসে আমায়
তুই, আমি আর চাঁদনি
ঘুরছি ত্রিভুজ প্রেমে
কেন্দ্রবিন্দুতে চাঁদ;

সারারাত প্রেম শেষে চাঁদটা ডুবে গেলেই
ঘুমিয়ে যায় চাঁদনি
ঘুমিয়ে পরি আমি
জেগে থাকিস তুই ঈর্ষায়।



পৃথিবীর দিনরাত্রি



পৃথিবীর দিনরাত্রি
- যাযাবর জীবন


কালকের রাতটা কি অবলীলায় হারিয়ে গেলো সকালের ভাঁজে
ভোরটা চুপটি করে মুখ লুকিয়েছিল কুয়াশায়
সূর্য হেসে উঁকি দিতেই কুয়াশার চোখে ঘুম
রবি চোখ রাঙিয়ে আড়মোড়া ভাংতেই
কুয়াশাগুলো সুড়সুড় করে সেঁধিয়ে গেলো
সবুজ ঘাসের লেপে
এবার বিকেল পর্যন্ত তার নিশ্চিন্ত ঘুম;

ওদিকে পৃথিবী তেতে উঠছে সূর্যের রাগের সাথে
দুপুর হয়ে এলো বলে
রোদে তাপে ঝিমুনি পশুকুলে
দ্বিপ্রহর এর আহার শেষে কেও কেও ভাতঘুমে
সূর্য হাটি হাটি পা পা করে ছুঁয়ে দেয় বিষণ্ণ বিকেল
কুয়াশার ঘুম ভাঙার সময় হলো;

পাখিগুলো সারাদিনের শ্রান্তি শেষে ঘরে ফিরছে ডানা ঝাপটে
সূর্যের চোখ লাল হয়ে আসছে ঘুমে
একটু পরেই হারিয়ে যাবে পাহাড়ের ওপাশে
কিংবা টুপ করে ডুবে যাবে সমুদ্রে
আর নয়তো লুকিয়ে যাবে সন্ধ্যের ভাঁজে;

গা ঝাড়া দিয়ে উঠে বসেছে শীতের কুয়াশা
মন কেমন করা ছায়া ছায়া ভুতুড়ে আলো
রাত অন্ধকারের লেপ টেনে দিচ্ছে দিনের ওপর
দিনের এখন ঘুমোনোর সময়;

আজ কি পূর্ণিমা?
চাঁদ কি আলো ছড়াবে?
সূর্য তো ঘুমুচ্ছে পৃথিবীর ওদিকে,
কুয়াশার চাদর সরিয়ে চাঁদের ঘুম ভাঙলেই
জ্যোৎস্নার নৃত্যে হাসবে রাত
তারপর চাঁদের সাথে চাঁদনির অভিসার
সারারাত ধরে
সূর্যের ঘুম ভাঙার আগে,
আবার আরেকটি নতুন দিন ধরাচরে;

ভালোই তো কেটে যাচ্ছে পৃথিবীর দিনরাত্রিগুলো
অযুত নিযুতাব্দি ধরে;
কি এসে যায় পৃথিবীর
সূর্যের
চন্দ্রের
আর সৌরজগৎ এর,
কে কি ভাবলো আর
কে কি লিখলো শব্দ বুনে থরে থরে।





মনে তুই



মনে তুই
- যাযাবর জীবন


ভোরটা ঘুমের, সবারই;
আমার পাখির ডানায়, গাড়ির চাকায়
নৌকো, ষ্টীমার কিংবা রেলের চাকায়
সময় গড়ায় সময় চাকায়
কঠোর জীবন, জীবন আগায়;

মাঝে মাঝে যখন খুব হাঁপিয়ে যাই
তুই উঁকি দিস মনের পাতায়
মনে তোর ঘুম ভাংতেই কুয়াশা ভেঙে সূর্যোদয়
রবি হাসে, তুই হাসিস
হেসে ফেলে আমার ক্লান্তি
জীবন গড়ায় সময় চাকায়
আমি এগিয়ে চলি সময়কে পিছু ফেলে
নতুন দিনে, নব উদ্যমে;

ভাগ্যিস মনে তুই ছিলি, সূর্য হয়ে।






বুকের বাঁ পাশ


বুকের বাঁ পাশ
- যাযাবর জীবন


বুকের বাঁ পাশটায় তুই
একেবারে খাঁচার অনেক ভেতরে,
মাঝে মাঝে তোকে খুলে দেখি উঁকি দিয়ে
তখন আমি তোর একার,
ঘন প্রেম শেষে আবার বুক বন্ধ করে সবার হয়ে যাই;

তুই ডুব দিয়ে ঘুমাস বুকের গভীরে
আমার হৃদপিণ্ড ধুকপুক করতে থাকে তোর নিঃশ্বাসে।


দুভাগ



দুভাগ
- যাযাবর জীবন


ভাংতে জুড়ি নেই
জুড়ি নেই মলম লাগাতে;

কতবার দুভাগ হয়েছি পথের মত,
তারপর আবার জুড়ে গিয়েছি তোতে।




মৌসুমি প্রেম



মৌসুমি প্রেম
- যাযাবর জীবন


বন্যার মত ধেয়ে আসে প্রেম কোন কোন বর্ষায়
প্রেম না নামলেও শরতে কিন্তু পানি নেমেই যায়
হেমন্তে নামতে থাকা প্রেম শীতে শুকায়
হয়তো কিছু ভেজা ভেজা অনুভব ওড়ে শীতের কুয়াশায়
তারপর জীবনের পদদলে ধুলোয় হারায়;

হায়! বন্যার মত ধেয়ে আসা প্রেম........
পথের ধুলায়.....

হয়তো আবার নতুন প্রেমের অঙ্কুরোদ্গম বসন্তের আগমনে
গ্রীষ্মে পাকবে,
কে জানে এবার বন্যায় কাকে ভাসাবে?

হায় প্রেম!
হায় মৌসুমি প্রেম।

পরিণয়



পরিণয়
- যাযাবর জীবন


ভালোবাসা কি আর মুখে বলতে হয়?
সে তো মনের সাথে মনের পরিচয়,
আর শরীরে শরীরে পরিণয়;

তোর সাথে আমার কেবলই মন ভালোবাসা
নেই কোন পরিণয়।


সোমবার, ৩০ অক্টোবর, ২০১৭

কালো রাত


কালো রাত
- যাযাবর জীবন


রাতগুলো আসে কালো হয়ে
কালো চোখ কালো করে
কখনো কালো আকাশে কালো মেঘের ডানায় চড়ে
কখনো আমার ঘরে কালো বিড়ালের পায়ে পায়ে
আমায় কালো করে নিতে ঘন কালো অন্ধকারে;

বেশ থাকি দিনের বেলায়
সাদা সূর্যে সাদা হয়ে
নীলাকাশে সাদা মেঘ হাওয়ায় হাওয়ায় ভেসে চলে
সবুজ মাঠে সাদা ফুল হাওয়ায় হাওয়ায় নাচে খেলে
আমিও সারাদিন তোকে ভাবি সাদা চোখে;

সন্ধ্যে নামে ধূসর হয়ে
মন খারাপের ধূসর মনে
ঘরে ফেরা গরুর গাড়ি মেঠো পথ ধূসর করে
লালাকাশে অস্ত রবি ঘুমিয়ে পড়ে ধূসর হয়ে
ধরাচরে ধীরে ধীরে অন্ধকার ছেয়ে ধরে;

তারপর রাত্রি আসে আমার চোখে
কালো হয়ে কালো করে।


স্যাঁতস্যাঁতে দিন



স্যাঁতস্যাঁতে দিন
- যাযাবর জীবন


সূর্য ছিল আলোও ছিল
তবুও ঠিক যেন ত্যাজ ছিল না রোদে
বড্ড ম্যাড়ম্যাড়ে আলো আর স্যাঁতস্যাঁতে দিন
অথচ সকালে ঘুম ভাঙতেই মনটা ছিল রঙিন;

প্রিয় সন্ধ্যে
তুমি কেমন আছ?

ভালোবাসার চাঁদনি
তুমি রাতে আসবে তো?

নির্ঘুম রাত
প্রেমে পড়বে আমার?

না কি আজো তুইহীনা কাটবে
এক অসহনীয় রাত।



ঠোঁটে ঠোঁটে ঘুমরাত


ঠোঁটে ঠোঁটে ঘুমরাত
- যাযাবর জীবন


কাল সারারাত ছিল
ঠোঁটে ঠোঁটে ঘুম
সকাল হতেই আলোটা এসে
চোখ ভেঙে দিল চুম।




রবিবার, ২৯ অক্টোবর, ২০১৭

অলস মস্তিষ্কের আলসে ভাবনা



অলস মস্তিষ্কের আলসে ভাবনা
- যাযাবর জীবন


অলস রাত
অলস বিছানায় আলসে আলসে ঘুম
অলস কিছু স্বপ্ন আলসে চোখে
আলতো এসে দেয় চুম;

অলস চাঁদ
আলসে আয়েশে হেলান অন্ধকার আকাশে
অলস জ্যোৎস্না অন্ধকার ভেঙে দিয়ে
আলো এনে দেয় রাতে;

অলস জোনাক দল আলস অন্ধকারে
ইতিউতি আলসে হাঁটে
অলস তারার দল আলসে বসে থাকে
আকাশ বিছানো খাটে;

অলস দেহ আলসে আড়মোড়ে
অলস মুড়ে থাকে চাদরে
অলস আমি সারারাত ধরে
ঠোঁটে ডুবে থাকি তোর আদরে।



নিশ্চিন্ত ঘুম



নিশ্চিন্ত ঘুম
- যাযাবর জীবন


তোর বুকে মাথা রাখতেই চোখ ঘুম
আঙুল ওড়াউড়ি তোর এলোমেলো আমার মাথার চুল
নির্ঘুম রাত তোর
আমায় ভালোবেসে বড্ড করেছিস ভুল,
চিন্তা তোর মুখে স্বপ্ন তোর চোখে
অস্থির মন অশান্ত জীবন
সারারাত বুকে নিয়ে আমায় রাত তোর নির্ঘুম
তোর বুকে মাথা রেখে আমি নিশ্চিন্ত রাতঘুম।

ঠোঁট ডুবানো ভোর



ঠোঁট ডুবানো ভোর
- যাযাবর জীবন


ঘুম ভাংতেই মন পাখি
উড়াল ডানায় তোর ঘরে,
অপেক্ষা তোর চোখ খোলার
ডুবাতে ঠোঁট............



আমারই তুই



আমারই তুই
- যাযাবর জীবন


মনে যদি মন রাখিস
তবেই মিঠে পানি আর জোয়ার ভাটায় নদী
আর নয়তো নোনা সাগর
অশ্রুর কিংবা লবণের,
কি এসে যায়?

স্বপ্নে কিংবা জাগরণে
মনের মাঝে তুই
তুই আর তুইই আমার পৃথিবী;
কে কি বললো,
কি এসে যায়?

আমার আকাশ নীল বা কালো
আমারই,
আমার পৃথিবী রঙিন বা সাদাকালো
আমারই,
আমার সময় দিন কিংবা রাত
আমারই,
আমার তুই, অবহেলা কিংবা ভালোবাসার
আমারই,
কে কি বললো
কি এসে যায়?

আমার তুই,
আমারই তুই;
মাখামাখি ভালোবাসায়।


মন পোড়া ইগো



মন পোড়া ইগো
- যাযাবর জীবন


পেট পুড়তে পুড়তে আলসার
কলিজা পুড়তে পুড়তে সিরোসিস
মন পুড়তে পুড়তে ক্যান্সার
সম্পর্ক পুড়তে থাকে চিতায়,
অনুতাপ! দুজনের মনেই;
তবুও পোড়ে না ইগো।


একা একা



একা একা
- যাযাবর জীবন


উড়তে উড়তে পাখি
ভাসতে ভাসতে মাছ
ডুবতে ডুবতে গভীর
মনে তোর বাস;

দৌড়ে দৌড়ে ক্নান্ত
ঘষ্টে ঘষ্টে চলা
মনের মাঝে তুই
আর একা একা কথা বলা।



স্থবির


স্থবির
- যাযাবর জীবন


আকাশ আছে
আছে নীল
সাগর আছে
দেখতে নীল;
কান্না কেন সাদা?

পাখিরা ডানা মেলে উড়ে যায়
মাছেরা ডুবে ভেসে সাঁতরায়
মানুষ দৌড়ায় জীবন যুদ্ধে,
স্থবিরতা সব আমার;

আমি বোধহয় মানুষ নই।


আমার সাথে রাত



আমার সাথে রাত
- যাযাবর জীবন


যেদিন আমি হাওয়া
বাতাস পেয়েছিলি কানে
যেদিন আমি রোদ
ভিজে গিয়েছিলি ঘামে
যদি আমি মেঘ
তোর বর্ষা-স্নান
যেদিন ঝরি টাপুর টুপুর
তুই পায়ে গলাস নূপুর
যেদিন মন ভালো আমার
তোর মনেতে গান
আমার জন্য কেন রে
তোর মনে এত টান?
আমি তো অমাবস্যা দুপুর সূর্যে
অন্ধকারের কানাকানি আমার সাথে;

বড্ড ভালোবাসিস আমায়?
তবে রাত হ আমার সাথে।

কালো রাত



কালো রাত
- যাযাবর জীবন


কোথায় আছি?
মন ছুটি,
কোথায় যাব?
খুঁজছি;
বন্ধ মনে বন্ধ ঘরে যখনই আলো জ্বালি
শুধুই তুই;
এবার আলোটা নিভিয়ে দেব একেবারে
কালো হওয়ার জন্য খুব দরকার ছিল আলোটার;

চোখ ঘুম হয়ে গেলে
সবই তো রাত।




কুঁড়েঘরে অন্ধকার



কুঁড়েঘরে অন্ধকার
- যাযাবর জীবন


একদিন তুই মেঘ হয়েছিলি আমার আকাশে
এখন আর বৃষ্টিতেই ভিজি না
একদিন সূর্য হয়েছিলি মনের আকাশে
আজ রাত্রিকে করেছি ঠিকানা,
কাঁথামুড়ি প্রেমে আজ তুই কোথাও নেই
নেই বর্ষা-কথনে
নেই শীত-কাহনে
নেই ঘাম-ভেজা গরমে
নেই বসন্ত-নরমে
বালি ওড়া সাগর তীরে বাতাসে শুধু বালিই ওড়ে
আর আধো অন্ধকার আমার কুঁড়েঘরে।



মন তুই


মন তুই
- যাযাবর জীবন


সূর্য উঠতেই মন ভোর
একলা সাগর আমি তোর
একলা আমি কোথায় তুই?
একলা ঘরে মন তুই.......



বোধের কুঁড়েঘর



বোধের কুঁড়েঘর
- যাযাবর জীবন


একটা কুঁড়ে ঘর
একটা সাগর পার
একটা তুই
একটা আমি
না হয় কিছু বোধ সৃষ্টি হলো
তারপর কবিতা ভালোবাসার,
মিলনের কিংবা বিরহের;

কি আসে যায়?




মনে পড়ে মেঘ ছুঁয়ে



মনে পড়ে মেঘ ছুঁয়ে
- যাযাবর জীবন


প্রচণ্ড বৃষ্টি বাইরে
মনে তোলপাড় ঝড়
তোর সাথে ভিজতে চেয়ে জ্যোৎস্নায়
বারবার ভিজেছি কান্নায়,
এখন উড়ে যাওয়া মেঘের ভেলায় দুঃখ ভাসে
আমি হো হো হাসি, কান্নার হাসি
বাতাস হো হো কাঁদে, বেদনায় ভেসে
যখন ঝড় তবলা বাজায় মনে
আমি পায়ে নূপুর গলাই
তারপর বৃষ্টির আলিঙ্গন, কান্না নৃত্যে;

তুই কি আমায় দেখিস কোথাও থেকে?
গালে বাতাস ছুঁয়ে গেলে
তোর শ্বাস ফেলার প্রবল অনুভূতিতে কেঁপে ওঠে মন
অনুভবে;

আজ বড্ড মনে পড়ছে তোকে
মেঘ ছুঁয়ে ছুঁয়ে।


জবাব



জবাব
- যাযাবর জীবন


বাতাসে কতকিছুই তো ওড়ে
বাতাস উড়তে দেখেছে কে?
পাখির মত একটা ডানা লাগানো গেলে
কতই না ভালো হতো
বড্ড ইচ্ছে একবার ঐ দূর আকাশে উড়ে
বাতাস মাখি সারা গায়ে;

আচ্ছা! আকাশের ওপরে কি আছে?
আরেকটা আকাশ?
আরেক পৃথিবী?
আরেক জগৎ?

ওখানেও কি আমি আছি?
তুই আছিস?
ভালোবাসা আছে?
কত প্রশ্ন মনে!
কে জবাব দেবে?

ডানা মেলবি আমার সাথে?
জবাব খুঁজতে?


বুধবার, ১৮ অক্টোবর, ২০১৭

ছুঁয়ে দেয়া ছুঁয়ে থাকা



ছুঁয়ে দেয়া ছুঁয়ে থাকা
- যাযাবর জীবন


চুড়ির কি ভাগ্য!
তোর হাতে থাকে,
টিপের কি ভাগ্য!
তোর কপালে থাকে,
শাড়ির কি ভাগ্য!
তোকে জড়িয়ে রাখে,
আয়নার কি ভাগ্য!
সাজলেই তোকে দেখে;

আমি কোথাও নেই
তোর কাছে,
মাঝে মাঝে বড্ড ইচ্ছে করে বাতাস হতে
ইচ্ছে হলেই ইচ্ছে মত তোকে ছুঁয়ে দিতে;

আমার ছোঁয়া তোর খুব পরিচিত ছিল,
তাই না?
চমকে উঠবি কি অচেনা বাতাস ছুঁয়ে দিলে?
খুঁজবি কি, আগের মত? পুরনো অনুভবে।



গরমে গরম



গরমে গরম
- যাযাবর জীবন


চায়ে ভেজানো ঠোঁট
গরমে গরম কাটে;

আগুন সয় না আমার ঠোঁটে।



চাঁদের ছাতা



চাঁদের ছাতা
- যাযাবর জীবন


ছাতা ধরেছি মাথায়
চাঁদে ভিজব না বলে
ভিজিয়ে দিল চাঁদনি;

এবার ঠিক চুমু খাব অমাবস্যায়
ভেজাতে তোকে।


শনিবার, ১৪ অক্টোবর, ২০১৭

তুই ছাড়া মন



তুই ছাড়া মন
- যাযাবর জীবন


অন্ধকার কোথায়?
কোথায় আলো?

মনে সূর্য থাকে, চাঁদও তো থাকে
দিন আছে, রাতও তো আছে
জাগরণে কিংবা ঘুমে
আমি কোথাও নেই, আছে মন,মনে;

বোবা চোখ দেখেই যায়
অনুভব শুধুই মনে
আমি কিছু চাই বা না চাই,মন চায়
সব চাওয়া মনই চায়;

কি করব এই মন নিয়ে?
তুই ছাড়া।



প্রেমী



প্রেমী
- যাযাবর জীবন


প্রেমে পরতে চাইলে আছাড়ি বিছাড়ি
মনোব্যথায় যাতে রুহ্ কাঁপে
কালব্যাধি ক্যান্সার যাতে ভয়ে দূরে থাকে
আর নয়তো কাঁথামুরি ঘুমোও;

সবাই কি আর প্রেম করতে পারে?
কবিতার জন্ম প্রেমীর মনে।




কর্মজীবী মানুষ



কর্মজীবী মানুষ
- যাযাবর জীবন


সকাল শুরুতেই পাখ-পাখালির কিচিমিচি
দুদ্দাড় ঘুম থেকে জেগে ওঠা
নাস্তার টেবিলে হুড়োহুড়ি
প্যাক করা টিফিন বগলদাবা
চলন্ত বাসে দৌড়ে বাদুড়ঝোলা
প্যাঁ পোঁ হর্নে অভ্যস্ত কান
শার্টে ভেজা ঘাম,
ঝুলন্ত সূর্যের সাথে পাল্লা দিয়ে ঘড়ি ধরে অফিসে পৌঁছে দম নিয়ে হাফছাড়া
চায়ের কাপে ফাইলের চাপে মুখ থুবড়ে সময় পার
সূর্যঘড়িটা বিকেলে হেলান দিলো তো মন উচাটন
সন্ধ্যেটা ঘরে ফেরার,
বাসে, রিক্সায়, হেঁটে ঘর্মাক্ত শরীরে ঘরে ফিরতে ফিরতে
রাতের প্রথম প্রহর পেরিয়ে গেছে
ডিনার শেষে ক্লান্ত দেহ বিছানায় এলায়
কর্মজীবীর সময় কোথায় সপ্তাহ ভর প্রেমের খেলায়?

কখনো সখনো মন উদাস হলে বৃহস্পতির রাতে বিছানায় নৈমিত্তিক কাম
আর নয়তো শুক্রবারটা তো হাতে আছেই
এসব সকলই জীবনের অংশ, বেঁচে থাকার নাম;

মাসে এক আধবার ছুটি ছাটাতে আয়েসি বিকেলে প্রেয়সী পাশে চায়ের কাপে চুমুক
কিংবা বছরে এক আধবার চাঁদের আলোয় খোলা ছাঁদে চুপিচাপি আধলজ্জা চুমু
বাহ! কি সুন্দর কেটে যাচ্ছে জীবন
কর্মজীবী মানুষের মন।

আমার মাঝে মাঝে একদম কর্মহীন হয়ে যেতে ইচ্ছে করে,
মানুষের সব ইচ্ছে কি আর পূরণ হয়?
ক্ষুধা কথা কয়।





কাগজের দাম্পত্য


কাগজের দাম্পত্য
-যাযাবর জীবন


হৃদয়ের মাঝে জড়িয়ে থেকে থেকে কষ্ট কষ্ট দুঃখ
জীবনের সাথে জড়াজড়ি হয়ে হয়ে কষ্ট কষ্ট সুখ
ঘুমঘোরে হাত বাড়িয়ে পাশে তুই, তুই সব
স্পর্শে হাসি স্পর্শে কান্না অনুভূতি অনুভব;

মনে মনে অষ্টেপৃষ্ঠে জড়িয়ে থাকাই দাম্পত্য
আর নয়তো কাগজের বিয়ে তো যত্রতত্র।


সম্পর্কের একাল সেকাল



সম্পর্কের একাল সেকাল
- যাযাবর জীবন



পুরনো দিনগুলো বড্ড ভালো ছিল রে,
সহজ সরল জলের মত
নদীর মত
মাঠের মত
ঘাসের মত;
তখন আমরা বন্ধু ছিলাম,
হাতে হাত রেখে
দাপাদাপি পিঠে উঠে
কি নিশ্চিন্তে নির্ভাবনায়
সহজ সরল মনে;

যেদিন বললি ভালোবাসিস,
সেদিন থেকেই জীবনটা বড্ড জটিল হয়ে গেল;
আর বন্ধুত্ব ডুবে গেল অন্ধকারের গভীর ।

সম্পর্কের সীমারেখাগুলো কি অদ্ভুত
তাই না?



বন্ধ দরজা


বন্ধ দরজা
- যাযাবর জীবন



অনেক দিন দরজা খোলা হয় না
ঘরের ও মনের;

ভোরে পাখি ডাকে
সকাল হলেই ফেরিওয়ালা
দুপুরটা সুনসান ঝিমধরা
বিকেলে বাচ্চাকাচ্চার হৈ চৈ
আমার কিছুই আসে যায় না,
বন্ধ দরজার এপাশে বেশ নির্লিপ্ত কাটিয়ে দিচ্ছি সময়;

অনেকদিন হয়ে গেলো সন্ধ্যে বেলায় সূর্য ডোবা দেখি না
চাঁদ দেখা হয় না আকাশে
রাত তো সব একই রকম
দরজার এপাশে কিংবা ওপাশে
আমি দরজা বন্ধ করে রেখেছি
ঘরের ও মনের;

একবার ভুল করে দরজা খুলেছিলাম
হুট করে তুই ঢুকে পড়লি জীবনে;

জানিস! প্রথমে না অনেক আলো ছিল,
তোর আভাতে;
তারপর? সেই তো পুরনো অন্ধকার
সেই আগের মতই
সেই প্রথম, দ্বিতীয় কিংবা তৃতীয় ভালোবাসার মত;

আদতে
সব ভালোবাসাই অন্ধকার হয়ে আসে
একটা সময় পরে,
তোর
তার
আর ওর মত
যখনই তোরা একে একে এসেছিস জীবনে;

তারচেয়ে আমার বন্ধ দরজাই ভালো
মন বন্ধ ঘুমের দেশে।



এন্টিক



এন্টিক
- যাযাবর জীবন



চেয়ারটার দিকে তাকা
পুরনো, ভাঙাচোরা, জরাজীর্ণ;
এবার আমার দিকে তাকা
মিল খুঁজে পাচ্ছিস কি?
রাতে সব কিছুই অন্ধকার অন্ধকার লাগে।

এবার একটু দৃষ্টিভঙ্গি পাল্টা
কি দেখছিস?
চেয়ারটা, এন্টিক পিস;
ঝুড়ি নামা পুরনো বট গাছটা কি সুন্দর, তাই না?
আমাকে দেখতে হবে না, আলো দেখ।



গ্রাস



গ্রাস
- যাযাবর জীবন


এক টুকরো খাল
এক টুকরো নীল
একটুখানি সবুজ
বাকিটা সভ্যতা;

সভ্যতা গ্রাস করেছে নদী
সভ্যতা গ্রাস করছে সবুজ
সভ্যতা ইট কাঠ দালান কোঠা
সভ্যতাই নগর।



আবেগ




আবেগ
- যাযাবর জীবন


আবেগ একটা কালব্যাধি ভাইরাস,
সময়ের সাথে সাথে বাড়তেই থাকে;
আর একা থাকলেই মন খারাপ।

ঘুম ভাঙতেই সূর্যোদয়ের সাথে সাথে মনে আবেগোদয়
দুপুরে রোদ চড়লো! তো আবেগ চড়লো
বিকেলের পড়ন্ত রোদে কোথায় কমলো?
সন্ধ্যায় তো মনখারাপের ঢেউ
আর রাতে? সাগরে উত্তাল কান্না, একা একা।



শনিবার, ৭ অক্টোবর, ২০১৭

অধরা



অধরা
- যাযাবর জীবন


চোখে অন্ধকার বুলালেই তুই রাত
তোকে না ভাবলে চোখ বোজে না চোখ
ক্যানভাসে তুলি বুলালেই তুই চাঁদ
অথচ চাঁদনি আঁকা হলো না আমার;

মনে প্রেম বুলালেই চোখে তুই
তুই বিহনে চোখ কান্না
কাগজে কলম চললেই তুই ভালোবাসা
অথচ কবিতাই লেখা হলো না আমার;

আর কত খুঁড়ব মন
তোকে আঁকতে
আর কত নিব ভাঙবে কলম
কবিতা লিখতে।




শুক্রবার, ৬ অক্টোবর, ২০১৭

কেমন আছিস তুই?



কেমন আছিস তুই?
- যাযাবর জীবন


কেমন আছিস তুই?
জানিস! আকাশে আজ এত্ত বড় একটা চাঁদ,
নিশ্চয়ই অনেক খুশি তুই আজ;

কেমন আছিস তুই?
দেখ, দেখ, ঈশান থেকে একটি দুটি মেঘের ভেলা
বলতো দেখি, বৃষ্টি আসবে কি আজ?

কেমন আছিস তুই?
দেখ, চাঁদটা ঢেকে গেলো মেঘে
মন খারাপ হলো বুঝি তোর?

কেমন আছিস তুই?
বাইরে ঝুম বৃষ্টি নেমেছে
ভিজবি আমার সাথে?

কেমন আছিস তুই?
আমি ভিজছি একা, শরীর ও মনে
তুই কোথায়?


ভাত বন্ধ



ভাত বন্ধ
- যাযাবর জীবন


এক সময় বাবা-মায়ের সাথে রাগ
তো ভাত বন্ধ
এক সময় স্বামী-স্ত্রী মনোমালিন্য
তো ভাত বন্ধ

আপন জনের সাথে রাগ অভিমান
প্রয়োগ ভাতের থালায়,
কার জীবনে ভাত বন্ধ হয় নি, দু চার দশবার?

বাবা-মা রাগ ভাঙায় সন্তানের
স্বামী-স্ত্রী অভিমান ভাঙায় পরস্পরের,

বাবা-মায়ের মনোকষ্ট? কবে বুঝেছিল সন্তান?
কই শুনি নি তো? বাবা-মায়ের ভাত বন্ধ,
কি জানি? হবে হয়তো কোথাও কখনো
দু একটি ঘরের কোনায়
কালে ভদ্রে, কচিত কদাচিৎ;
আলো'তে আসে না কখনো।

কোন একটা সময় কেও থাকে না মনের কষ্ট ভাঙানোর,
পেটের ক্ষুধা টেনে নেয় ভাতের থালা;
চোখেই শুকায়, চোখের জল।








মঙ্গলবার, ৩ অক্টোবর, ২০১৭

প্রকৃতি ও তুই



প্রকৃতি ও তুই
- যাযাবর জীবন


আকাশটা নীলের সাগর
মেঘের নৌকো ভাসে
কোথাও সাদা কোথাও ধুসর
বৃষ্টির জন্য মন আনচান
কালো বৈঠাটা দেখলাম না কোথাও

চরের মাঠে ঘাসের মেঘ
দুলছে বাতাসে
কোথাও জলজ কোথাও সবুজ
প্রচুর শ্যাওলা বুকপুকুরে
মন আনচান ডুব দিতে

বুকের চাতালে কুলকুল নদী
নূপুর বাজায় জলে,
এর গভীরতা মেপেছে কে?
কোন এক সময় তুই ডুব দিয়েছিলি
সেই থেকে পলি পড়ে গেছে

এই যে আকাশ আর ধুসর ধুসর মেঘ
এই যে সবুজ সবুজ ঘাসের মাঠ
এই ছলছল কলকল নদী
আর এই জরাজীর্ণ পুরনো আমি,
সবই আছে চারিদিকে;

শুধু তুই হারিয়ে গিয়েছিস
সময়ের সাথে সাথে।


সোমবার, ২ অক্টোবর, ২০১৭

ইতিহাস



ইতিহাস
- যাযাবর জীবন


একটা মেয়ে ছিল জীবনের গল্প
আজ জীবন থেকেই হারিয়ে গেলো

একটা মেয়ে ছিল আমার আকাশের সূর্য
অমাবস্যায় আজ তারে কোথায় খুঁজে পাব?

একটা মেয়ে ছিল আমার প্রতি রাতের চাঁদ
কোথায় যে জোনাকি ডানায় উড়ে গেলো?

একটা মেয়ে ছিল রাতভর জ্যোৎস্না
আমার স্পর্শে নিভে গিয়ে রাত হলো

একটা মেয়ে ছিল আমার নেশা
নির্ঘুম চোখ দিয়ে কোথায় পালালো?

একটা মেয়ে ছিল আপাদমস্তক কবিতা
আমার কলমে এখন শুধুই ইতিহাস।














প্রহরান্তে পশু



প্রহরান্তে পশু
- যাযাবর জীবন


আদুরে বিড়ালের চোখে আড়মোড়া ভাঙে সূর্য
প্রতিদিন ভোরে
আমি তখন গভীর ঘুমে
স্বপ্নে সাপ-লুডু তোর সাথে
জানালায় তারস্বরে পাখি ডাকে
আমার স্বপ্ন ভাঙাতে

শীত-নিদ্রার সাপ আলসে গড়ায় দুপুর পর্যন্ত
ঘষটে ঘষটে কচ্ছপ পায়ে রোদ চড়ে মাথার ওপর
সেদিন সূর্যের দিকে তাকাতেই চোখ ঝলসে গিয়েছিল তোতে
ভুলে চোখে ঝাপটা দিয়েছিলাম লবণ জলে
ঠাণ্ডা হতে ডুব দেই কান্না-পুকুরে

রোদ ঝাঁ ঝাঁ দুপুরটা তোর মত তেতে থাকে বাঘচোখে
আমি রোদের হেলানের অপেক্ষায় বিকেল বারান্দায়
মাঝে মাঝে বড্ড ইচ্ছে করে বাঘের গায়ে গা ঘষতে
ইশশ! বাঘটা কেন যে বেড়াল হয় না?
আদর খেতে

বিকেল ছোটে চিতার পিঠে
সূর্যটা ডিম পোচ হয় ফ্রাইপেনে, চোখের নিমিষে
আমি তখন ঘরে ফেরা পাখি আঁকি
রংতুলি দাঁতে খুঁটে
ডিমের কুসুমের সাথে বুকের ক্ষরণে লাল হয় ক্যানভাস
আঁকা আর হয় না তোকে

ধূর্ত শেয়ালের উঁকি সন্ধ্যের ঘরে
শেষ গোধূলিতে শিকার দেখে নিচ্ছে ঈগল চোখে
হানা দেবে রাতে হায়েনার দাঁতে
আলো আড়াল হয় অন্ধকারে

বিশেষ কতগুলো রাত হায়েনার বিষ দাঁত
কারো ব্যাং লাফ তো কারো সর্প-নৃত্য, অন্তর্বাসে
কুকুর-বেড়াল ভেজে কাম-রিপু
লজ্জা পায় ভাদ্রের কুকুর
মানুষের কাণ্ড দেখে

তোমরা দিন দেখ
রাত দেখ,
আমি পশু দেখি হরহামেশায়
আমার চারিদিকে, প্রহরান্তে;
হয়তো আমিও তাদেরই একজন
ভেতর থেকে।












মন চুপের সময়


মন চুপের সময়
- যাযাবর জীবন


এক একটা সময় আসে "মন চুপ"
তখন কারো কথাই ভালো লাগে না,
ভালোবাসার কথা তো অসহ্য।


সংযম



সংযম
- যাযাবর জীবন


পর্দার আবরণে ঢাকা তোর অবয়ব
কালো চশমায় আমার দুচোখ;

প্রেম প্রীতি ভালোবাসা
কাম বাসনা ভোগ লালসা সবই তো আমাদের মনে,
তোর
আমার
তার
ওর
সবার;

পাপ মনে
ব্যবহার শরীরে,
পর্দা দিতে হয় মনে
পাপ ঢাকতে;

আমাদের বড্ড সংযমের অভাব;
কথায় ও আচরণে।

খাদ্য


খাদ্য
- যাযাবর জীবন


কামগন্ধা রাত ম ম
শরীর উনুনে
লকলকে জিহ্বায় টস টসে লালা
খাবার বিছিয়ে আছে নাভিমূলে;

ছুটির রাতের গল্প,
কামুকের;
মদ মচ্ছবে।

বুধবার, ২৭ সেপ্টেম্বর, ২০১৭

মনবাড়ি'তে বৃষ্টি



মনবাড়ি'তে বৃষ্টি
- যাযাবর জীবন


কিছু আলো দিনে
কিছু মনে
বাকীটা অন্ধকারে

এক একটা খেয়ালী বাতাস
যখন তখন সূর্য হয়
যখন তখন চাঁদ
যখন তখন মন খারাপ

ইদানীং খালি চোখে যা কিছু ছায়া ছায়া
মন চোখে বড্ড অচেনা
ভেতর আর বাইরের হিসেব মেলে না

এই যে শ্রাবণ, এত এত বৃষ্টি হয়ে গেলো
বন্যায় ভেসে গেলো চারিদিক
নোনা জল কমলো কি?
চোখে
কিংবা সাগরে

আমি অন্ধকার দেখেছি দিনে
অন্ধকার দেখেছি মনে
এর
ওর
তার
আমার
সবার

এখন আর খেয়ালি বাতাস কাঁদায় না
অন্ধকার ভাবায় না
পাহাড় দেখতে দেখতে পাথর হয়েছি

কালো যতই হাসতে হাসতে খুন করে যাক
আমি ক্ষয়ে যাওয়া দাঁতে হাসি ধরে রাখি
আর লবণ সয়ে যাই চোখে

আজ আকাশটা বড্ড ছায়া ছায়া
বৃষ্টি হবে কি?
মনবাড়ি'তে।






যুদ্ধ


যুদ্ধ
- যাযাবর জীবন


চাহিদা অসীম,
সীমিত সাধ্য;
সমন্বয়ের যুদ্ধ প্রতিনিয়ত।


কান্না মেয়ে



কান্না মেয়ে
- যাযাবর জীবন


একটা মেয়ে, দিনমান সূর্য
দুপুর রৌদ্দুর মন তাপ দাহ
একটা মেয়ে রাতের জ্যোৎস্না
দেখে সবাই, বোঝে না তারে কেহ

একটা মেয়ে, আকাশে বিজলির চমক
রঙে রঙিন গা, মনে ঢঙের ঠমক

একটা মেয়ে, সারাদিন ইনায় বিনায়
যারে তার লাগে ভালো তার পথ চায়

একটা মেয়ে, মোবাইল ক্যামেরা হাত
সেলফিও বিরক্ত, ফেসবুকে দিনরাত

একটা মেয়ে, মন বারোমাস ষড়ঋতু
হয়তো কারো জীবনে ফুল ফোঁটার হেতু

একটা মেয়ে, অকারণ মন মেঘ
যখন তখন মন বদলে ঝড়ের বেগ

একটা মেয়ে, সারাক্ষণই অস্থির
মুখে কথার খৈ, মনে অলীক স্বপ্নের ভীর

একটা মেয়ে, হয়তো আজ তার কোন বিশেষ দিন
কেও বলে না ডেকে, কি রে! কেমন কাটছে তোর দিন?
বড্ড একাকীত্বে সারাদিন অপেক্ষায় যায় কেটে কেটে
সুধায় না কেও, ওগো ও মেয়ে! কান্না কেন রে তোর দুচোখে?



মঙ্গলবার, ২৬ সেপ্টেম্বর, ২০১৭

সঙ্গম


সঙ্গম
- যাযাবর জীবন


তোর সাথে আমার মিলন,
জন্ম ভালোবাসার;
মনের সাথে কলমের সঙ্গম,
জন্ম কবিতার।


জড়াজড়ি অন্ধকার



জড়াজড়ি অন্ধকার
- যাযাবর জীবন


ভোর জড়িয়ে থাকে কুয়াশার ভাজে
সকাল জড়িয়ে রয় সূর্যের সাথে
বিকেল জড়ায় এলোমেলো দুপুর রোদে
সন্ধ্যে জড়ায় ঘরে ফেরা পাখির ডানায়;

আমি রাতের অপেক্ষায়,
অন্ধকারে জড়িয়ে যেতে তোতে।


উচ্চতা


উচ্চতা
- যাযাবর জীবন


পাহাড় অনেক দূরে
অতটা উঁচুতে ধরতে পারব না তোকে,
উড়িয়ে দিলাম মন আকাশে
বৃষ্টি হয়ে নেমে আসবে তোর চোখে......


মায়ার কান্না


মায়ার কান্না
- যাযাবর জীবন


ইদানীং ঘুমন্ত আগ্নেয়গিরিতেও নাকি লাভা উদ্‌গিরণ
বড্ড বদলে গেছে প্রকৃতি
বদলে গেছে আবহাওয়া
তুই আসার পর থেকেই বদলে গেছে জীবন

আজকাল ঘরে বাইরে গনগনে আগুন
ফুসফুসে বিষাক্ত বাতাস
মাথার ওপর না হয় নাই থাকলো ছাদ
মন মশারিতে উঁকি চাঁদ,

ধ্যাত!
অমাবস্যায় জ্যোৎস্নার কৌতুক
কেওড় এঁটেছি মন ঘরে;
ভালোবাসা, তুমি দূরে থাকো।

মায়া!
বড্ড কাঁদায়।


মুগ্ধতা



মুগ্ধতা
- যাযাবর জীবন


চোখাচোখি মুগ্ধতা সকলই প্রেমিক প্রেমিকার,
স্বামী স্ত্রী উল্টাপাশ।

দাম্পত্যে অনুভব


দাম্পত্যে অনুভব
-যাযাবর জীবন


এক পৃথিবীতে একই ভান্ডে
এক সাথে জান্নাত ও জাহান্নাম;
দাম্পত্য।


ঘরে ফেরা পাখি



ঘরে ফেরা পাখি
- যাযাবর জীবন


ভোরের স্বপ্ন ভাংতেই দুচোখ শিশির:

সূর্য ভাঙছে পাহাড়ে মেঘ ভেঙে
রৌদ্রের ঘ্রাণ মেখে আকাশে পাখির ডানা
আজ কাকপুকুরে ডুবিয়ে দেব অন্ধকার গল্পগুলো;

তারপর নতুন সূর্যে জীবনের নতুন হিসাব
চোখ মেলাতে হবে তোর সাথে চোখ মেলে
মন তো সেই কবেই মিলেমিশে একাকার তোর মনে,
ঘরে ফেরা পাখি ঘরেই ফেরে
মাঝে এদিক ওদিক অল্পকিছু ডানা ঝাপটানো, পথ ভুলে;

অন্ধকার জীবনের গোপন পাণ্ডুলিপিগুলো কবর দেয়া হয়
মনের ঘরে,
হরহামেশাই, খুব গোপনে;
আমার
তোর
তার ও তার
আমাদের সবার।




পাহাড়ের মন



পাহাড়ের মন
- যাযাবর জীবন


পাহাড় নগরীতে সারাদিন;
কখনো রোদ কখনো অভিমান
কখনো মেঘ কখনো কান্না,
ঠিক যেন পাহাড়ে তুই

আমি ভিজছিলাম পাহাড়ে
মেঘে, রোদে ও তোতে;
আচ্ছা! পাহাড়ের কি মন আছে?
কিংবা তোর?


সৌন্দর্য


সৌন্দর্য
- যাযাবর জীবন


সব সৌন্দর্য ক্যামেরায় ধরা যায় না
সব সৌন্দর্য ক্যামেরায় ধরতেও হয় না,
যেমন তোকে আমি মনে ধরে রেখেছি
আর চাঁদনি।




জলবাসনা


জলবাসনা
- যাযাবর জীবন


তোর জলবাসনা
আমার চুমুস্নান


ভুলের ভুল


ভুলের ভুল
- যাযাবর জীবন


কিছু ঘাস লতা
কিছু গুল্মফুল
পাহাড় দাঁড়িয়ে সামনে
আমি তোকে ভেবে করি ভুল

কিছু জলরাশি
কুলকুল কুলকুল
সামনে বয়ে চলা ঝর্ণা
আর আমি তোতে মশগুল

তুই কে?
পাহাড়,
ঝর্ণা,
নদী,
না কি কেবলই নারী?
না কি আমার জীবনে ফোটা ভুল ফুল!


পাহাড়ে সকাল


পাহাড়ে সকাল
- যাযাবর জীবন


পাহাড়ে সকাল
সুনসান নিস্তব্ধতা
আড়মোড়া ভাঙছিল রোদ
আমি পাহাড়ের ভাঁজ ভাঙা খাঁজে,
বড্ড কষ্ট হচ্ছিলো পথ বাইতে;

কই, সেদিন তো একটুও কষ্ট হয় নি
পাড়ি দিতে চড়াই উতরাই,
তোর বুকের ভাঁজে;

উঁহু
আর বাইব না পাহাড়
তুইহীনা
একা একা
মন খারাপ করে।